গল্প-কবিতা

কানিজ কাদীরের ভ্রমণ কাহিনি-‘মাদুরাই'(পর্ব-১৭)

৪-১১-২০১৩ তারিখ রোববার। আমরা বাইরে কোথাও বেড়াতে যাবার প্লান আগে থেকে করে রাখি। সেই অনুযায়ী সকালের নাস্তা সেরে নেই। তারপর আমরা অটো নিয়ে যাই তিরিমালাকার নামে এক রাজার প্রাসাদ দেখতে। বিশাল বড় বড় পিলারের প্রাসাদ। আর্কিটেকচারও খুব সুন্দর। কিন্তু ভিতরে বিভিন্ন মূর্তি ছাড়া দেখার আর তেমন কিছু নাই।আর আছে পাথরের উপর খোদাই করা কিছু হাতের লেখা। রাজার সিংহাসনটা প্রাসাদের সামনেই চারিদিকে ঘেরাও করে সংরক্ষণ করা হয়েছে। আমরা ঘুরে ঘুরে সব দেখলাম । কিছু ছবিও তুললাম। ওখান থেকে বের হয়ে গেলাম গান্ধী মিউজিয়ামে । গান্ধীর জীবনের ইতিহাস সমৃদ্ধ মিউজিয়াম। ঘুরে ঘুরে দেখলাম। অনেক কিছু জানলাম। এখান থেকে বের হয়ে আমরা সোজা অন্নপূর্ণা টাওয়ারে এলাম। এখানেই দুপুরে খাবার খেলাম। কারণ আজ হোস্টেলের খাবার বন্ধ। রাতেও অন্নপূর্ণাতেই খেলাম।

এখানে অনেক দেশের ছেলেমেয়েরা এসেছে ট্রেনিং নিতে। ইন্দোনেশিয়ার একটা মেয়ের সাথে আমার ওটিতে পরিচয় হয়। ওর নাম মার্লিইয়ান্টি। ওরা মুসলমান । ওরা শার্ট, টাইটসও পরে আবার মাথায় খুব সুন্দর একটা হিজাব পরে। দেখতে বেশ ভালো লাগে। পেডিয়াট্রিক(শিশু) ওটি তে ওর কাজ। আমারও পেডিয়াট্রিক ওটিতে কাজ। তাই ওর সাথে প্রায় প্রতিদিনই দেখা হয়। কিছু কথাও হয়। ও আমাকে নানা রকমের প্রশ্ন করে । আমিও নানা কিছু জানতে চাই।

২৫ তারিখ দুপুরে মার্লিইয়ান্টি আমাকে ইনভাইট করে। মার্লিইয়ান্টি একটা আয়োজন করেছে খাবার দাবারের। ওর ট্রেনিং প্রায় শেষ। মার্লিইয়ান্টির সাথে আরও দুজন ইন্দােনেশিয়ান মেয়ে আছে। ওরা অন্য ডিপার্টম্যান্টে ট্রেনিং করেছে। ও এমন ভাবে আমাকে ইনভাইট করে যে আমি ওর ইনভাইটেশন গ্রহণ না করে পারি না।’আই এম ইনভাইটিং ইউ অন টুয়েন্টি সেভেন্ত নভেম্বর ,এট ফাইভ পিএম এট আউট প্যাশেন্ট ব্লক। আই হ্যাভ এরেন্জন্ড সাম এনটারটেইন্ট ম্যান্ট বিকজ মাই ট্রেনিং ইজ এট দা এন্ড। ইফ ইউ কাম আই উইল বি ভেরি হ্যাপী ।” ওর ইনভাইটেশন পেয়ে ২৬ তারিখ একটা ছোট ইমিটেশন সেট(গলার লকেট ও কানের দুল) কিনলাম মার্কেটে যেয়ে। ঐ দিনই মার্কেটে বড় ভাইজানের (বড় ভাইয়ের) সুয়েটার অনেক খুজেঁ খুজেঁ কিনলাম। কারণ সুয়েটারের সাইজ, ডিজাইন, রং কোনটাই পছন্দ হচ্ছিল না। অবশেষে একটা দোকানে সুয়েটার পেলাম যেটা আমার বেশ পছন্দ হলো। রকিবুল রাফিজারও পছন্দ হলো। সুয়েটার কিনে আমি অনেক শান্তি পেলাম। কারণ বড় ভাইজান আমাকে সুয়েটারের কথা বলে দিয়েছিল।

২৭ তারিখ বিকালে হাসপাতাল ইনপেশেন্ট ব্লক থেকেই আউটপেশেন্ট ব্লক এর তিন তলায় পেডিয়াট্রিক ইউনিট এ গেলাম। এখানে একটা জিনিস খুব আশ্চর্য লাগছে, যে কোন রুমের সামনে ডাক্তারদের কোন সাইনবোর্ড নাই।অথচ প্রত্যেকেই সেই বিকাল পর্যন্ত যার যার কাজ ঠিক করে যাচ্ছে। ডাক্তারদের রুগী দেখা ছাড়া নির্দিষ্ট কোন বসার রুমও নাই। (চলবে)

 

লেখক: কানিজ কাদীর

 

Related Articles

Back to top button