ঢাকা জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
স্টাফ রিপোর্টার:
`তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপি নেতাদের বক্তব্যে মনে হয়, তারা বেগম জিয়ার মুক্তি নয়, বন্দীদশা আর স্বাস্থ্য নিয়ে রাজনীতিই করতে চায়।’
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ঢাকা জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন আয়োজিত ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সমসাময়িক রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি একথা বলেন।
‘বিভিন্ন সময় বিএনপি’র বিভিন্ন জনের বিভিন্ন বক্তব্যে বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য ও তাকে মুক্ত করা নিয়ে তাদের মধ্যে যে মতদ্বৈততা, মতভেদ, সেটিই প্রকাশ পাচ্ছে’ উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘এতে মনে হয়, তারা বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি রেখেই এবং বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে পুঁজি করেই রাজনীতিটা করতে চায়। তাদের কথাবার্তায় এটিই মনে হয়, বেগম জিয়ার মঙ্গল খুব একটা তারা চায় না।’
বেগম জিয়ার মুক্তি দাবির বিষয়ে বিএনপি’র বিভিন্ন বক্তব্য তুলে ধরে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘গতকাল দেখলাম মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তিনি প্যারোলোর কোনো কথা বলেন নাই। পরিবারের পক্ষ থেকে শুনি, পত্র-পত্রিকাতেও দেখেছি, বেগম জিয়াকে প্যারোলো মুক্তি দিতে হবে, যদিও এ ব্যাপারে কোনো আবেদন করা হয় নাই। মির্জা ফখরুল সাহেব একবার বলেন, তারা আইনের মাধ্যমে মুক্তি লাভ করতে চান। আবার বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে তারা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনবেন।’
এসময় ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে অদ্যম গতিতে এগিয়ে চলছে, কেউ স্বীকার করুক বা না করুক বা কেউ দেখেও না দেখার ভান করুক, এটিই আজকে বাস্তবতা’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘যারা দেখে না দেখার ভান করে, তাদের রাজনীতিটা আসলে বেগম জিয়ার স্বাস্থ্যের মধ্যে আটকে আছে। তাদের গত কয়েক মাসের বক্তব্য বিবৃতি শুনলে এবং পড়লে মনে হবে তাদের রাজনীতির মূল বিষয় বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা। সারাদেশে এত মানুষ অসুস্থ, সেগুলো নিয়ে কোন কথা নাই। বিরোধী দলের দায়িত্ব ছিল সমালোচনার মাধ্যমে দেশ যাতে আরো বিশুদ্ধভাবে পরিচালিত হয়, সেদিকে দৃষ্টিপাত করা। সেটি না করে তাদের রাজনীতিটা শুধুমাত্র বেগম জিয়ার অসুস্থতার মধ্যে আটকে আছে।’
‘আমি আল্লাহ’র কাছে প্রার্থনা করি তাদের রাজনীতিটা যেন বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য থেকে মুক্তি পায়’, বলেন ড. হাছান মাহমুদ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে যদি অপরাজনীতি না থাকতো, বাংলাদেশে যদি সাম্প্রদায়িক রাজনীতি না থাকতো, বাংলাদেশে যদি সাংঘর্ষিক রাজনীতি না থাকতো, রাজনীতির নামে বিএনপি’র মানুষকে অবরুদ্ধ করে রাখা, মানুষের ওপর বোমা নিক্ষেপ করা, নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা, বাসে, ট্রেনে, লঞ্চে আগুন দেয়া, ঘুমন্ত মানুষের ওপর পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করার এই অপরাজনীতি যদি বাংলাদেশে না থাকতো, বাংলাদেশ গত ১১ বছরে আরো বহুদূর এগিয়ে যেতে পারতো।’
আগামী মুজিববর্ষের অঙ্গীকার হবে বাংলাদেশ থেকে সমস্ত অপরাজনীতি ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে নির্মূল করা, বলেন তিনি।
ড. হাছান বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আজকে বাংলাদেশ ইপিপিতে পৃথিবীর ২৯তম অর্থনীতির দেশ। তাঁর নেতৃত্বে আমরা অর্থনৈতিক, সামাজিক, মানব উন্নয়ন সূচকসহ সমস্ত সূচকে পাকিস্তানকে অতিক্রম করেছি। আজকে পাকিস্তান আমাদের দিকে তাকিয়ে আক্ষেপ করে এবং বলে যে, আমরা বাংলাদেশ হতে চাই। আমরা এই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম, তারা এখন আক্ষেপ করে বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে, আর বলে যে, আমাদেরকে বাংলাদেশের মতো বানানোর চেষ্টা কর। এখানেই বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সার্থকতা।
ঢাকা জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি জহিরুল হক পিলু’র সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব শাবান মাহমুদ বক্তৃতা করেন।
চিত্রদেশ //এইচ//