প্রধান সংবাদসারাদেশ

বেনাপোল দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য পণ্য আমদানি-রফতানি বন্ধ

বেনাপোল প্রতিনিধি:

ভারত-বাংলাদেশ উভয় দেশের সিএন্ডএফ এজেন্টদের আমদানি-রফতানি কাজে যাতায়াতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাধা দেওয়ায় দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল-পেট্রাপোল দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানি আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। বিএসএফ এর কড়াকড়িতে ভারতীয় সিএন্ডএফ কর্মচারিরা যেমন বেনাপোল চেকপোস্টে প্রবেশ করতে পারেনি তেমনি বাংলাদেশ সিএন্ডএফ কর্মচারিরাও ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে ঢুকতে পারেনি। ফলে উভয় বন্দরে কোন ট্রাক পণ্য নিয়ে আসতে ও যেতেও পারেনি। উভয় দেশে প্রবেশের অপেক্ষায় পণ্য বোঝাই কয়েক হাজার ট্রাক আটকা পড়ে আছে। এর মধ্যে পঁচনশীল পণ্যও রয়েছে। তবে কাস্টমসের কর্মকর্তারা আমদানি-রফতানি সচল করতে ভারতীয় পেট্রাপোল বন্দরের কাস্টমস কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে কাস্টমসের কর্মকর্তারা।

বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান, দ্রুত আমদানি-রফতানির সুবিধার্থে দুই দেশের সিএন্ডএফ স্টাফরা কাগজপত্র প্রস্তুত করতে বেনাপোল ও পেট্রাপোল বন্দরে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের দেওয়া পরিচয় পত্রের মাধ্যমে যাতায়াত করে থাকেন। গতকাল মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশের সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ গন কাগজপত্র নিয়ে ভারতে প্রবেশ করতে চাইলে বিএসএফ বাধা দেয়, বিএসএফ বলছে এভাবে প্রবেশ করা যাবে না, পাসপোর্ট নিয়ে প্রবেশ করতে হবে। স্টাফ নেতা সাজেদুর আরও বলেন, সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফরা যদি কাগজপত্র আদান প্রদান করতে না পারে মালামাল ছাড়ের ক্ষেত্রে জটিলতা বাড়বে, এর ফলে ব্যবসা বাণিজ্য মুখ থুবড়ে পড়বে। এই কাগজ পত্র পেয়ে উভয় দেশে আইজিএম খোলা হয় তারপর মালামাল দুই দেশে প্রবেশ করে। কিন্তু হঠাৎ করে ভারতীয় বিএসএফ সদস্যরা স্টাফদের বন্দরে যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

এদিকে আমদানি-রফতানি সচল করতে বুধবার (২৬/০২/২০২০ ইং) তারিখ দুপুরের দিকে বেনাপোল চেকপোস্ট বন্দর টার্মিনাল মিলনায়তনে উভয় দেশের সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশন ও কর্মচারি এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ প্রশাসনের সাথে এক বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃবৃন্দ জানান, ভারতীয় বিএসএফ তাদের জানিয়েছে মঙ্গলবার সকালে একটি আদেশ এসেছে যাতায়াত বন্ধে, এ বিষয়টি তাদের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আদেশ। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত বিএসএফ কাউকে যেতে দিচ্ছে না। এ অবস্থায় এ পথে আমদানি-রফতানি করা সম্ভব নয়। আমরা বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

আমদানি-রফতানির কাজ দেখভালের দায়িত্ব ভারতের কাস্টমস কর্তৃপক্ষের। কিন্তুু তারাও এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। বৈঠকে বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার, বেনাপোল কাস্টমস এর সহকারি কমিশনার উত্তম চাকমা, বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি মামুন খান, বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন, সাবেক সভাপতি শামছুর রহমান, সহসভাপতি খায়রুজ্জামান মধু, কামাল উদ্দিন শিমুল, যুগ্ম সম্পাদক জামাল হোসেন, কাস্টমস সম্পাদক নাসির উদ্দিন, বন্দর সম্পাদক শাহাবুদ্দিন, সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুজিবর রহমান, সাধারন সম্পাদক সাজেদুর রহমান, ভারতের পেট্রাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সভাপতি রতন কুমার বিশ্বাস, সাধারন সম্পাদক কার্ত্তিক চক্রবর্তী, সাবেক সভাপতি বিশ্বজিৎ ঘোষ, বনগাঁ মোটর ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক দিলীপ দাস, মটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক প্রভাস কুমার প্রমুখ।

বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার বলেন, দীর্ঘদিনের যাতায়াতের বিষয়টি কোনো আলোচনা বা সময় না দিয়ে ভারতীয় বিএসএফের এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া সঠিক হয়নি। এ কারণে এ পথে দু‘দিন আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। বেনাপোল-পেট্রাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টের সাথে বৈঠক হয়েছে। তারা বিএসএফের সাথে কথা বলে দ্রুত আমদানি-রফতানি সচল করার চেস্টা করবেন। আমরাও পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বাণিজ্য সচল করার চেষ্টা করছি।

 

চিত্রদেশ//এফ টি//

Related Articles

Back to top button