সমাবেশ করে খালেদা জিয়ার মুক্তি মিলবে না: হাছান মাহমুদ
স্টাফ রিপোর্টার:
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সভা-সমাবেশ করে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি মিলবে না, বরং বিএনপির এই দাবিতে সমাবেশ আইন-আদালতের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন।
শনিবার দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ মিলনায়তনে ‘জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির শনিবারের সমাবেশ প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্নীতির দায়ে আদালতের বিচারে সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে কেবল আদালতে জামিন বা খালাস পাওয়া ছাড়া বেগম জিয়ার মুক্তির অন্য কোনো পথ নেই।’
মন্ত্রী এ সময় পাকিস্তানের নওয়াজ শরিফ ও ভারতের জয়রাম জয়ললিতার বিচারের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, বিপুল জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও তাদের গ্রেফতার ও বিচার প্রক্রিয়ার আওতায় নেয়া হয়েছে। জয়ললিতার গ্রেফতার ও মৃত্যুর পর অনেক ভক্ত জীবন দিয়েছেন কিন্তু তার দল কখনও আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সমাবেশ বা আন্দোলন করেনি।
বিএনপির মেশিন বেচার ইতিহাস রয়েছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি তাদের আমলে আদমজী পাটকলসহ দেশের বিভিন্ন কলকারখানা বন্ধ করে সেখানকার মেশিনপত্র কেজি দরে বেচে দিয়েছিল বলেই তাদের নেতা খসরু সাহেব আজ নির্বাচনে হেরে ইভিএমগুলো কেজি দরে বেচার কথা বলার ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন।’
সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্বৃত্ত অর্থ রাষ্ট্রীয় খাতে জমা রাখার বিধানের বিরুদ্ধে বিএনপিনেতা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমালোচনাকে অযৌক্তিক বলে দাবি করেন ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠানের উদ্বৃত্ত অর্থ বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংকে রাখা হতো, যার হিসাব প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন প্রতিবেদনে সময়ে সময়ে অপ্রদর্শিত থাকায় তা অর্থনীতিতে যুক্তও হতো না।’
‘সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর খরচ মেটানো ও উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ রেখেই উদ্বৃত্ত অর্থ রাষ্ট্রীয় খাতে জমা রাখা দেশের অর্থনীতির জন্য মঙ্গলের। এ বিষয়টি না বুঝে বা বুঝেও মুর্খের মতো সমালোচনা করলে তারা নিজেরা লজ্জা না পেলেও আমরা লজ্জা পাই। এটি না করার অনুরোধ জানাব।’
সভার শুরুতে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে মন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষ সমাগত। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জন্ম না হলে ঘুমন্ত বাঙালি জাগ্রত হতো না, বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শুধু দেশ স্বাধীনই করেননি, দেশের ভেতরে এক কোটি গৃহহারা ও ভারতে আশ্রিত প্রায় আরও এক কোটি মানুষকে পুনর্বাসিত করেছেন। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে যাওয়া ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে দেশের অর্থনীতির ইতিহাসে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি এনে দিয়েছেন। আর তার মৃত্যুর পর দেশ যে দুর্নীতি-দুঃশাসনে পিছিয়ে পড়েছিল, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবার বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে দেশকে অদম্য গতিতে এগিয়ে নিচ্ছেন। সমস্ত সূচকে আজ আমরা পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছি। গত ১১ বছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির গড় হার বিশ্বে সর্বোচ্চ।’
‘দেশের এই উন্নয়ন যারা সহ্য করতে পারে না, শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়ে তারা যে ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে, তা থেকে সমগ্র জাতিকে সতর্ক থাকতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সারাহ বেগম কবরীর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক কণ্ঠশিল্পী মো. রফিকুল আলম প্রমুখ।
সূত্র: বাসস
চিত্রদেশ //এস//