প্রধান সংবাদসারাদেশ

অবশেষে সাগরে রূপালী ইলিশের দেখা মিলেছে

পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকাররত জেলেদের জালে অবশেষে দেখা মিলেছে রূপালী ইলিশের। ইলিশবোঝাই দুই-একটি ট্রলার সমুদ্র থেকে বন্দরের ঘাটে ফিরে আসায় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরতে শুরু করেছে মহিপুর-আলীপুর মৎস্য বন্দরে। গত দু’দিন সমুদ্র থেকে ইলিশের ঘাটে ফেরার এ বার্তায় হতাশা কাটতে শুরু করেছে জেলেপল্লীর পরিবারের সদস্যদের মাঝ থেকে। তবে ইলিশবোঝাই ট্রলারের ঘাটে ফেরার এ সংখ্যায় খুশি নন মৎস্য আড়ৎ ব্যবসায়ী, ট্রলার মালিক ও জেলেরা।

মহিপুর মৎস্যবন্দর সূত্র জানায়, গত দুইদিনে বেশকিছু ইলিশবোঝাই ট্রলার ঘাটে ফিরেছে। এদের মধ্যে চট্রগ্রামের মহেশখালী এলাকার সাদেক মিয়ার এফবি আল্লাহর দান বড় সাইজের ৮ হাজার পিস ইলিশ বিক্রি করেছে ১৩ লাখ টাকায়।

আলীপুর মৎস্য বন্দরের সোবাহান খলিফার মালিকানাধীন ট্রলার বিক্রি করেছে ২০ লাখ টাকা। মোস্তফা খলিফা’র মালিকানাধীন এফবি জাবের বিক্রি করেছে ১৫ লাখ টাকা। আহসানের মালিকানাধীন এফবি ঝিলিক বিক্রি করেছে ১৮ লাখ টাকা। মনি ফিস’র মালিকানাধীন এফবি মনি বিক্রি করেছে ৩০ লাখ টাকা। মহিপুর মৎস্যবন্দরের ফজলু গাজী’র মালিকানাধীন এফবি ফয়সাল বিক্রি করেছে ১৫ লাখ টাকা। ডক আনোয়ারের ট্রলার বিক্রি করেছে ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। মনিরুল ইসলামের মালিকানাধীন কক্সবাজার ফিস’র এফবি আল্লাহর দান বিক্রি করেছে ২ লাখ ৮৫ হাজার টাকার ইলিশ।

বন্দর সূত্র আরও জানায়, বর্তমানে প্রতিমন বড় সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে মণপ্রতি ৪০-৪৫ হাজার টাকা। ৭০০-৮০০ গ্রাম সাইজের ইলিশ প্রতিমণ বিক্রি হচ্ছে ২৪-২৫ হাজার টাকা। এছাড়া প্রতিমন জাটকা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১২ হাজার টাকায়।

আলিপুর মৎস্য আড়ৎ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আনছার উদ্দীন মোল্লা বলেন, সমুদ্র থেকে দুই-একদিন ধরে বন্দরে ইলিশ আসতে শুরু করেছে। তবে তাও আশানুরূপ নয়। সমুদ্র থেকে ১০০ ট্রলার ঘাটে ফিরলে কাঙ্খিত ইলিশ বিক্রি করেছে ৮-১০টি ট্রলার। অপর ৯০টি ট্রলারের সমুদ্রযাত্রার বাজার খরচ ওঠেনি মাছ বিক্রি করে। তাই সমুদ্রে ইলিশ খুব বেশি ধরে পড়ছে সেটি বলা যায় না।

মহিপুর মৎস্য বন্দরের কক্সবাজার ফিস’র মালিক মনিরুল ইসলাম বলেন, গভীর সমুদ্র থেকে ফেরা চট্রগ্রাম এলাকার কিছু ট্রলার কাঙ্খিত ইলিশ পেয়েছে। স্থানীয় জেলেরা এখনও ইলিশ পায়নি। তবে সমুদ্রে ইলিশের দেখা মিলেছে, এটাই খুশির খবর।

বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তরের সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্ট’র উপ-প্রকল্প পরিচালক কামরুল ইসলাম বলেন, আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে পৃথিবীর সকল প্রাণিকূলের জৈবিক ক্রিয়া-প্রক্রিয়া ও প্রজনন কর্মকাণ্ডের সময়কাল প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। ইলিশও এর বাইরে নয়। বৈশ্বিক আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ইলিশের প্রজনন সময়েও কিছুটা পরিবর্তন এসেছে।

কামরুল ইসলাম আরও বলেন, ইলিশ সাধারণত সমুদ্রের গভীর অংশে চলাচল করে। প্রজনন সময়ে এরা পানির গভীর স্তর থেকে উপরের অংশে চলে আসতে শুরু করে। আগামী দুই-এক সপ্তাহে সমুদ্র উপকূল ও নদ-নদীতে জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ মিলবে। বর্তমানে গভীর সুমদ্রে ১০০-১৫০ ফুট জাল ব্যবহারকারী জেলেরা ইলিশ পাচ্ছে। দু-এক সপ্তাহ পর ২০-৩০ ফুট জাল ব্যবহারকারী জেলেদের জালেও ইলিশ মিলবে।

চিত্রদেশ//এফটি//

Related Articles

Back to top button