গল্প-কবিতা

কানিজ কাদীরের ভ্রমণ কাহিনী ‘মাদুরাই’-৬ষ্ঠ পর্ব

খাওয়া শেষ করে আসার পথে আমি শুধু কোথা থেকে বাংলাদেশে ফোন করতে পারবো তাই খুজঁছিলাম। পাশের একটা দোকানে আইএসডি ফোন লেখা দেখে ঢুকলাম। প্রথমে আমার হাসব্যান্ডকে ফোন করার চেষ্টা করলাম। কিন্তু রিং হলো না। পরে ভাবলাম এনায়েত স্যারকে একটু জানানো দরকার। ওনার নাম্বারে ফোন দিলাম। রিং হলো।কিন্তু উনি ফোন ধরলেন না। ফোনের দোকানে ৬ রুপি দিলাম অযথা। সোজা হাঁটা শুরু করলাম। সব দোকান পাট বন্ধ। রুমে এসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলাম। অস্থিরতা যাচ্ছিল না ফোন না করা পর্যন্ত। খুব খারাপ লাগছিল প্রতিটা মুহুূর্ত আম্মার কথা ভেবে ।ভিতর থেকে ডুকরে ডুকরে কান্না আসছিল আম্মার বলা নানা কথাগুলো মনে করে। মনে হচ্ছিল আম্মার কণ্ঠ পরিষ্কারভাবে আমার মনের ভেতর, হৃদয়ের ভেতরে এক এক করে অনুরনিত হচ্ছিল। আমি আম্মা, আম্মা বলে কেদেঁ উঠছিলাম ভিতরে ভিতরে। মনে হচ্ছিল আমার আম্মাকে আর কোন দিন ছুতেঁ পারবো না কেন। কোথায় চলে গেল আমার ‘মা’। সেই ছোট বেলার কথা বার বার মনে পড়তে লাগলো। আমি নিজেকে যেন সংবরণ করতে পারছিলাম না। এতদূর এসেছি। প্রায় একমাস থাকতে হবে এখানে। নিজেকে শক্ত করতেই হবে। নিজের মনকে নিজেই শান্ত করলাম, বুঝ দিলাম।

স্বন্ধ্যা হয়ে গেল।আমি আবার বের হলাম।ফোনের খোঁজে। এবার ডান দিকের রাস্তা ধরে যেতে লাগলাম। ছোট ছোট দোকান চোখে পড়লো। একটা দোকানে একজন মহিলা বসা।মহিলাটা বেশ কালো।কিন্তু চেহারা বেশ মিষ্টি । এখানে এসে একটা জিনিস খেয়াল করলাম। এখানকার মেয়েরা বেশিরভাগই কালো।এরা বেশ লম্বাও। অনেক দোকানেই মহিলারা বসে কাজ করছে। দোকানী মহিলাটি হরেক রকম বিস্কিুট ও নানা ছোট-খাট জিনিস দিয়ে দোকান সাজিয়েছে। দেখলাম ওখানে কয়েকটা মেয়ে এসে মোবাইলে টাকা ফ্লেক্সিলোড করছে।আমি মহিলাটিকে ইংরেজীতে বললাম ক্যান আই এক্টিভেট হিয়ার মাই সিম (ইন্ডিয়ান), আই এ্যাম ফ্রম বাংলাদেশ। মহিলা ইংরেজী বেশি বুঝবে না বুঝেও বললাম। মহিলা আমার কথায় সামান্য বুঝতে পেরে সে আমার কাছে সিমটা চাইল।সে সেটা তার মোবাইলে ভরে চেক করে বললো ‘হ্যা’ এক্টিভেট করা যাবে।১০ রুপি ব্যালেন্স আছে।’ দু’শ তিরিশ রুপি দিলে সে আমার মোবাইল আটাশ দিনের জন্য আনলিমিটেড ইউজ এর জন্য এক্টিভেট করে দিবে।’ আমি ২৩০ রুপি দিয়ে ফোন এক্টিভেট করলাম।  (চলবে)

 

লেখক: কানিজ কাদীর

Related Articles

Back to top button