চিত্রদেশ

পরীমণির লিখিত অভিযোগ গ্রহণ, মামলা প্রক্রিয়াধীন

স্টাফ রিপোর্টার:
ঢাকাই সিনেমার অভিনেত্রী পরীমণিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় পরীমণির অভিযোগ লিখিত আকারে গ্রহণ করেছে পুলিশ। লিখিত অভিযোগটি তিনি রুপনগর থানা ও সাভার থানায় করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো মামলা দায়ের হয়নি।

সোমবার (১৪ জুন) সকালে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আ স ম মাহতাব উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, পরীমণি রুপনগর থানা ও সাভার থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। ঘটনাটি যেহেতু সাভার থানার অন্তর্গত সেহেতু রুপনগরের অভিযোগটি আমরা সাভারে পাঠিয়ে দিয়েছি। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বলে জানান তিনি।

এর আগে রোববার (১৩ জুন) প্রথমে ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাসে অভিযোগ তোলার পর রাতে সাংবাদিকদের বনানীর বাসায় ডেকে ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরেন তিনি।

নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাসে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ তুলে তিনি লেখেন, ‘বরাবর, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমি পরীমণি। এই দেশের একজন বাধ্যগত নাগরিক। আমার পেশা চলচ্চিত্র। আমি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমাকে রেপ এবং হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।’

‘এই বিচার কই চাইবো আমি? কোথায় চাইবো? কে করবে সঠিক বিচার? আমি খুঁজে পাইনি চার দিন ধরে। থানা থেকে শুরু করে আমাদের চলচ্চিত্র বন্ধু বেনজীর আহমেদ আইজিপি স্যার! আমি কাউকে পাই না মা। যাদের পেয়েছি সবাই শুধু ঘটনার বিস্তারিত জেনে, দেখছি বলে চুপ হয়ে যায়!’

পরীমণি আরও লেখেন, ‘আমি মেয়ে, আমি নায়িকা, তার আগে আমি মানুষ। আমি চুপ করে থাকতে পারি না। আজ আমার সাথে যা হয়েছে তা যদি আমি কেবল মেয়ে বলে, লোকে কী বলবে এই গিলানো বাক্য মেনে নিয়ে চুপ হয়ে যাই, তাহলে অনেকের মতো (যাদের অনেক নাম এক্ষুণি মনে পড়ে গেল) তাদের মতো আমিও কেবল তাদের দল ভারী করতে চলেছি হয়তো। আফসোস ছাড়া কারোর কি করার থাকবে তখন! আমি তাদের মতো চুপ কি করে থাকতে পারি মা? আমি তো আপনাকে দেখিনি চুপ থেকে কোনো অন্যায় মেনে নিতে!’

‘আমার মা যখন মারা যান তখন আমার বয়স আড়াই বছর। এতদিনে কখনো আমার এক মুহূর্ত মাকে খুব দরকার এখন, মনে হয়নি এটা। আজ মনে হচ্ছে, ভীষণ রকম মনে হচ্ছে মাকে দরকার, একটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরার জন্য দরকার। আমার আপনাকে দরকার মা। আমার এখন বেঁচে থাকার জন্য আপনাকে দরকার মা। মা আমি বাচঁতে চাই। আমাকে বাঁচিয়ে নাও মা।’

পরীমণির স্ট্যাটাস সম্পর্কে জানতে চাইলে পুলিশ সদরদফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মো. সোহেল রানা বলেছিলেন, ‘তিনি অবশ্যই ন্যায়বিচার পাবেন। আমরা তার ন্যায়বিচারের জন্য কাজ করব। তবে, কেন তিনি আইজিপি স্যারের নাম উল্লেখ করেছেন তা আমি বুঝতে পারছি না। আমরা নিশ্চিত, তিনি মোটেই আইজিপি স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। আইজিপি স্যার সর্বদা নারী ও শিশুদের অধিকারের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল।’

এরপর রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার বনানীর বাসায় সাংবাদিকদের কাছে ‘নির্যাতনকারীদের’ নাম-পরিচয় প্রকাশ করেন পরীমণি।

তিনি দুজনের নাম প্রকাশ করে জানান, তাদের একজন রাজধানীর উত্তরা ক্লাব লিমিটেডের সাবেক প্রেসিডেন্ট নাছির ইউ. মাহমুদ এবং অন্যজন তার (পরীমণি) কস্টিউম ডিজাইনার জেমীর স্কুলবন্ধু অমি নামের এক ব্যবসায়ী।

পরীমণি বলেন, ‘গত বুধবার (৯ জুন) রাত ১২টায় আমাকে বিরুলিয়ায় নাছির ইউ. মাহমুদের কাছে নিয়ে যায় অমি। সেসময় নাছির ইউ. মাহমুদ নিজেকে ঢাকা বোট ক্লাবের সভাপতি হিসেবে পরিচয় দেন। সেখানে নাছির ইউ. মাহমুদ আমাকে মদ খেতে অফার করেন। আমি রাজি না হলে আমাকে জোর করে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে আমাকে চড়-থাপ্পড় মারেন। তারপর আমাকে নির্যাতন ও হত্যার চেষ্টা করেন। অমিও এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত।’

চিত্রদেশ//এফটি//

 

 

Related Articles

Back to top button