গল্প-কবিতা

কানিজ কাদীরের ভ্রমণ কাহিনী ‘মাদুরাই’ (পর্ব-৫ম)

একজন মহিলা হলুদ প্রিন্টের শাড়ী পড়া। সেই রিসেপশন এ বসে আছে। আমি এখানেও বললাম ‘আই অ্যাম ফ্রম বাংলাদেশ।হোয়ার ইজ ম্যানেজার? ম্যানেজার এখানে সবকিছু বুঝিয়ে দেয় আগেই শুনেছিলাম। আজ রবিবার, তাই ম্যানেজার নাই। মহিলা ম্যানেজারকে ফোন দিয়ে আমাকে ফোনটা দিল। আমি ফোনে আমার পরিচয় দিলাম। এই মহিলা আমাকে একটা রুম বুঝিয়ে দিল। রুম নম্বর ২০৩ (দোতলা) । রুমের চাবির সিস্টেমও বুঝিয়ে দিল। একে আমি ইংরেজীতে অনেক কথা বোঝাতে চাইলাম। সে বুঝল খুব কম। কারণ এরা তামিল ভাষায়ই খুব পটু।গেটে একজন বুড়া দাড়োয়ান ছিল। সেও আমাকে হেল্প করলো। আমি সায়মার সিম নিয়ে এসেছিলাম। ভাবলাম বাসায় একটা ফোন দেয়া দরকার। সিমটা কিভাবে এক্টিভেট করা যায়। আবার নিচে এসে ম‌্যানেজারকে ফোন দিয়ে বললাম ”আই হেভ টু এক্টিভেট মাই সিম, আই হেভ টু টক টু বাংলাদেশ ।” সে আমাকে বললো ”টুডে ইজ সানডে । অল আর ক্লোজড সো ইউ হেভ টু ওয়েট ফর দি টুমোরো।” আমি ভাবলাম, আমাকে আজই বাংলাদেশে জানাতে হবে যে আমি ভালভাবে পৌঁছেছি।

১০.১১.২০১৩, আজ রবিবার। তাই সাপ্তাহিক ছুটির দিন। ‘ইন্সপিরিশন’ এ ক্যাফেটেরিয়াও বন্ধ। আমাকে আজ বাইরে খেতে হবে। সায়মা আমাকে বলে দিয়েছিল হোস্টেলের কাছেই বাদিকের রাস্তা দিয়ে একটু সামনে গেলেই অন্নপূর্ণা হোটেলে খাবার খেয়ে নেয়া যাবে। আমি রুমে সবকিছু গুছিয়ে ড্রেসটা বদলিয়ে নিচে এসে বের হয়ে গেলাম, অন্নপূর্ণা হােটেলের খোঁজে।গেট দিয়ে বের হয়ে হাতের বাদিকের রাস্তায় হাঁটা শুরু করলাম। একজন সাধারন মহিলাকে জিজ্ঞেস করলাম।সে আমাকে তার সাথে সোজা হাটতে বললো। সামান্য একটু পরেই সে দেখিয়ে দিল এটা অন্নপূর্ণা। সে তামিল ভাষায়ই কথা বলছিল। এখানকার লোকজনদের দেখে খুবই সাধারণ মনে হলো। সাধারণ শাড়ী, ব্লাউজ, লুঙ্গি, শার্ট, প্যান্ট পরা লোকজন। মেয়েদের চুলে বেশিরভাগই বেনী করা। তার উপরে একটা বেলী ফুলের মালা প্রায় বেশির ভাগ মহিলার মাথায়। আমি অন্নপূর্ণা হোটেলে ঢুকে প্লেইন রাইস ও ভেজিটেবল খেতে চাইলাম। ওরা দিতে পারলো না। ওরা আমাকে পাশের অন্নপূর্ণা রেস্টুরেন্ট দেখিয়ে দিল। আমি সিঁড়ি বেয়ে অন্নপূর্ণা টাওয়ারে ঢুকলাম (একটু উচুঁ)। ওদেরকে প্লেইন রাইসের কথা বলতেই ওরা বসতে বললো। আমি সাদা ভাত ও মুরগীর মাংস দিয়ে একাই ১৭০রুপির খাবার খেলাম। আমার সামনে একটা মুসলিম পরিবার খাচ্ছিল। দুজন মহিলা বোরখা পরা।তাদের সাথে কয়েকজন ছেলেমেয়ে ও একজন পুরুষ মানুষ। দেখে মনে হচ্ছিল এরা বেশ সমৃদ্ধ। নানারকম আইটেম দিয়ে এরা খাবার খাচ্ছিল। মাদুরাই এসে বেশ কিছু মুসলমান মহিলা চোখে পড়লো যারা সবাই পা থেকে মাথা পর্যন্ত কালো বোরখা পরিহিত দেখতে পেলাম। (চলবে)

লেখক: কানিজ কাদীর

Related Articles

Back to top button