প্রধান সংবাদ

জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় সতর্ক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী

স্টাফ রিপোর্টার:
আসন্ন ঈদকে আজহাকে টার্গেট করে জঙ্গি হামলার পরিকল্পনার কথা জানতে পেরে দেশব্যাপী কড়া সতর্কাবস্থায় রয়েছে পুলিশ। এমতাবস্থায় পুলিশের সকল ইউনিটকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকতে নির্দেশ দিয়েছে সদর দপ্তর।

বিমানবন্দর, পুলিশের স্থাপনা, দূতাবাস এবং সব উপাসনালয়ের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করতে সারা দেশের পুলিশের ইউনিটগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে সংস্থাটি। এ ছাড়া শহর ও শহরতলি এলাকার ভাড়াটেদের তথ্য সংগ্রহ এবং স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং মাদ্রাসা ও এতিমখানার ওপর নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, দেশে জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে দুর্বল। ঈদের আগে তারা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করতে পারে। যদিও বড় ধরনের হামলার সক্ষমতা তাদের নেই। তবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।

জানা গেছে, দুইদিন আগে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পুলিশের সকল ইউনিটে পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, করোনার সুযোগ কাজে লাগিয়ে নতুন করে সংগঠিত হচ্ছে জঙ্গিরা। আসন্ন ঈদের আগে কিংবা পড়ে তারা বড় ধরনের হামলা চালাতে পারে।

পুলিশ সদর দপ্তরের একটি সূত্র জানায়, পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) কথিত ‘বেঙ্গল উলায়াত’ ঘোষণার উদ্যোগ নিয়েছে বলে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে। আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ঘটনাপ্রবাহ অনুযায়ী সাধারণত কোনো সন্ত্রাসী হামলার মাধ্যমেই উলায়াত ঘোষণা করা হয়। তাই আইএস সংগঠনগুলোর সদস্যরা বোমা হামলার মাধ্যমে হত্যাকাণ্ড সংঘটনসহ বিভিন্ন নাশকতামূলক বা ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড ঘটাতে পারে।

জঙ্গি হামলা মোকাবিলায় সতর্ক অবস্থান নিতে ১৯ জুলাই পুলিশের সারা দেশের ইউনিটপ্রধানদের সতর্ক থাকতে চিঠি পাঠিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। চিঠিতে বলা হয়েছে, সকাল ৬টা থেকে ৮টা বা সন্ধ্যা ৭টা থেকে ১০টার মধ্যে হামলা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তু হিসেবে পুলিশ সদস্য, পুলিশের স্থাপনা ও যানবাহন, বিমানবন্দর, দূতাবাস, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও মিয়ানমার বা এসব দেশের স্থাপনা ও ব্যক্তি এবং শিয়া ও আহমদিয়া মসজিদ, মাজারকেন্দ্রিক মসজিদ, মন্দির, চার্চ ও প্যাগোডাকে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, হামলাকারীর সম্ভাব্য বয়স হবে ১৫ থেকে ৩০ বছর। হাতে তৈরি সময় কিংবা দূরনিয়ন্ত্রিত গ্রেনেড, বোমা, ক্ষুদ্রাস্ত্র কিংবা ছুরি-চাপাতি দিয়ে হামলা হতে পারে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, জঙ্গিরা পুলিশের পোশাক পরে তাদের স্থাপনায় প্রবেশ করতে পারে। তাই পোশাক পরা থাকলেও পুলিশ সদস্যদের পরিচয় নিশ্চিত হতে হবে।

এই চিঠি পাঠানোর পাঁচ দিনের মাথায় শুক্রবার রাত নয়টায় রাজধানীর পল্টন মোড়ে পুলিশের একটি চেকপোস্টের পাশে ‘বোমা বিস্ফোরণের’ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পল্টন থানায় বিস্ফোরক আইনে হওয়া মামলায় একে হাতে তৈরি বোমা বা আইইডি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে থেকে চার ইঞ্চি ব্যাসের জিআই পাইপের কনটেইনার, সার্কিটের অংশ, লালা ও নীল রঙের তারের অংশ লোহার বিয়ারিং বল এবং ৯ ভল্টের ব্যাটারির অংশবিশেষ উদ্ধার করা হয়েছে। এই বোমার সঙ্গে গত বছর ঢাকায় পুলিশের ওপর হওয়া হামলায় ব্যবহৃত বোমার মিল রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সে সময় হওয়া পাঁচটি বোমা হামলার চারটিই ছিল দূরনিয়ন্ত্রিত। পল্টনের বোমাটিও দূরনিয়ন্ত্রিত ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরদিন শনিবার রাত সোয়া ১০টার দিকে বঙ্গবন্ধু স্কয়ারের পাশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে গ্রেনেডসদৃশ আরেকটি বস্তু। কালো টেপে মোড়ানো ওই বস্তুতে কোনো বিস্ফোরক পাওয়া যায়নি। পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল এর ভেতর শুধু বালু পেয়েছে।

চিত্রদেশ //এস//

Related Articles

Back to top button