বেড়েই চলেছে মাছ-মাংসের দাম
স্টাফ রিপোর্টার:
ঈদের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসেও মাছ ও মাংসের বাজারে পণ্যের দাম উর্ধ্বমুখী। আরও এক ধাপ বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। কোনো কোনো বাজারে গরুর মাংসে কেজিতে ৫০ টাকা কমলেও অন্যান্য পণ্যের দাম অপরিবর্তিতই রয়েছে। আপত্তি থাকলেও বিক্রেতাদের অজুহাত আর গোড়ামির বিপরীতে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা।
শুক্রবার (১৩ মে) সকালে রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর ও ধানমণ্ডি এলাকার কয়েকটি মাছ ও মাংসের বাজার ঘুরে বাজার দরের এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, ঈদের আগে আকাশচুম্বী পর্যায়ে পৌঁছানো পণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এক ধাপ বেড়েছে ব্রয়লাম মুরগির দাম। মাছের বাজারেও বেড়েছে বিভিন্ন মাছের দাম।
মাংসের বাজার
ঈদের আগে ৭০০ টাকার ঘরে পৌঁছানো গরুর মাংসের দাম কোনো কোনো বাজারে কিছুটা কমেছে। বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা কেজি দরে। কেজিতে ১০০ টাকা কমে খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা দরে।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শুক্রবার গরুর মাংসের চাহিদা বেশি থাকে। ফলে বুধবার ও বৃহস্পতিবার গরুর দামও বেড়ে যায়। আবার গরুর মাংসের পাইকারি বাজারেও শুক্রবার ভোরে মাংসের দাম বেশি থাকে।
তবে এ বিষয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। রাজধানীর ধানমণ্ডি এলাকার বাসিন্দা আইনুল ইসলাম বলেন, ‘চাহিদা বাড়লে, জোগান বাড়বে। জোগান বাড়লে দাম কমবে। অথচ আমাদের এখানে উলটো চিত্র৷ চাহিদার সঙ্গে দাম বাড়ে। আমরা জিম্মি হয়ে পড়েছি। এ বিষয়গুলো যাদের দেখার কথা, তাও নির্বাক।’
গত সপ্তাহে আবারও কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। রাজধানীর বাজারে এ সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে।
পাইকারি বাজারের অজুহাত দেখিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টা খুচরা ব্যবসায়ীদের। তবে বিষয়টি দিন দিন অসহনীয় হয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।
মিরপুর-১ নম্বর মাজার রোড এলাকার বাসিন্দা সিমা বেগম বলেন, ‘গরুর মাংস শেষ কবে কিনে খাইছি মনে নাই। সত্যি বলতে, এত টাকায় মাংস কেনার সাধ্য নাই। বাধ্য হয়ে ব্রয়লার কিনি। সেটাও দিন দিন দাম বাড়ে৷ অসহ্য হয়ে যাচ্ছি।’
অপরিবর্তিত আছে লেয়ার ও কক মুরগীর দাম। কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকা কেজি করে। আর লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা দরে।
মাছের বাজার
ঈদের ছুটি শেষে নগরে নাগরিকরা ফিরেছেন। বেড়েছে মাছের চাহিদা। আর সেই চাহিদাকে অতি মুনাফায় পরিণত করতে ব্যবসায়ীরা বাড়িয়েছেন মাছের দাম। রয়েছে নানা অজুহাতও।
বাজার ভেদে রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে। কাতল ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, নলা মাছ ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা, তেলাপিয়া মাছ ১৮০ থেকে ২২০ টাকা, পাঙ্গাশ মাছ ১৪০ থেকে ৩০০ টাকা, শিং মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে৷
আকারভেদে চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ১২০০ টাকায়, কাচকি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ও পাবদা ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা দরে।
নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে বাজারে এসেছে ইলিশ। ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে এক হাজার টাকা কেজি দরে। ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ১২০০ টাকা। এক কেজি আকারের ইলিশ প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকায়।
মোহাম্মদপুরের শিয়া মসজিদ বাজারের মাছ ব্যবসায়ী পাভেল হোসেন বলেন, ‘ছুটির দিনে আর বিশেষ দিনে ঘাটে (ঢাকার সোয়ারি ঘাট) মাছের দাম বেশি থাকে। বেশি দামে কেনা জিনিস বেশি দামেই বিক্রি করতে হয়।’
মাছ বাজারের এমন চিত্র ভাবিয়ে তুলছেন ক্রেতাদের। শুক্রবার সকালে বাজারটিতে মাছ কিনতে এসে ফিরে যাওয়ার পথে ক্রেতা হিমেল হাসান বলেন, ‘প্রচুর দাম। এত দামে কেনা যায় না। কাস্টমার বেশি দেখলে তাদের দাম আরও বেড়ে যায়। ইলিশের মৌসুমে ইলিশের এত দাম হয়?’
চিত্রদেশ ডটকম//এফটি//