পেঁয়াজের দাম পাইকারিতে কমলেও খুচরায় চড়া
স্টাফ রিপোর্টার:
ভারত হঠাৎ পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণার পর প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাওয়া পেঁয়াজের দাম পাইকারি বাজারে গত দুই দিনে কিছুটা কমেছে। তবে এর কোনো প্রভাব নেই খুচরা বাজারে। বাড়তি দামেই পেঁয়াজ বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা।
পাইকাররা বলছেন, বাজারে নতুন করে পেঁয়াজ আসায় কেজিপ্রতি পাঁচ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে, তবে খুচরার বিষয়ে তথ্য জানা নেই। আর খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারদের কাছ থেকে বেশি দামে পেঁয়াজ কেনা। সেখানে কম দামে পেলে খুচরায়ও দাম কমবে।
এদিকে পেঁয়াজের বাড়তি দামের সঙ্গে আগের মতই চড়া দামে কিনতে হচ্ছে সব ধরনের সবজি। এর সঙ্গে মুরগি ও ডিমের দামও চড়া। ফলে কয়েক মাস ধরে ভোগানো কাঁচাবাজার সাধারণ মানুষকে আরও বেশি ভোগাচ্ছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে শাকের দাম। তবে এর মধ্যে কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে বরবটির দাম, আর কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে করলার দাম। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে আলু, চাল, ডাল, তেল ও মসলার দাম।
শুক্রবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর, রামপুরা, মগবাজার চারুলতা মার্কেট, মালিবাগ, মালিবাগ রেলগেট বাজার, মগবাজার শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা, ফকিরাপুল, মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি কলোনি বাজার ও খিলগাঁও কাঁচাবাজার ঘুরে এসব চিত্র উঠে এসেছে।
এদিন কারওয়ান বাজারের আড়তে পাইকারি দেশি পেঁয়াজ প্রতিপাল্লা (পাঁচ কেজি) বিক্রি হচ্ছে ৪৩০ টাকা বা ৮৬ টাকা কেজি দরে, দেশি (কিং) বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা পাল্লা (পাঁচ কেজি) বা ৮০ টাকা কেজি। আর আমদানি করা (এলসি) পেঁয়াজ প্রতিপাল্লা ৩১০ টাকা বা ৬২ টাকা কেজি দরে।
অন্যদিকে কাঠালবাগান, মগবাজার চারুলতা মার্কেট, মালিবাগ ও খিলগাঁও বাজার খুচরা প্রতিকেজি দেশি (কিং) পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১১০ টাকা, আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকার মধ্যে।
পেঁয়াজের দাম বাড়ায় সরকারিভাবে টিসিবির ট্রাকসেলে ৩০ টাকা কেজিদরে পেঁয়াজ বিক্রি অব্যাহত রয়েছে। বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সরকারিভাবে বন্ধের দিন ছাড়া প্রতিদিন এ বিক্রি অব্যাহত থাকবে।
এদিকে পেঁয়াজের দাম নিয়ে অন্তোষ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। হামিদ মিয়া নামে কারওয়ান বাজারের এক ক্রেতা বলেন, ‘আজ নতুন এলসি পেঁয়াজ বাজারে এসেছে কিন্তু সে তুলনায় ব্যবসায়ীরা দাম কমাচ্ছে না। তারা এভাবে কতদিন আমাদের জিম্মি করে বেশি দামে বিক্রি করবে ওপরওয়ালা ভালো জানেন।’
কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা আশরাফ আলী বলেন, ‘একদিনের ব্যবধানে কেজিতে পাঁচ টাকা কমেছে আজ। এলসির পেঁয়াজ এসেছে দেখেই দাম কমেছে, বাজারে পর্যাপ্ত এলে দাম আরও কমবে।’
অন্যদিকে আকার ও মানভেদে আগের চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে সবজি। প্রতিকেজি হাইব্রিড শসা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শসা (দেশি) বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়, গাজর (আমদানি) ৮০ থেকে ৯০ টাকা, মানভেদে ঝিঙ্গা-ধুন্দল বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কাকরোল আকারভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, বেগুন আকারভেদে ৬০ থেকে ৯০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, টমেটো ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজিদরে।
কাঁচা মরিচ ২০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৭০ টাকা কেজিদরে। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে আলু, পেঁপে, কচুরমুখি ও কাঁচকলা। এ বাজারে প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজিদরে, পেঁপে ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা, কচুরমুখি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁচকলা প্রতিহালি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অপরিবর্তিত আছে চাল, ডাল ও ভোজ্যতেল ও মসলার দাম। এসব বাজারে বর্তমামে প্রতিকেজি মিনিকেট (নতুন) চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকা কেজি, মিনিকেট পুরান ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা, বাসমতি ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, আতপ চাল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, প্রতিকেজি পোলাওয়ের চাল বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা কেজিদরে। গুটি চাল বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৪ টাকা, পায়জাম ৪৫ টাকা ও আঠাশ ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সিদ্ধচাল বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৪ টাকা কেজিদরে।
প্রতিকেজি ডাবলি ডাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, প্রতিকেজি মসুরের ডাল (দেশি) বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা কেজিদরে। খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকায়।
চিত্রদেশ//এফ//