কানিজ কাদীরের ভ্রমণ কাহিনী ‘মাদুরাই'(৪র্থ পর্ব)
তার ফ্লাইট ৯-৩০ এ। মহিলার সাথে অনেক গল্প করলাম। বেশ শিক্ষিত মহিলা। সে শ্রীলংকার একটা অফিসের এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর। হায়দারাবাদ যাচ্ছে একটা ট্রেনিংয়ে। ৯টার সময় মহিলা উঠে গেল কারণ তার ডমিস্টিক ফ্লাইট এর যাত্রীদের নেয়ার জন্য বাস এসে অপেক্ষা করছে। মাইকে এনাউনস্ শুনে সে উঠে পড়লো। আমি তার ফোন নাম্বার ও নাম লিখে রেখে দিলাম। সেও আমার নাম ও ফোন নাম্বার নিল। একঘন্টা মহিলার সাথে গল্প করে সময় ভলোই কাটলো। আমার ফ্লাইট দশটায়। এই ফাঁকে আমি একটু ফ্রেশ হয়ে নিলাম। কিছুক্ষণ পর মাইকে ঘোষণা আসলো আমার ফ্লাইট এর যাত্রীদের বাসে ওঠার জন্য। তাড়াতাড়ি উঠে গেট এর চেকিং পাড় হয়ে বাসে যেয়ে বসলাম। খুব মজার বাস। আমাদেরকে নিয়ে ডমিস্টিক ফ্লাইট এর কাছে নিয়ে গেল। আমি সবার সাথে সাথে যেয়ে বিমানে উঠলাম। ছোট বিমান। ভিতরে ভিতরে একটু ভয় হচ্ছিল। কিন্তু ভয়টাকে খুব একটা আমল দিলাম না। ভিতরে একটা শক্তি আনার চেষ্টা করলাম যে কোন ভয় পাব না। শুধু দোয়া পড়ে আল্লাহর নাম নিলাম। বেশ ভালো ভাবেই সকাল সাড়ে এগারটায় মাদুরাই পৌঁছালাম। এয়ারপোর্টে নেমে লাগেজ নিলাম সবার সাথে। ব্রেক জার্নিটাকে যতটা ভয় পেয়েছিলাম। একা একা তেমন আর ভয়ের কিছুই মনে হচ্ছিল না। এয়ারপোর্টের বাইরে এলাম ট্রলি ঠেলে লাগেজ নিয়ে। এখানে এসে চারিদিকে তাকাচ্ছিলাম যে কেউ দাড়িঁয়ে আছে কিনা আমার জন্য। কিন্তু বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পরও যখন দেখলাম কেউ দাঁড়িয়ে নেই তখন আর চিন্তা না করে একটা প্রিপ্রেইড ট্যাক্সি ভাড়া করলাম। ট্যাক্সি ড্রাইভার আমাকে বেশ হেল্প করলো।
তাকে জিজ্ঞেস করলাম ‘অরভিন্দ আই হসপিটাল’ কতদূর। সে বললো ৪০মিনিট লাগবে। শুনে একটু ভয় ভয় লাগছিল। একা একা এতক্ষণ ট্যাক্সিতে থাকতে হবে ভেবে। ড্রাইভার বেশ ভালভাবেই চালালাে। আমার একটু ভয় লাগছিল ”যে ড্রাইভার না আবার অন্য জায়গায় নিয়ে যায়। ” যাক আল্লার নাম নিতে নিতে আল্লার রহমতে অরভিন্দ আই হাসপাতালের কাছে এসে লোকজনের কাছে বলে বলে ‘ইন্সপিরেশন’ হোস্টেলের গেট পেয়ে গেলাম।
লাইকো(LAICO) এর হোস্টেল। পৃথিবীর ডেভেলপিং কান্ট্রি এর বিভিন্ন ট্রেইনীদের এখানে থাকা, খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।লাইকো মানে লায়ন্স অরভিন্দ ইন্সটিটিউট অফ কমিউনিটি অফথালমোলজী। ”ইন্সপিরেশন ”নাম গেটে দেখেই খুব সাহস ফিরে পেলাম। গেটে নেমেই লাগেজ নিয়ে ভিতরে ঢুকলাম। তখন দুপুর প্রায় সাড়ে ১২টা বাজে। (চলবে)