মুক্তমত

সড়কের আনন্দ, বেদনা ও আতঙ্ক

মুহম্মদ জাফর ইকবাল:

আমি নিজেকে যে কয়েকটি বিষয়ের বিশেষজ্ঞ হিসেবে দাবি করতে পারি, তার একটি হচ্ছে ‘বাংলাদেশের সড়কপথের নিরলস যাত্রা’। শুধু যে মুখের কথায় দাবি করছি তা নয়, আমি তার প্রমাণও দিতে পারব।

যে দুমড়ানো-মোচড়ানো মাইক্রোবাসটিতে আমি সারা বাংলাদেশ চষে বেড়িয়েছি (এবং আলাদাভাবে ঢাকা-সিলেট কিংবা সিলেট-ঢাকা করেছি), তার কারণে যে দূরত্ব অতিক্রম করতে হয়েছে সেটি যদি শুধু একদিকে করা হতো, তাহলে এর মাঝে পুরো পৃথিবীটাকে কমপক্ষে ছয়বার পাক খেয়ে আসতাম!

কাজেই সড়কপথে চলাচলের যেসব আনন্দ, বেদনা কিংবা আতঙ্কের অভিজ্ঞতা হওয়া সম্ভব, সব আমার হয়েছে। যখন মেঘনা ব্রিজ তৈরি হয়নি, তখন ফেরি পার হওয়ার জন্য অনেক রাত রাস্তায় কাটিয়েছি। জামায়াত-শিবিরের চোখকে ফাঁকি দেয়ার জন্য ঘরের বাতি না জ্বালিয়ে অন্ধকারে প্রস্তুতি নিয়ে গভীর রাতে ঢাকা রওনা দিয়েছি।

ছাত্রলীগের ছেলেদের মাস্তানি করার অপরাধে শাস্তি দেয়ার কারণে তারা আমাদের রাস্তায় খুঁজে বেড়াচ্ছে, তার অভিজ্ঞতাও আছে। দিনদুপুরে পেছন থেকে বাস ধাক্কা দিয়েছে, কুয়াশায় সামনে থেকে কিংবা পাশ দিয়ে চলতে থাকা ট্রাকের টায়ার ফেটে তার শক্তিশালী ঝাপটায় পাশ থেকে গাড়ির দরজা জানালা দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা আছে।
গণিত অলিম্পিয়াডে যাওয়ার সময় গাড়ি এক্সিডেন্টে সবাই কম বেশি আহত, একজন সহকর্মীর অবস্থা গুরুতর, তাকে হাসপাতালে নেয়ার জন্য আমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে চলন্ত গাড়িগুলো থামানোর চেষ্টা করছি- কেউ থামতে রাজি নয়! শেষ পর্যন্ত একটা ট্রাক আমাদের হাসপাতালে নিয়েছে।

হঠাৎ করে বাস ধর্মঘট, স্কুল ছুটির পর ছোট ছোট মেয়েরা বাসায় ফিরে যেতে পারছে না। আমি আর আমার স্ত্রী মিলে আমাদের মাইক্রোবাসে তাদের গাদাগাদি করে তুলে গন্তব্যে পৌঁছে দিয়েছি।

(নামানোর সময় তাদের বিশাল লেকচার, খবরদার, যত কষ্টই হোক ভুলে কখনও অপরিচিত মানুষের গাড়িতে উঠবে না!)। রাস্তার পাশে ক্ষেতের মাঝে চার চাকা উপরে তুলে পড়ে থাকা বাস কিংবা ট্রাক খুবই পরিচিত একটা দৃশ্য, তবে বিষয়টা সবচেয়ে হৃদয়বিদারক হয় যখন দেখি সদ্য অ্যাক্সিডেন্ট হওয়ার পর রাস্তার পাশে মৃতদেহগুলো সারি সারি করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে।

আন্দোলনের কারণে রাস্তা বন্ধ একসময় প্রায় নিয়মিত ঘটনা ছিল, তখন ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে শিখেছি। কখনও কখনও আন্দোলন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, গাড়ি ভাংচুর শুরু হয় তখন গাড়ি ঘুরিয়ে পেছন দিকে ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটে যেতে হয়। এক কথায় বলা যায়, বাংলাদেশের সড়কপথে চলাচল করার সবরকম অভিজ্ঞতা আমার আছে। কাজেই আমি একজন খাঁটি বিশেষজ্ঞ, এ ব্যাপারে আমি দায়িত্ব নিয়ে কথা বলার অধিকার রাখি।

কেউ যদি আমাকে জিজ্ঞেস করে বাংলাদেশের সড়কপথের সবচেয়ে বড় সমস্যা কী? আমি এককথায় যেটা বলে দিতে পারব, সেটা হচ্ছে বেপরোয়া ড্রাইভিং। এদেশের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী কিংবা বড় বড় কর্মকর্তারা কোনোদিন সেটা সম্পর্কে বলতে পারবেন না, কারণ তাদের কখনও সেটা দেখতে হয় না। বেপরোয়া ড্রাইভিং যে কী পরিমাণ বেপরোয়া, সেটি শুধু আমাদের মতো সড়কপথের সাধারণ যাত্রীরা জানে।

২.

বেশ কিছুদিন আগের কথা, আমি বাসে করে ঢাকা যাচ্ছি। আমার সিট ঠিক ড্রাইভারের পেছনে। ড্রাইভার কীভাবে গাড়ি চালাচ্ছে, সেটা আমি দেখতে পাচ্ছি। বিশাল একটা বাস সরু একটা রাস্তায় গুলির মতো ছুটে যাচ্ছে। অনেক বড় এবং দামি বাস, শুনেছি ড্রাইভারদের এ বাস চালানোর জন্য বিদেশ থেকে ট্রেনিং দিয়ে আনা হয়েছে। আরও শুনেছি এ বাস ড্রাইভারের বেতন আমাদের বেতন থেকেও বেশি।

এটা অবশ্য যাচাই করে দেখার কোনো সুযোগ পাইনি! এরকম দামি বাস ঠিকভাবে চালালে বাসটি আসলেই চলছে নাকি দাঁড়িয়ে আছে, সেটাও বোঝার কথা নয়। দেশের বাইরে বাসে চড়ার অভিজ্ঞতা থেকে আমি সেটা জানি। কিন্তু এ বাসটি এমনভাবে চলছে যে, আমরা যাত্রীরা বাসের ভেতর একবার ডানদিকে একবার বাম দিকে কাত হয়ে পড়ে যাচ্ছি।

আমি বিস্ফারিত চোখে সামনে রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছি। হঠাৎ দেখলাম আমাদের বাসটি অন্য কোনো একটি বাস, ট্রাক কিংবা গাড়িকে ওভারটেক করার জন্য রাস্তার ডানপাশে চলে এসেছে। এটি নতুন কিছু নয়, সব সময় এটি হয়। সব বাস ট্রাক গাড়ি বিন্দুমাত্র দ্বিধা না করে নিজের লেইন থেকে অন্যের লেইনে চলে যায়। আমি হঠাৎ দেখলাম, সামনে একটি রিকশা।

মহাসড়কে সম্ভবত রিকশা থাকার কথা নয়, কিন্তু আমাদের দেশে কে আর এ নিয়ম মানে? একটা রিকশা আর কতটুকু জায়গা নেয়? সহজেই তাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া যায়; কিন্তু আমি হঠাৎ লক্ষ করলাম আমাদের বাসের ড্রাইভার অবিশ্বাস্য নৃশংসতায় সোজাসুজি সেই রিকশাটিকে চাপা দেয়ার চেষ্টা করল!

আমি আতঙ্কে চিৎকার করে চোখ বন্ধ করলাম এবং যখন চোখ খুলেছি, তখন টের পেয়েছি একেবারে শেষ মুহূর্তে রিকশাটি রাস্তা থেকে নিচে সরে গিয়ে তার প্রাণ রক্ষা করেছে। আমার কিছুক্ষণ লাগল ধাতস্থ হতে। যখন ধাতস্থ হয়েছি তখন ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘এটা আপনি কী করেছেন?

রিকশাটিকে চাপা দেয়ার চেষ্টা করেছেন?’ ড্রাইভার আমার দিকে তাকাল, কোনো কথা বলল না। তারপর তার হেল্পারকে বলল আমার সামনের পর্দাটা টেনে দিতে। আমি যেন তার ড্রাইভিং আর দেখতে না পারি।
আমি অসংখ্যবার সড়কপথে যাতায়াত করার সময় উল্টোদিক দিয়ে দৈত্যের মতো একটি বাসকে একসঙ্গে একাধিক ওভারটেক করার কারণে পুরো রাস্তা দখল করে ছুটে আসতে দেখেছি। আমার নিজের ড্রাইভার কোনোরকম ঝুঁকি না নিয়ে অনেক আগেই সেই দৈত্যাকার বাসকে যেতে দেয়ার জন্য রাস্তার পাশে নেমে গেছে।

এ ব্যাপারগুলো আমি জানি, তবে আমার ধারণা ছিল ড্রাইভাররা ভয় দেখিয়ে নিজের জন্য রাস্তা খালি করে নেয়। তবে নিজের চোখে দেখে আমি আবিষ্কার করলাম, আসলে বিষয়টা তার থেকে অনেক ভয়ানক।

এ দৈত্যাকার বাসের ড্রাইভাররা আক্ষরিকভাবে ছোট গাড়ি, স্কুটার কিংবা রিকশাকে পিষে ফেলার চেষ্টা করে। তাদের প্রাণের জন্য কোনো মায়া নেই, ড্রাইভিং করার পদ্ধতি হিসেবে তারা অন্যদের পিষে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

যারা প্রাণে বাঁচতে চায় সেটা তাদের মাথাব্যথা, বাস ড্রাইভারদের নয়। সারা পৃথিবীর আর কোথাও এরকম ভয়ংকর মনোভাবের ড্রাইভার আছে কিনা আমি জানি না।
ড্রাইভিং এবং সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে নতুন সড়ক পরিবহন আইন হয়েছে এবং সেটা নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। এ আলোচনা সম্পর্কে পড়তে এবং জানতে আমি আগ্রহ পাচ্ছি না। যে দেশে ড্রাইভাররা মনে করে, যেহেতু আমার গাড়ি সাইজে বড়, দাম বেশি, তাই রাস্তায় আমার অধিকার বেশি, আমি মানুষজনকে পিষে মেরে ফেলার চেষ্টা করব, যার বেঁচে থাকার ইচ্ছা সে যেভাবে পারে বেঁচে থাকার চেষ্টা করুক, সেই দেশে ড্রাইভিং সংক্রান্ত আইন-কানুন নিয়ে আলাপ-আলোচনার কোনো অর্থ আছে কিনা, আমি জানি না।

প্রথমে সবাইকে বিশ্বাস করতে হবে মানুষের প্রাণ সবচেয়ে মূল্যবান, কোনোভাবে কখনও কারও প্রাণের ঝুঁকি নেয়া যাবে না। সেজন্য আমার যত অসুবিধা হোক, সেই অসুবিধা আমাকে মেনে নিতে হবে। যে দেশে প্রাণের মূল্য নেই সে দেশে আইনের কি মূল্য আছে?

৩.

বেশ কয়েক বছর আগে আমি অফিসে বসে আছি, হঠাৎ আমার এককালীন ছাত্র এবং বর্তমান সহকর্মীর কাছ থেকে ফোন এসেছে। ফোনটি ধরতেই তার গলায় হাহাকারের মতো আর্তনাদ শুনতে পেলাম। এইমাত্র তার বাস আরেকটা বাসের সঙ্গে মুখোমুখি এক্সিডেন্ট করেছে, তার চারপাশে মৃতদেহ এবং মৃতদেহ (যতদূর মনে আছে সব মিলিয়ে ষোলজন মারা গিয়েছিল) নিজের দেশটিকে নিয়ে যতই হা-হুতাশ করি না কেন, আমাদের এ সাদামাটা দেশটার জন্য গভীর একটা ভালোবাসা আছে, কারণ এদেশে ভয়ংকর বিপদের সময় খুবই সাধারণ মানুষ সাহায্য করার জন্য ছুটে আসে। এবারেও তা-ই হয়েছে। একজন রিকশাওয়ালা জানালা দিয়ে ঢুকে আমার তরুণ সহকর্মীকে বের করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছে। ফিরে এসে আরেকজনকে, তারপর আরেকজনকে, এভাবে যতজনকে সম্ভব সে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল। আমার তরুণ সহকর্মীকে সেখান থেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং সে শেষ পর্যন্ত বেঁচে গিয়েছিল।

আমার সহকর্মী সুস্থ হয়ে যাওয়ার পর আমি তাকে বাস কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করতে রাজি করিয়েছিলাম। এ দুর্ঘটনাগুলো আসলে মোটেও দুর্ঘটনা নয়- এগুলো হচ্ছে বাস কোম্পানির অবহেলা এবং ড্রাইভারদের বেপরোয়া ড্রাইভিং। আমি ভেবেছিলাম যদি কোনোদিন কোনোভাবে একটা বাস কোম্পানিকে অভিযুক্ত করে তাদের কাছ থেকে অনেক বড় ক্ষতিপূরণ আদায় করা যায়, তাহলে দেশের সব বাস মালিকই সাবধান হয়ে যাবে। মানুষের প্রাণ রক্ষার জন্য না হলেও শুধু গাঁটের পয়সা থেকে বড় জরিমানা দেয়ার ভয়ে তারা হয়তো একটু সাবধানে বাস চালাবে।

দীর্ঘদিন মামলা চলেছে কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। একটা দুর্ঘটনার পরপর বিআরটিএ থেকে একটা রিপোর্ট সংগ্রহ করতে হয়। এ দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে বিআরটিএ কখনই বাস কোম্পানির বিপক্ষে কিছু লিখে না এবং তার কারণটি বুঝতে আমাদের রকেট সায়েন্টিস্ট হতে হবে না। আমার বিশ্বাস দেশে যদি দুর্ঘটনার পর দোষী ড্রাইভার কিংবা বাস কোম্পানিগুলোকে হতাহতদের বড় ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করা যায়, তাহলেই শুধু এ অশুভ চক্র একটুখানি সতর্ক হবে। মানুষের প্রাণকে একটুখানি মূল্য দেবে।

৪.

সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ পাস করার সঙ্গে সঙ্গে আমরা সারা দেশে একটি বিচিত্র নাটক অভিনয় হতে দেখলাম। সারা দেশে ঘোষিত এবং অঘোষিত বাস ট্রাক ধর্মঘট। দেশের সব মানুষ রাতারাতি পরিবহন শ্রমিকদের হাতে পুরোপুরি জিম্মি হয়ে গেল। সারা পৃথিবীর কোথাও এরকম ঘটনা ঘটতে পারে বলে আমার মনে হয় না। আমাদের দেশে এটি ঘটে এবং আমরা আজকাল মোটামুটি এতে অভ্যস্ত হতে শুরু করেছি। আমরণ মেনে নিয়েছি বাস মালিক এবং পরিবহন শ্রমিকরা যখন খুশি যেভাবে খুশি আমাদের নাস্তানাবুদ করে ছেড়ে দেবে, আমাদের সেটা মেনে নিতে হবে।

অথচ এরকম হওয়ার কথা ছিল না। বাংলাদেশ ছোট্ট একটুখানি দেশ, এদেশটি ট্রেন লাইন দিয়ে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলা সম্ভব। আমি সড়কপথে যাতায়াত সংক্রান্ত একজন ‘বিশেষজ্ঞ’, আমি জোর গলায় ঘোষণা দিতে পারি এদেশে সড়কপথে যাতায়াত যেরকম একটি বিভীষিকা, ট্রেনপথে যাতায়াত ঠিক সেরকম একটি আশীর্বাদ। আমাদের পাশের দেশ ভারতবর্ষেও অসাধারণ ট্রেন যোগাযোগ গড়ে তোলা হয়েছে; কিন্তু আমাদের দেশে সেটি গড়ে ওঠেনি। কেন গড়ে ওঠেনি কিংবা কেন গড়ে উঠছে না? এমন তো না যে এখন আমাদের দেশে টাকা-পয়সার টানাটানি। আমরা তো প্রায় নিয়মিতভাবে নতুন নতুন মেগা, সুপার মেগা প্রকল্পের খবর পড়ছি। তাহলে কেন সারা দেশে নতুন নতুন রেললাইন বসানো হচ্ছে না? কেন সেই লাইনগুলো দিয়ে প্রতি পাঁচ মিনিটে একটার পর আরেকটা ট্রেন যাচ্ছে না? কেউ কী কখনও ঢাকা-সিলেট কিংবা চট্টগ্রাম-সিলেট ট্রেনে গিয়েছে? সেই ট্রেনগুলোর কী ভয়াবহ অবস্থা কেউ কী জানে? আমরা কী একটুখানি নিরাপদ ট্রেনের আশা করতে পারি না? তাহলে কেন এত বছর পরও দেশে আধুনিক একটা ট্রেনের নেটওয়ার্ক গড়ে উঠল না।

আমি এর দুটি ব্যাখ্যা শুনেছি। দেশের গুরুত্বপূর্ণ মানুষ তার সত্যতা নিয়ে কথা বলতে পারবেন। প্রথম ব্যাখ্যাটি এরকম- বাংলাদেশে পৃথিবীর যাবতীয় বাস গাড়ি, ট্রাক যেন বিক্রি করা যায় সেজন্য এখানে রাস্তাঘাট তৈরি করার জন্য ওয়ার্ল্ড ব্যাংক টাকা-পয়সা ঋণ দিয়ে যাচ্ছে; কিন্তু ট্রেন যোগাযোগকে নিরুৎসাহিত করে যাচ্ছে। দ্বিতীয় ব্যাখ্যাটি এ রকম- এদেশে বাস মালিকরা অসম্ভব ক্ষমতাশালী মানুষ, তাদের বাসের ব্যবসা যেন ঠিকভাবে চলে সে জন্য তারা কখনও এদেশে ট্রেন যোগাযোগ গড়ে তুলতে দেবে না।

যদি সত্যি সত্যি আমাদের দেশে ট্রেনের চমৎকার একটা নেটওয়ার্ক থাকত, আমরা সবাই যদি ট্রেনে যখন খুশি এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে পারতাম, তাহলে কী এদেশের বাস মালিক আর শ্রমিকরা এরকম হুট করে ধর্মঘট ডেকে পুরো দেশ অচল করে দিতে পারত? সত্যি যদি কথায় কথায় ধর্মঘট ডেকে বসত আমরা কী তখন তাদের থোড়াই কেয়ার করতাম? কেন আমাদের নিজের দেশে অন্যদের হাতে জিম্মি হয়ে থাকতে হবে?

মুহম্মদ জাফর ইকবাল : লেখক ও শিক্ষাবিদ

 

Related Articles

Back to top button