প্রধান সংবাদ

করোনায় ঘাবড়ানোর কিছু নেই, সতর্ক থাকুন: প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার:
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভয়াবহ আকার ধারণ করা করোনাভাইরাস নিয়ে না ঘাবড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এ ব্যাপারে দেশবাসীকে সতর্ক থাকারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে সরকারপ্রধান বলেছেন, ‘এই ভাইরাসের সংক্রমণ হলে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার মতো যথেষ্ট সক্ষমতা বাংলাদেশের আছে। তবে সবাইকে সতর্কতা অবলম্বনও করতে হবে।’

রোববার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে নারী দিবসের একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বক্তব্যের শেষ দিকে তিনি করোনাভাইরাস নিয়ে সংক্ষিপ্ত কথা বলেন।

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস সমস্যা সৃষ্টি করেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মনিটরিং করছি। সবাইকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। প্রতিদিন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। কীভাবে চলতে হবে, কীভাবে কাজ করতে হবে, সেটা বলে দেয়া হচ্ছে। প্রত্যেকের মধ্যে এ ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।’

করোনা পরিস্থিতি সামলাতে সরকার প্রস্তুত জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের যথেষ্ট সক্ষমতা আছে, আমরা পারবো। ঘাবড়ানোর কিছু নেই। আমি শুধু বলবো, আপনারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে চলুন।’

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনে করোনাভাইরাসের প্রথম উদ্ভব ঘটে। গত কয়েক মাসে চীনে ভাইরাসটি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। পরে আস্তে আস্তে ছড়াতে ছড়াতে এখন প্রায় ৯০টি দেশে এই ভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে। এখন পর্যন্ত লক্ষাধিক লোক এতে আক্রান্ত হয়েছে এবং তিন হাজার ৬০০ লোক মারা গেছে।

বাংলাদেশ করোনাভাইরাস ঝুঁকিতে রয়েছে। যেকোনো সময় এই ভাইরাস বাংলাদেশেও শনাক্ত হতে পারে বলে সতর্ক করেছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর। ভারতসহ কয়েকটি প্রতিবেশী দেশ করোনায় আক্রান্ত হলেও এখনো বাংলাদেশে কোনো করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়নি।

নারীর ক্ষমতায়নের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নারী যত শিক্ষিত হবে সমাজ তত এগিয়ে যাবে। আমাদের নারীরা এখন সর্বক্ষেত্রে পারদর্শিতা অর্জন করছে। ক্ষমতা কেউ কাউকে হাতে তুলে দেয় না। নিজের যোগ্যতায় অর্জন করে নিতে হয়। নারীরা তাদের যোগ্যতা দিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।’

নারী দিবস উপলক্ষে মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুনন্নেসা ইন্দিরা। অনুষ্ঠানে পাঁচ মহিয়সী নারীকে জয়ীতা পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ পুনর্গঠনে নারীদের সম্পৃক্ত করেছিলেন। তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তিনি দেশের পবিত্র সংবিধানে রাষ্ট্রীয় ও সমাজ জীবনের সব কর্মকাণ্ডে নারীর অধিকার নিশ্চিত করেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকার বিগত ১১ বছরে নারীর ক্ষমতায়ন ও নারীর উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। জাতীয় উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে পুরুষের পাশাপাশি নারীকে সহযাত্রী করা হয়েছে। নারীর সার্বিক উন্নয়নের জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে ‘জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালা-২০১১’, নারী উন্নয়নে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০১৩-২৫, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০, পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) বিধিমালা ২০১৩ সহ ডিএনএ আইন, যৌতুক নিরোধ আইন, ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন’ ও ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ বিধিমালা।’

এছাড়াও নারী শিক্ষার প্রসার, নারীর দারিদ্র্য বিমোচন, বাল্যবিবাহ নিরোধ, নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন ছাড়াও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারে নারীর অংশগ্রহণসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মাতৃত্বকালীন ছুটি স্ব বেতনে ছয় মাসে উন্নীত এবং মাতৃত্বকালীন ভাতা ও ল্যাকটেটিং মাদার ভাতা চালু করা হয়েছে। এছাড়া বয়স্ক ভাতা, বিধবা-তালাকপ্রাপ্ত ও নির্যাতিত নারীদের ভাতা, অসচ্ছল প্রতিবন্ধীদের ভাতা চালু রয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভিজিএফ, ভিজিডি ও জিআর কার্যক্রম সম্প্রসারণের মাধ্যমেও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। বর্তমান সরকারের সময়োপযোগী ও বলিষ্ঠ পদক্ষেপের ফলে রাজনীতি, বিচার বিভাগ, প্রশাসন, শিক্ষা, চিকিৎসা, সশস্ত্র বাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সর্বক্ষেত্রে নারীরা যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখছেন। বাংলাদেশ আজ বিশ্বে নারীর ক্ষমতায়নে রোল মডেল।’

 

চিত্রদেশ //এফ//

Related Articles

Back to top button