অর্থ-বাণিজ্য

সরবরাহ বাড়লেও দাম কমছে না ফুলকপির

স্টাফ রিপোর্টার:
শীতকালের প্রধান সবজিগুলোর মাঝে অন্যতম ফুলকপি। শীতের প্রথম থেকেই বাজারে উঠতে শুরু করেছে ফুলকপি। প্রতি বছর এই সময় ২০ টাকায় নেমে আসে ফুলকপির দাম। তবে এই বছর শীত শেষের দিকে আসলেও এখনো ৩০ টাকার নিচে নামেনি ফুলকপির দাম। তবে বর্তমানে প্রায় সব ধরনের শাকসবজি পাওয়া যাচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে।

আজ শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাজধানীর মিরপুর, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, আগারগাঁও, তালতলা, কল্যাণপুর ও কাওরান বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে অধিকাংশ সবজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে।

মিরপুরের শেওড়াপাড়া কাজীপাড়া বাজারে প্রতিটি ফুলকপি ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে দেখা যায়। এদিকে দীর্ঘদিন থেকে শীতকালীন এই সবজিটি দাম না কমায় ব্যবসায়ীরাও একরকম নাখোশ।

কাজীপাড়ার সবজি ব্যবসায়ী বেলাল বলেন, প্রতিবছর এ সময় আমরা ফুলকপি ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি করি। অথচ এবছর ৩০ টাকার নিচে বিক্রি করতে পারছি না। তবে সব সবজির দামই তুলনামূলক এখন কম রয়েছে।
এদিকে ফুলকপির দাম না কমার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন অতিরিক্ত শীত এবং কুয়াশার কারণে ফুলকপি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে চাহিদা অনুযায়ী বাজারে ফুলকপি আসছে না।

এছাড়া শীতের সবজি হিসেবে বাজারে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। একই সাথে গাজর বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। আর পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। তবে কাঁচা টমেটো ৪০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। আর মুলা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। এছাড়া বাজারে প্রতিপিস বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়।

এদিকে বাজারে প্রতিকেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। পাশাপাশি একই দামে বিক্রি হচ্ছে করলা ও ধুন্দুল। তবে কিছুটা বেশি দাম পেঁপের। বাজারে প্রতিকেজি পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি।

বাজারে প্রতি কেজি ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। আর বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। এছাড়া শালগম ৩০ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়া (ছোট) ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে লাউয়ের দাম কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহের যে লাউ ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে তা আজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।

এদিকে গত সপ্তাহের থেকে কিছুটা কমেছে পেঁয়াজের দাম। বাজারে নতুন দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়। যেখানে গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। আর বিদেশি চায়না পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়।

সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে চালের। বাজারে প্রতি কেজি সরু চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৬০ টাকা। যা গত সপ্তাহেও বিক্রি হয়েছে ৪৫ থেকে ৫৫ টাকায়। আর বাজারে প্রতি কেজি মাঝারি ধরনের চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ৪০ থেকে ৫০ টাকা দাম ছিল। তবে দাম বাড়েনি নাজিরশাইল চালের দাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন বোরো ধান উঠার আগে এই দাম আর কমবে না।

এদিকে এ সপ্তাহে না বাড়লেও দাম বেড়েছে চিনির। এক মাসের মধ্যে চিনির দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১২ টাকা। এর আগে যে চিনি বাজারে ৫৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৬৭ টাকা। আর প্যাকেটজাত চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭২ টাকায়।

একইভাবে এই সপ্তাহের নতুন করে দাম না বাড়লো বর্তমানে বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। বাজারে প্রতি কেজি খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ৯৮ টাকায়। খোলা সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ১০ টাকা। আর প্রতি কেজি পাম অয়েল বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকায়। যা এর আগে বাজারে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

এদিকে মাছের বাজারেও কিছুটা দাম বেড়েছে। বাজারে প্রতি কেজি রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩২০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায়। একইভাবে দাম বেড়েছে কাতল মাছের। এখানেও সপ্তাহের ব্যবধানে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে। তবে কিছুটা কমেছে ইলিশ মাছের দাম।

এছাড়া বাজারে কেজি প্রতি নদীর আইড় ৮০০ টাকা, বোয়াল ৫০০ টাকা, কোরাল ৪৮০ টাকা, পাবদা ৫৫০ টাকা, টেংরা ৬০০ টাকা, চিংড়ি সাইজ ভেদে ৪০০-৪৫০ টাকা, পুঁটি ২৮০ টাকা, দেশি টেংরা ৪০০ টাকা, মেনি ৪০০ টাকা, নওলা ৩৮০ টাকা, বড় শিং ৪৫০ টাকা, মাগুর ৫০০ টাকা, টাকি মাছ ২৮০ টাকা এবং এক কেজির শোল প্রতিটি ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে গত সপ্তাহের মতোই বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়। এছাড়া পাকিস্তানি কক বিক্রি হচ্ছে ২১০ টাকা, লেয়ার মুরগি ১৮০ টাকা, দেশি মুরগি ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস ৫৩০ থেকে ৫৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা ডজন এবং দেশি মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা প্রতি হালি।

 

চিত্রদেশ //এস//

Related Articles

Back to top button