আমরা সবাই কাজ করি। তবে সবাই সিরিয়াসলি অনেক কাজই করি না। কাজের মধ্যে অনেকেরই কোন যত্ন নেই। যেনতেন ভাবে একটা কাজ করলেই হলো। অনেকেই খুব অগোছালো থাকতে পছন্দ করে । তাদের কাজে কোন মনোযোগ নেই। জানি না তাদের অলসের খাতায় ফেলবো কি না। এইসব লোকরা আবার দেখা যায় নিজের ব্যাপারে মাঝে মাঝেই বেশ স্বার্থপর থাকে। তারা অন্যের ভাল কাজেরও খুব সমালোচনা করে। অনেকেই একজন গোছানো, পরিপাটি, সিনসিয়ার কাজের মানুষের মধ্যে নানা দোষ খুজেঁ বেড়ায়। ভাবে এই ব্যক্তিটি তার কাজে এত আন্তরিক কেন? নিশ্চয়ই তার কোন স্বার্থ আছে। এটা আমাদের সমাজে, সংসারে খুব দেখা যায়। একজন শিক্ষিত, সচেতন মা যখন তার সন্তানকে নানা নিয়ম কানুনের মধ্যে আদর্শ মানুষ হিসাবে গড়ে তুলতে চায় তখন সন্তানও বড় হয়ে কখনও কখনও বলে বসে ‘মা’ তুমিতো আমাকে শুধু লেখাপড়া করিয়েছ। আমাকে টিভি দেখতে দাও নাই , ভালে জামা দাও নাই, অমুক জায়গায় বেড়াতে নিয়ে যাও নাই ইত্যাদি নানা অভিযোগ। একটা পরিবারের কিন্তু সবসময় এককরম সামর্থ থাকে না। সন্তানরা ছোট থাকাকালীন মা বাবা অনেক সময়ই অনেক চাহিদাই পূরণ করতে পারে না। কিন্তু একজন আদর্শ ‘মা’ তার স্বার্থের মধ্যেই যতটুকু পারে সন্তানের পড়ালেখা ও আনুষাঙ্গিক সবকিছুই অনেক যত্নের সাথে করে থাকে। কিন্তু সন্তান যখন বড় হয়ে মা’কে নানা কিছু পাওয়ার ব্যাপারে অভিযোগ করে মা’র তখন হতভম্ব হওয়া ছাড়া পথ থাকে না। মা’কে কখনও বিস্মিত হতে হয় সন্তানের কথায় আচরনে। অথচ এই মা’ই সব কাজে আন্তরিকতার কোন ত্রুটি রাখে নি। কত না সিরিয়াস ছিলেন তিনি তার সব কাজে ও সন্তানের ব্যাপারে।
আবার যখন কেউ তার কর্মক্ষেত্রে বা চাকুরীর জায়গায় যথেষ্ট সময়ানুবর্তীতা মেনে সিরিয়াসলি কাজ করে যায় কেউ হয়তো তার কাজকে অতি আগ্রহ ভাবে। কেউ কেউ ভাবে নিজেকে জাহির করা বা নাম ফাটানোর জন্যেই এত কাজে সিরিয়াস। তখন কাজে কর্মে সিনসিয়ার পরিপাটি ব্যক্তিটিরও বিস্ময় প্রকাশ করা ছাড়া আর পথ থাকে না। কারণ এ সমাজের অনেক মানুষ ভাল কাজের মানুষের মাঝে খুতঁ বের করবেই। প্রশংসা তারা করতে জানে না। কারণ তারা অনেকেই বেশ ফাঁকিবাজ। তারা ভাবে ফাঁকিবাজি করে যদি বাজিমাত করা যায় তবে এত সিনসিয়ার হওয়ার দরকার কি! তবে একটা কথা সবার জানা থাকা উচিত যে একজন সিরিয়াস, সিনসিয়ার, কাজ করার মানুষের জয় একদিন হবেই যে যত সমালোচনাই করুক। কারণ জীবনে উন্নতির পিছনে সিনসিয়ারিটির কোন বিকল্প নেই।