দারিদ্র্য বিমোচন বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ
স্টাফ রিপোর্টার:
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের জন্য দারিদ্র্য বিমোচন করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হলেও সেটি ধরে রাখা এবং আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে দারিদ্র্যসীমার বাইরে নিয়ে আসাই এখন সরকারের জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জ।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘সরকারের সক্ষমতা এবং ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন- চীনের অভিজ্ঞতা’ শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ চীন সিল্করোড ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত এ সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। কি-নোট স্পিচ উপস্থাপন করেন চীনে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমেদ।
দারিদ্র্য নিয়ে চ্যালেঞ্জের কথা স্বীকার করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বাংলাদেশ দীর্ঘদিন যাবত শাসিত ও শোষিত অবস্থায় ছিল। তবে আমাদের আদর্শ মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ। মোটা দাগে এ কথা ঠিক যে, দারিদ্র্য বিমোচন করা আমাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে এর জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কল্যাণবাদে বিশ্বাস করেন। আমাদের এখন প্রতি পাঁচ জনে একজন দরিদ্র। আমরা চেষ্টা করছি, আগামী পাঁচ-সাত বছরের মধ্যে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমিয়ে প্রতি ১০ জনে একজন এ নামিয়ে আনতে।
চীন থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে পারে উল্লেখ করে মান্নান বলেন, আমরা চীনকে নকল করে নয়, বরং তাদের থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে পারি। চীন তাদের অবকাঠামোগত উন্নয়ন দিয়ে অর্থনীতির মেরুদণ্ড গড়েছে। আমার মনে হয়, আমরা আমাদের অর্থনীতিকে সেদিকে নিচ্ছি। তাদের থেকে শিখে বিভিন্ন সুদূরপ্রসারী উন্নয়ন করছি আমরা। এজন্য কিছুটা হলেও আমাদের দারিদ্র্য কমেছে, সবাইকে স্বীকার করতেই হবে।
এদিকে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, আপনারা যদি চীনের উন্নয়নের দিকে লক্ষ করেন তাহলে চারটি দিক পাবেন। প্রথমত, লিডারশিপ বা নেতৃত্ব। কমিউনিস্ট পার্টি চীনের (সিপিসি) নেতৃত্বে আজ আমরা এ অবস্থানে এসেছি। দ্বিতীয়ত, জনগণের প্রতি সরকারের গুরুত্ব। জনগণ একটি জাতির মেরুদণ্ড। তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা আমাদের সর্বোচ্চ এজেন্ডা, যা আমরা করে আসছি। তৃতীয়ত, প্রশাসনে দুর্নীতি বা স্বচ্ছতার অভাব। চতুর্থ দিক হচ্ছে, একে অপরের প্রতি সহযোগিতা। আমরা নিজেরা নিজেদের প্রতি যেমন সহায়ক তেমনি বহিঃবিশ্বের প্রতিও আমরা আমাদের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। বাংলাদেশের উন্নয়নে আমরা দীর্ঘদিন ধরে একসঙ্গে কাজ করছি। এ বন্ধন ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে আশা করি।
কলামিস্ট সাংবাদিক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, কনফুসিয়াসের সময় থেকেই চীন বিশ্বের কাছে বিশাল বিস্ময়। তবে চীন কখনো বসে থাকেনি। নিজেদের শাসন ব্যবস্থাকে বিশ্বে রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তারা জ্ঞানী জাতি। তাদের জ্ঞান পৃথিবী গ্রহণ করেছে। তাদের কাছ থেকে আমরা কীভাবে শিখতে পারি সেটি ভাবতে হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির মহাসচিব এবং বাংলাদেশ চীন সিল্করোড ফোরামের প্রেসিডেন্ট দিলীপ বড়ুয়ার সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান হাসানুল হক ইনু, বিএনপি নেতা ড. মঈন খান সহ অন্যরা।
চিত্রদেশ//এস//