প্রধান সংবাদ

মমতার অগ্নিপরীক্ষা আজ

স্টাফ রিপোর্টার:
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনে দ্বিতীয় দফার ভোট শুরু হচ্ছে আজ। এ নির্বাচনে মূল নজর নন্দীগ্রামে। নন্দীগ্রামের নির্বাচনের ফল আগামী দিনের পশ্চিমবঙ্গে রাজনীতির গতিপ্রকৃতি বদলে দিতে পারে। এ কারণে নির্বাচনের আগে থেকেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে নন্দীগ্রাম। এ দফায় পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে গোটা ভারতের নজর হাইভোল্টেজ কেন্দ্র নন্দীগ্রামের দিকে। যেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তারই শিষ্য বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী।

নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হওয়ার পের থেকেই আলোচনার কেন্দ্রে ছিলো, এ আসনে বিজেপি প্রার্থী কে হচ্ছেন? তৃণমূলের প্রার্থী ঘোষণার একদিন পর সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে এ আসনে প্রার্থী হিসেবে মমতার একসময়ের ঘনিষ্ঠ সহচর শুভেন্দু অধিকারীর নাম ঘোষণা করে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)।

নন্দীগ্রাম আসনটি পূর্ব মেদিনীপুরে। ২০০৭ সালে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার এখানে রসায়নশিল্প গড়ার জন্য ২৭ হাজার একর জমি অধিগ্রহণের উদ্যোগ নিলে এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তুমুল আন্দোলন গড়ে তোলেন মমতা। এ আন্দোলনে মমতার সবচেয়ে বিশ্বস্ত সহচর ছিলেন শুভেন্দু। নন্দীগ্রামের পাশাপাশি সিঙ্গুর আন্দোলনে ভর করে রাজ্যে ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটান মমতা। ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে জিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি। নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দুকে মন্ত্রী করা হয়।

তবে এবার পাশার দান বদলে গেছে। সেই আন্দোলনের দুই দিকপাল মমতা-শুভেন্দু লড়ছেন একই আসনে। একে অপরের বিরুদ্ধে। গত ডিসেম্বরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন শুভেন্দু। এরপর মমতাকে নন্দীগ্রাম থেকে ভোটে লড়ার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন তিনি। কলকাতায় বিজেপির এক রোড শোতে যোগ দিয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, মমতা নন্দীগ্রামে দাঁড়ালে ৫০ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে দেব।

প্রার্থী হতে কেন্দ্রীয় সরকারের জুট করপোরেশনের অস্থায়ী চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন শুভেন্দু। এরপর থেকে নন্দীগ্রামে মমতা–শুভেন্দুর দ্বৈরথ দেখার অপেক্ষায় ছিলেন সবাই।

লড়াকু মমতাও এ চ্যালেঞ্জ লুফে নেন। ১৮ জানুয়ারি নন্দীগ্রামের তেখালির এক জনসভায় ঘোষণা দেন, এখানকার মানুষ চাইলে আমি নন্দীগ্রাম আসনে লড়ব। শুক্রবার প্রার্থী ঘোষণার সময় মমতা বলেন, কথা দিলে কথা রাখি আমি। নন্দীগ্রাম থেকেই এবার ভোটে লড়ছি। এ সময় তিনি কলকাতার ভবানীপুর আসনটি ছেড়ে দেয়ার ঘোষণা দেন। ওই আসনের বিধায়ক হিসেবে তিনি এখন মুখ্যমন্ত্রীর পদে রয়েছেন।

এদিকে নন্দীগ্রামে যদি হেরে যায় তাহলে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে ছিটকে পড়বেন মমতা। কারণ মুখ্যমন্ত্রী হতে হলে অন্য যেকোনো আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে তাকে। সবমিলিয়ে টানটান উত্তেজনাপূর্ণ জমজমাট এক লড়াইয়ে মমতা-শুভেন্দু।

চিত্রদেশ//এসএইচ//

Related Articles

Back to top button