আম্পানের প্রভাবে দেশের বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
চিত্রদেশ ডেস্ক:
আম্পানের প্রভাবে দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এর সঙ্গে আছে ঝড়ো বাতাস ও বৃষ্টি। অনেক এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে অবস্থান নিয়েছে অনেকে। আম্পানের কারণে দেশের কোথাও কোথাও ৮ থেকে ৯ ফুট জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে।
এবিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সামছুদ্দীন আহমেদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পান উপকূল অতিক্রম করা শুরু করেছে। আজ রাত ৮ টার মধ্যে এটা উপকূল অতিক্রম করে যাবে।
সামছুদ্দীন আহমেদ জানান, অতিক্রমের সময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ থেকে ১৮০ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে। আর এসময় জলোচ্ছ্বাস হবে ১০ থেকে ১৫ ফুট। তিনি বলেন, বিকেল চারটা থেকে রাত আটটার মধ্যে আম্পান বাংলাদেশের সাতক্ষীরা, খুলনা অঞ্চল অতিক্রম করবে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ক্রমান্বয়ে কমতে থাকবে।
ঘূর্ণিঝড় আম্পান ভারতের পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আছড়ে পড়ার পর স্থলভাগে তাণ্ডব চালাতে চালাতে অগ্রসর হচ্ছে কলকাতার দিকে, এর বিস্তার প্রবেশ করেছে বাংলাদেশেও।
গতকাল মঙ্গলবার থেকেই ঢাকাসহ সারাদেশে বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি ও ঝড় দেখা গেছে। আজও ঢাকাসহ সারাদেশে বৃষ্টি হচ্ছে। তবে ঘূর্ণিঝড় আম্পান স্থলভাবে উঠে আসার পর বৃষ্টি ঝরিয়ে কমতে শুরু করবে ঝড়ের শক্তি। তবে এগোনোর গতি থামবে না। এবষিয়ে বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস বলছে, এ ঝড় রাত ৮ টার মধ্যে সুন্দরবন সংলগ্ন সাগরদ্বীপের পূর্ব পাশ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ- বাংলাদেশ উপকূলে পৌঁছাতে পারে।
ভোলা: ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে ভোলায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে পুরো জেলায় ঝড়োবাতাস ও থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। বুধবারও তা অব্যাহত রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে উপকূলের ঢালচর ও চরপাতিলা প্লাবিত হয়েছে।
ভোলার ২১টি চর ও নিম্নাঞ্চল থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে ৩ লাখ ১৬ হাজার মানুষ। এ ছাড়া পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অন্তত ১০ হাজার মানুষ। ১ লাখ ৩৬ হাজার গবাদি পশুকেও নিরাপদে আশ্রয়ে আনা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ চরের বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে আনার জন্য উপকূলীয় এলাকায় মাইকিং করছেন সিপিপি ও রেডক্রিসেন্টের কর্মীরা। এ দিকে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রতিটি আশ্রয় কেন্দ্রে গড়ে ২০০ জন করে রাখা হয়েছে।
ভোলার জেলা প্রশাসক মাসুদ আলম ছিদ্দিক জানান, সবাইকে সতর্ক করার পাশাপাশি নিরাপদে আসতে সিপিপির ১০ হাজার ২০০ স্বেচ্ছাসেবী উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় কাজ করে যাচ্ছে। এ ছাড়া আশ্রয়কেন্দ্রের মানুষদের জন্য ৩ বেলা খাবারের ব্যবস্থা ছাড়াও শুকনো খাবার ও শিশু খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সহায়তা করছে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
মনপুরা (ভোলা): ভোলার মনপুরা উপকূলের নিম্নাঞ্চলসহ বিচ্ছিন্ন কলাতলীর চর ও চরনিজামে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে ৩-৪ ফুট জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। চরনিজাম ও কলাতলীর চরে আশ্রয়কেন্দ্রের সামনে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
প্রশাসনের পক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বেড়িবাঁধের বাইরে অবস্থান করে থাকা মানুষকে নিরাপদে আশ্রয়কেন্দ্রে আসার জন্য মাইকিং করছেন। তারা ঘর-বাড়ি, গরু-ছাড়ল ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে চাচ্ছেন না। তবে দুপুরের দিকে বেড়িবাঁধের বাইরে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হওয়ায় ধীরে ধীরে মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে আসা শুরু করেছে।
বুধবার সকাল ১০টা থেকে দমকা ও ঝড়োবাতাস বইতে শুরু করেছে। এর আগে মঙ্গলবার রাত ১০টা থেকে থেমে বৃষ্টিসহ জড়োবাতাস বইছে। এ দিকে মেঘনায় জোয়ার প্রবাহিত থাকায় ও আম্পানের প্রভাবে বাতাসের গতিবেগ বৃদ্ধি পাওয়ায় মনপুরা উপকূলের নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার মনপুরা ইউনিয়নের আন্দিরপাড় গ্রাম ৩-৪ ফুট জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়াও চরনিজাম ও কলাতলীর চরে ৩-৫ ফুট জোয়ারের পানিতে ডুবে গেছে বলে মোবাইল ফোনে জানিয়েছে চরনিজামের ইউপি সদস্য নূরনবী, সিপিপি কর্মী মাকছুদ সর্দার, কলাতলীর চরে ইউপি মেম্বার ও সিপিপি কর্মী আমিন।
এ ছাড়াও ঢাকার লঞ্চঘাট এলাকায় এলজিইডির নতুন নির্মিত রাস্তা জোয়ারের তাণ্ডবে ভেঙ্গে নদীতে পড়ে গেছে। উত্তর সাকুচিয়া মাস্টার-হাট এলাকায় জোয়ারের পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
মনপুরার বেড়িবাঁধের বাইরে থাকা সাইফুল, করিম, হোসেন, ফাতেমা, কামালসহ অনেকে জানান, হাঁস, মুরগি, গরু-ছাগল সব বাইরে। এগুলো ঠিকঠাক না করে আশ্রয়কেন্দ্রে যাব কীভাবে। অবস্থা আরও খারাপ হলে আশ্রয়কেন্দ্রে যাব। তবে রামনেওয়াজ এলাকায় নদীর পাশে থাকা পারুল বেগম বলেন, আমার ঘর-দুয়ার সব নদীতে নিয়ে যাবে। এ ছাড়াও আশ্রয়কেন্দ্রে তো পানি ওঠে, সেখানে গিয়ে লাভ কী?
এই ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল চন্দ্র দাস জানান, ১০ নম্বর বিপদ সংকেত চলছে। ৭৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৭২৯ জনকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হয়েছে। সিপিপির সদস্যরা ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছে। চরকলাতলী ও চরনিজামে পানি উঠে গেছে। সেখানকার আশ্রয় কেন্দ্রে আসা লোকজনদের খাবার দেয়ার জন্য চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বরগুনা: বরগুনায় ১০ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। দমকা হাওয়ার সঙ্গে চলছে ভারী বৃষ্টি। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়া হয়েছে।
জোয়ার ও ভারী বর্ষণে ৪-৫ ফুট পানি বেড়ে যাওয়ায় প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। সকাল থেকে জেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বড়ইতলা ফেরিঘাট পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
পোটকাখালী, নিশানবাড়িয়া, ফুলতলা, বদনিখালী, গুলবুনিয়া, লতাকাটা, মাঝের চর, আয়লাসহ বিভিন্ন আবাসন প্রকল্পে পানি প্রবেশ করায় সেখানকার জনসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় আম্পান আঘাত হানার আগেই উপকূলীয় নদ–নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। সুন্দরবন সংলগ্ন বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার বলেশ্বর নদে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৭ ফুট পানি বেড়েছে। এতে বাঁধ উপচে প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে বিভিন্ন এলাকায়।
শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের গাবতলা গ্রামের আশার আলো মসজিদ সংলগ্ন বাঁধ ছুঁই ছুঁই করছে জোয়ারের পানি। শরণখোলার রায়েন্দা বাজারের পাশের বেড়িবাঁধ উপচে পানি প্রবেশ রোধে স্থানীয়রা মাটি দিয়ে বাঁধ উঁচু করতে চেষ্টা করছেন।
ঘূর্ণিঝড় আম্পান আঘাত হানার আশঙ্কায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে জেলায় প্রায় ৯০ হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সকালে কিছু লোক বাড়ি ফিরলেও দুপুরের আগে থেকে লোকজন আবার আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে শুরু করেছে। প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবকেরাও স্থানীয় অধিবাসীদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছে।
আজ দুপুর পর্যন্ত বাগেরহাট উপকূলীয় এলাকার ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
সবচেয়ে বেশি আতঙ্ক বিরাজ করছে সিডর বিধ্বস্ত শরণখোলার সাউথখালী এলাকায়। ২০০৭ সালে আঘাত হানা সিডরের কেন্দ্রস্থল ছিল শরণখোলা। সেই সময় ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধের স্থলে নতুন বাঁধ নির্মাণকাজ শেষ না হওয়াও এবারও জলোচ্ছ্বাসে বড় ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। সেখানে জোয়ারের পানি বাঁধ উপচে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামরুল ইসলাম বলেন, জেলার ৯৭৭টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে ১ লাখ ৬২ হাজারের বেশি মানুষ দুপুর পর্যন্ত আশ্রয় নিয়েছেন। যেহেতু সন্ধ্যায় ঝড়টি আঘাত হানতে পারে, তাই সবাই দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে যাচ্ছেন। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে নজরদারি করা হচ্ছে। দুর্গত মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে জেলায় প্রায় ১২ হাজার স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। স্থানীয় প্রশাসন ও রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি আশ্রয়কেন্দ্রের এসব মানুষদের খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও মোমবাতি সরবরাহ করেছে। এ ছাড়া ১৩ হাজার গবাদি পশু আশ্রয়কেন্দ্রে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। জেলায় ২০০ মেট্রিক টন চাল, নগদ ৩ লাখ টাকা, শিশুখাদ্যের জন্য ২ লাখ টাকা ও ২ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার এবং গোখাদ্যের জন্য ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে আম্পানের প্রভাবে অতিবর্ষণ ও ঝড়ো হাওয়ায় মাঠে থাকা কৃষি ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করছে কৃষি বিভাগ। বাগেরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক রঘুনাথ কর বলেন, বাগেরহাটে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে করলা, ঝিঙে, ঢেঁড়শসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির আবাদ করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৮০০ হেক্টরে পাট, ১১০০ হেক্টরে পানের বরজ ও ৩৪৯ হেক্টরে আউশ ধানের বীজতলা করা হয়েছে। আম্পানের প্রভাবে অতিবর্ষণে জলাবদ্ধতা, জোয়ারের জলোচ্ছ্বাস ও ঝড়ো বাতাসে এসব ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পানে প্রভাবে ধেয়ে আসছে সাগরের পানি। পানির তোড়ে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী, গলাচিপার গোলখালী ও বাউফলে বাঁধ ভেঙে গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার মাঝের চর, চর আন্ডা, চর মোন্তাজ, চালিতাবুনিয়াসহ পাঁচটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
বেড়িবাঁধের ওপর দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় সেসব এলাকার পানিবন্দি মানুষদের নিকটবর্তী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার ব্যবস্থা করছে রাঙ্গাবালী উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাশফাকুর রহমান বলেন, ‘চর মোন্তাজ ও চর আন্ডার পানিবন্দিদের ট্রলার করে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।’
এছাড়াও, গলাচিপার গোলখালী, বাউফলের কয়েকটি এলাকার বেড়িবাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে পানি লোকালয়ে ঢুকছে।
এরআগে মঙ্গলবার থেকেই ঢাকাসহ সারাদেশে বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি ও ঝড় দেখা গেছে। আজও ঢাকাসহ সারাদেশে বৃষ্টি হচ্ছে। তবে ঘূর্ণিঝড় আম্পান স্থলভাবে উঠে আসার পর বৃষ্টি ঝরিয়ে কমতে শুরু করবে ঝড়ের শক্তি। তবে এগোনোর গতি থামবে না। এবষিয়ে বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস বলছে, এ ঝড় রাত ৮ টার মধ্যে সুন্দরবন সংলগ্ন সাগরদ্বীপের পূর্ব পাশ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ- বাংলাদেশ উপকূলে পৌঁছাতে পারে।
আবহাওয়াবিদ ড. আব্দুল মান্নান বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের ব্যস প্রায় ৪০০ কিলোমিটার। পুরোপুরি স্থলভাবে উঠে আসতে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা লাগতে পারে। এর প্রভাবে বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ভারী বর্ষণ হতে পারে।
খুলনা ও সাতক্ষীরা উপকূলে আঘাত হেনেছে আম্পান। বুধবার সন্ধ্যার দিকে খুলনা ও সাতক্ষীরা উপকূলে আঘাত আনে প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পান।
এরআগে ঘূর্ণিঝড় আম্পান বিকাল ৫টার দিকে উপকূলের বাংলাদেশ অংশে পৌঁছেছে। ভারতের সাগারদ্বীপের পাশ দিয়ে সুন্দরবন ঘেঁষে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের ভূভাগে উঠে আসছে।
এদিকে কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকে এগিয়ে আসতে থাকায় ২৩ লাখ ৯০ হাজার ৩০৭ জন মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এছাড়া ৫ লাখ ১৭ হাজার ৪৩২টি গবাদিপশুকে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে বলে বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান জানিয়েছেন।
লোকসংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আশ্রয় কেন্দ্রের সংখ্যা ১২ হাজার ৭৮টি থেকে বাড়িয়ে ১৪ হাজার ৩৩৬টি করা হয়েছে। বাংলাদেশে ঝড়ের মধ্যে সরিয়ে নেওয়া মানুষের সংখ্যা এটাই সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছেন ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী। এরআগে ঘূর্ণিঝড় ফণির সময় ১৮ লাখ এবং বুলবুলের সময় ২২ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছিল।
এরআগে ঘূর্ণিঝড় আম্পান পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আঘাত হানার পর স্থলভাগে উঠে আসতে শুরু করেছে। স্থলভাগে উঠে আসার প্রক্রিয়ার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় তাণ্ডব চালিয়েছে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পান। সেই সঙ্গে ভারত ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকাজুড়ে চলছে তুমুল বৃষ্টি।
চিত্রদেশ//এস//