লাইফস্টাইল

মেঘের দেশ ‌‘সাজেক ভ্যালি’

স্টাফ রিপোর্টার:
করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘ পাঁচ মাসেরও বেশি সময় পর গত ১ সেপ্টেম্বর খুলে দেয়া হয়েছে দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র বাংলাদেশের দার্জিলিং খ্যাত সাজেক ভ্যালি। এদিকে হোটেল মালিকরা জানিয়েছেন, পর্যটকদের বরণ করতে কটেজ গুলোকে সাজানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৫০-৬০% কটেজ বুকিং হয়ে গেছে।

বাংলাদেশের রাঙামাটি জেলার বাগাইছড়ি উপজেলার অন্তর্গত সাজেক ইউনিয়নের একটি পর্যটন কেন্দ্র। সাজেক ভ্যালি রাঙামাটি জেলার সর্বউত্তরের মিজোরাম সীমান্তে অবস্থিত। খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরত্ব।

সাজেক ভ্যালিতে রয়েছে দুইটি পাহাড়; রুইলুই এবং কংলাক। রুইলুই পাহাড় ১৭২০ ফুট উচ্চতায় এবং কংলাক ১৮০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন হচ্ছে সাজেক ইউনিয়ন যার আয়তন ৭০২ বর্গমাইল। সাজেকে রয়েছে বিজিবি ক্যাম্প। এছাড়াও আছে হেলিপ্যাড।

সাজেকে সর্বত্র মেঘ, পাহাড় আর সবুজ। এখান থেকে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত দেয়া যায়। সাজেকের রুইলুই পাড়া থেকে ট্রেকিং করে কংলাক পাহাড়-এ যাওয়া যায়। কংলাক হচ্ছে সাজেকের সর্বোচ্চ চূড়া। কংলাকে যাওয়ার পথে মিজোরাম সীমান্তের বড় বড় পাহাড়, আদিবাসীদের জীবনযাপন, চারদিকে মেঘের আনাগোনা দেখা যায়। এখানে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে উপজাতিয় উৎসব অনুষ্ঠিত হয় এবং তাদের সংস্কৃতির নানা উপকরণ উপভোগ করা যায়।

সাজেকে যাওয়ার জন্য প্রথমে খাগড়াছড়ি জেলা থেকে চান্দের গাড়ি দিয়ে দীর্ঘ পাহাড়ি আঁকাবাঁকা উঁচু নিচু পথ পাড়ি দিতে হবে। এই পাহাড়ি পথ পাড়ি দেয়ার সময় রাস্তার দুই পাশে মনোরম দৃশ্য পরিলক্ষিত হবে। সেই সাথে দেখতে পারবেন উপজাতিদের জীবন চিত্র। আর এই দীর্ঘ পথ জুড়ে দেখতে পাবেন নীল আকাশ। আর যদি আপনি একটু সাহস করে চান্দের গাড়ির ছাদে উঠেন তাহলে আপনি …………..। ও আরেকটা কথা, সাজেকে আকর্ষণীয় একটি উল্লেখযোগ্য স্থান হলো আলুটিলা। এই স্থানে যাওয়ার জন্য আপনাকে যেটা করতে হবে সেটা হলো, সাজেক থেকে ফিরে আসার সময় খাগড়াছড়ি বাস স্টেশন হয়ে আলুটিলায় যেতে হবে।

সাজেকে আছে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য রিসোর্ট। প্রথমে দেখতে পাবেন সাজেক রিসোর্ট। এটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দ্বারা পরিচালিত। তারপর আছে মেঘ মাচাং রিসোর্ট, মেঘপুজ্ঞি রিসোর্ট, জুমঘর রিসোর্ট, রুন্ময় রিসোর্ট, আলো রিসোর্ট, আদিবাসীদের ঘরে ইত্যাদি।

সাজেক যাওয়ার উপায়: ঢাকা থেকে শ্যামলী, হানিফ ও অন্যান্য পরিবহনের বাসে খাগড়াছড়ি যেতে পারবেন। ভাড়া পড়বে ৫২০ টাকা। এ ছাড়া সরাসরি দীঘিনালা যেতে চাইলে শান্তি পরিবহনের বাস যায়। ভাড়া ৫৮০ টাকা। এছাড়াও বিআরটিসি ও সেন্টমার্টিন পরিবহনের এসি বাস খাগড়াছড়ি যায়।

যোগাযোগ: সেন্টমার্টিন পরিবহন, আরামবাগ: ০১৭৬২৬৯১৩৪১ , ০১৭৬২৬৯১৩৪০ খাগড়াছড়ি: ০১৭৬২৬৯১৩৫৮। শ্যামলী পরিবহন – আরামবাগ: ০২-৭১৯৪২৯১ কল্যাণপুর: ৯০০৩৩৩১ , ৮০৩৪২৭৫ আসাদগেট: ৮১২৪৮৮১ , ৯১২৪৫৪ দামপাড়া (চট্টগ্রাম) ০১৭১১৩৭১৪০৫ , ০১৭১১৩৭৭২৪৯। শান্তি পরিবহন – আরামবাগ ( ঢাকা ) – ০১১৯০৯৯৪০০৭ অক্সিজেন (চট্টগ্রাম) ০১৮১৭৭১৫৫৫২। Perfect Deal Tours (ঢাকা): ০১৮১২-৯৯৯৯০৯

চট্টগ্রাম থেকেও খাগড়াছড়ি যেতে পারবেন। BRTC এসি বাস (চট্টগ্রাম) কদমতলী: ০১৬৮২৩৮৫১২৫ খাগড়াছড়ি: ০১৫৫৭৪০২৫০৭

খাগড়াছড়ি থেকে অথবা দীঘিনালা থেকে জীপগাড়ি (লোকাল নাম চাঁন্দের গাড়ি) রিজার্ভ নিয়ে একদিনে সাজেক ভ্যালী ঘুরে আসতে পারবেন। ভাড়া নিবে ৫৪০০ টাকা। এক গাড়িতে ১০ জন বসা যায় কিন্তু সর্বোচ্চ ১৫ জন বসতে পারবেন। যদি দিনে যেয়ে ওই দিনই ফেরত আসেন তাহলে ভাড়া পড়বে ৫৪০০ টাকা। আর যদি একরাত থেকে পরের দিন আসেন সেক্ষেত্রে ভাড়া পড়বে ৭৭০০ টাকা। আর দু রাত থাকলে ১০০০০-১৩০০০ টাকার মতো পড়বে পার গাড়ি। একটা কথা মাথায় রাখবেন, এটা সম্পুর্ণ একটা চান্দের গাড়ির ভাড়া, এক জনের নয়।

লোক কম হলে শহর থেকে সিএনজি নিয়েও যেতে পারবেন। ভাড়া ৪০০০-৫০০০ টাকার মতো নিবে। যদিও সিএনজি নিয়ে যাওয়াটা খুব ঝুকিপূর্ণ। উল্টে যাবার সম্ভাবনা থাকে। অথবা খাগড়াছড়ি শহর থেকে দীঘিনালা গিয়ে সাজেক যেতে পারবেন। বাসে দীঘিনালা জন প্রতি ৪৫ টাকা এবং মোটর সাইকেলে জন প্রতি ভাড়া ১০০ টাকা। দীঘিনালা থেকে ১০০০-১২০০ টাকায় মোটর সাইকেল রিজার্ভ নিয়েও সাজেক ঘুরে আসতে পারবেন। ফেরার সময় অবশ্যই সন্ধ্যার আগে আপনাকে বাঘাইহাট আর্মি ক্যাম্প পার হতে হবে। তা না হলে অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে। ক্যাম্পের ছবি তোলা নিষেধ এই বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখবেন।

কোথায় খাবেন: খাগড়াছড়ি শহরের কাছেই পানখাই পাড়ায় ঐতিহ্যবাহী সিস্টেম রেস্তোরার (System Restaurant) অবস্থান। এখানে খাগড়াছড়ির ঐতিহ্যবাহী খাবার খেতে পারবেন। যোগাযোগ: ০৩৭১-৬২৬৩৪, ০১৫৫৬৭৭৩৪৯৩, ০১৭৩২৯০৬৩২২ খাওয়া দাওয়া শেষে টুপ করে বেরিয়ে আসুন কাছের নিউজিল্যান্ড পাড়া থেকে।

জেকে খেতে হলে রুন্ময় রিসোর্টে খাওয়া যায়। আর তা ছাড়া সাজেক রিসোর্টে থাকলে ওখানেও খাওয়া যায়। এছাড়া রুইলুই ও কংলক পাড়াতে আদিবাসিদের সাথে খাওয়া যায়। এজন্য অবশ্য আপনাকে আগে থেকে বলে দিতে হবে ক’জন খাবেন, কী খেতে চান এসব।

চিত্রদেশ//এল//

Related Articles

Back to top button