ঢাকামুখী মানুষের স্রোত নিয়ে শঙ্কায় স্বাস্থ্যের ডিজি
স্টাফ রিপোর্টার:
করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির মধ্যেই দেশজুড়ে উদযাপিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল আজহা। এ উপলক্ষে গত ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিল করে সরকার। ঈদের আগের দিন ২০ জুলাই পর্যন্ত প্রায় ৮৩ লাখ মানুষ ঢাকা ছাড়ে। ঢাকায় ফেরার জন্য হাতে আছে শুধু আজকের দিনটি (২২ জুলাই)। একদিনেই ঢাকা ফিরতে হবে বিপুলসংখ্যক মানুষকে। ঢাকামুখী মানুষের এ স্রোত সংক্রমণ পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটাবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম।
বুধবার (২১ জুলাই) তিনি একথা বলেন, ‘ঈদের পরদিনই সবার ছুটি শেষ হচ্ছে। সবাই মিলে একসঙ্গে কর্মস্থলে ফিরতে গেলে ঝুঁকি তৈরি হবে।’
এদিকে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানিয়েছেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১৫ থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত প্রায় ৮৩ লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন।
আমাদের হাসপাতালগুলোতে বিপুলসংখ্যক রোগী চিকিৎসাধীন। আইসিইউসহ সাধারণ শয্যাগুলোও পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এভাবে রোগী বাড়তে থাকলে কোনো প্রস্তুতিই কাজে আসবে না
অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম, মহাপরিচালক (ডিজি), স্বাস্থ্য অধিদফতর
পরিসংখ্যান তুলে ধরে মন্ত্রী জানান, আজ (বুধবার) হাতে এলো ১৫ থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত ঢাকা ছেড়ে যাওয়া সিমের হিসাব। এই ক’দিনে ঢাকা ছেড়েছে ৮২ লাখ ৬৭ হাজার ৫৬২টি সিম।
এ বিষয়ে খুরশীদ আলম বলেন, ‘বিষয়টা নিয়ে আমরাও ভাবছি। এটি আসলে অনেক চিন্তার বিষয়। কিন্তু কী আর করব বলেন। জানি না ঈদপরবর্তীতে কেমন পরিস্থিতি তৈরি হয়?’
স্বাস্থ্য মহাপরিচালক বলেন, ‘ঈদের আগে আমরা সরকারকে পরামর্শ দিয়েছিলাম কারফিউ দিয়ে দেওয়ার। কিন্তু এটি তো হয়নি। এ মুহূর্তে প্রয়োজন হলো ছুটি দু-একদিন বাড়িয়ে দেওয়া। কিন্তু কী হয় বলতে পারছি না।’
ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে অসংখ্য মানুষ গ্রামে গেছেন। সবাই সুস্থতার সঙ্গে ঈদ উদযাপন করুন। তবে মনে রাখবেন, ঈদ যেন বিষাদে পরিণত না হয়
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করছি। অন্যান্য হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত থাকতে বলেছি। আজ (বুধবার) কোনো হাসপাতালে যাওয়া হয়নি, অন্য একটা কাজে ব্যস্ত ছিলাম। তবে কাল (বৃহস্পতিবার) বা পরশু (শুক্রবার) রাজধানীর সবগুলো হাসপাতালে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।’
পবিত্র ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে মানুষের ‘ঈদ আনন্দ’ যেন বেদনায় পরিণত না হয়, সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন স্বাস্থ্যের মহাপরিচালক।
তিনি বলেন, ‘ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে অসংখ্য মানুষ গ্রামে গেছেন। সবাই সুস্থতার সঙ্গে ঈদ উদযাপন করুন। তবে মনে রাখবেন, ঈদ যেন বিষাদে পরিণত না হয়।’
স্বাস্থ্য মহাপরিচালক বলেন, ‘দেশের করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি দিনদিন খারাপ হচ্ছে। হাসপাতালের শয্যাগুলো রোগীতে পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় নিজেকে এবং পরিবারকে সুরক্ষিত রাখতে সতর্কতার বিকল্প নেই। সবাইকে সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক পরতে হবে।’
বাসেই ঢাকা ছেড়েছেন প্রায় ২৫ লাখ মানুষ
এদিকে, পরিবহন মালিক সমিতি বলছে, ঢাকা থেকে বাসে নিজ নিজ গন্তব্যে গেছেন প্রায় ২৫ লাখ মানুষ। তার বাইরে ট্রেনে ও লঞ্চে যাত্রীরা গেছেন। সবকিছু পর্যবেক্ষণ করে এটা বলা যায় যে, এবার অন্তত পৌনে এক কোটি লোক ঢাকা ছেড়েছেন।
চিত্রদশ//এফটি//