ব্যবসা বাড়াতে বীমা কোম্পানিতে ‘উইমেন্স উইং’ খোলার আহ্বান
স্টাফ রিপোর্টার:
মানসম্পন্ন বীমা পলিসি বিক্রি ও ব্যবসা বাড়াতে বীমা কোম্পানিগুলোতে ‘উইমেন্স উইং’ খোলার আহ্বান জানিয়েছেন এ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) সদস্য ড. মোশাররফ হোসেন। সোমবার রাজধানীর কাকরাইলে আইডিইবি ভবনে বেসরকারি জীবন বীমা কোম্পানি জেনিথ ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্সের ‘বর্ষ সমাপনী সম্মেলন-২০১৯’-এ সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘বীমা ব্যবসা বাড়ানোর জন্য ‘উইমেন্স উইং’ খোলা খুবই কার্যকরী একটি পদক্ষেপ। উইমেন্স উইং খুললে কোম্পানির ব্যবসা বাড়বে। তাছাড়া আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে মেয়েরা ছেলেদের থেকে বেশি স্বচ্ছ। আবার ছেলেদের থেকে মেয়েরা গ্রাহকদের কাছে সহজে যেতে পারেন। এতে মিস সেলিং (ভুল বীমা পলিসি বিক্রি) কম হয়। মিস সেলিং হলে সে বীমা পলিসি টেকে না।’
বীমা পেশাকে ভালোবাসার আহ্বান জানিয়ে কর্মীদের উদ্দেশে মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘কোনো পেশাই খারাপ নয়। বীমা একটি সম্মানের পেশা। আপনি আপনার পেশাকে ভালোবাসুন, তাহলে বেনিফিট (লাভ) পাবেন। পেশাকে ভালোবেসে কাজ করলে কোম্পানি লাভবান হবে। দেশের অর্থনীতির উন্নতি হবে। আপনিও আর্থিকভাবে লাভবান হবেন।’
তিনি জানান, বীমার পরিধি বাড়ানোর জন্য ‘ব্যাংক ইনস্যুরেন্স’ চালু করার লক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আইডিআরএ কাজ করছে। এজন্য ব্যাংকের সঙ্গে বীমা কোম্পানিগুলোর যোগাযোগ করার আহ্বানও জানান তিনি।
সর্বশেষ অনুমোদন পাওয়া জীবন বীমা কোম্পানিগুলো নিয়ে অনুষ্ঠানে হতাশাও প্রকাশ করেন নিয়ন্ত্রক সংস্থার এ সদস্য। তিনি বলেন, ‘চতুর্থ প্রজন্মের যে কয়টি কোম্পানি আছে তার মধ্যে দুই-একটি বাদে বাকি সবগুলোই স্ট্রাগল করছে’।
জেনিথ ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম নুরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- কোম্পানির চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য ফরিদুন্নাহার লাইলী। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন- কোম্পানির ভাইস চেয়ারম্যান রেজাকুল হায়দার ও স্বতন্ত্র পরিচালক কাজী মোরতুজা আলী।
এস এম নুরুজ্জামান বলেন, ‘প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) আসার জন্য আইডিআরএ-র চাপ রয়েছে। আমাদের অবশ্যই আইপিওতে আসতে হবে। এজন্য প্রিমিয়াম হার বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই।’
এ সময় বীমা কর্মীদের দীর্ঘমেয়াদি চাকরির নিশ্চয়তার জন্য আইডিআরএ’র নির্দেশনা মোতাবেক গ্রুপবীমা, স্বাস্থ্য বীমা ও পেনশন বীমা গ্রহণের অনুরোধ করেন তিনি।
কোম্পানির কর্মকর্তা ও কর্মীদের উদ্দেশে নুরুজ্জমান বলেন, ‘সবাইকে কাজের স্বচ্ছতা রাখতে হবে, কর্মী ও কর্মকর্তাদের প্রিমিয়ামের টাকা অবশ্যই, ব্যাংক, বিকাশ, রকেটের মাধ্যমে জমা নিশ্চিত করতে হবে। কারো হাতে নগদ টাকা দেওয়া যাবে না।’
অনুষ্ঠানে ২৮টি এসবির চেক বাবদ পাঁচ লাখ ৪৫ হাজার ৫৯৮ টাকা এবং দুটি মৃত্যু দাবি বাবদ এক লাখ ৮০ হাজার ২৫০ টাকা পরিশোধ করা হয়।
এ সময় জেনিথ ইসলামী লাইফের বিভিন্ন বীমা দাবি পরিশোধের তথ্যও তুলে ধরেন নুরুজ্জামান। তিনি জানান, জেনিথ ইসলামী লাইফ ৯০৭ জনকে এসবি বাবদ তিন কোটি ৬১ লাখ ৬১ হাজার ৯০১ টাকা, ৫৪ জনের মৃত্যু দাবি বাবদ ৫৯ লাখ ৬৪ হাজার ৮৬১ টাকা, ৪২ জনের সমর্পণ মূল্য বাবদ ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ১২টি স্বাস্থ্য বীমার বিপরীতে দুই লাখ টাকা পরিশোধ করেছে।
চিত্রদেশ ডটকম//এস//