লাইফস্টাইল

করোনাভাইরাস: বাবা-মায়ের যা জানা জরুরি

লাইফস্টাইল ডেস্ক:

করোনাভাইরাস নিয়ে এখন সর্বত্রই আলোচনা-সমালোচনা। বিশ্বের সেরা সব দেশে ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাস প্রতিরোধে হিমশিম খাচ্ছেন কর্তাব্যক্তিরা। এ অবস্থায় সন্তানদের সুরক্ষায় মা–বাবার জন্য কিছু প্রশ্নের জবাব ও করণীয় ঠিক করেছে জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ। এর মধ্যে শুরুতে জানিয়ে দেয়া হয়েছে নভেল করোনাভাইরাস আসলে কী।

‘নভেল’ করোনাভাইরাস কী?

করোনাভাইরাস হচ্ছে করোনাভাইরাস গোত্রের একটি নতুন সদস্য। চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে এটি প্রথম শনাক্ত হয়।

অনলাইনে অনেক তথ্য, কী করা উচিত?

অনলাইনে করোনাভাইরাস সম্পর্কে অনেক মিথ ও ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে। কোভিড-১৯ কীভাবে ছড়ায়, কীভাবে নিরাপদ থাকতে হয়, ভাইরাসটির সঙ্গে সংস্পর্শ ঘটার দুশ্চিন্তা থাকলে কী করা উচিত সে সম্পর্কে ভুলভাল তথ্যের অভাব নেই। আর এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে সতর্ক থাকতে হবে আপনি কোথা থেকে তথ্য ও পরামর্শ নিচ্ছেন।

যেভাবে ছড়ায়: ভাইরাসটি আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি–কাশির ফোঁটা থেকে, ভাইরাসটি দিয়ে দূষিত যেকোনো বস্তুর উপরিভাগ থেকে ছড়ায়। যেকোনো বস্তুর ওপর ভাইরাসটি কয়েক ঘণ্টা টিকে থাকতে পারে। তবে সাধারণ জীবাণুনাশকও ভাইরাসটিকে মারতে পারে।

লক্ষণ: জ্বর, কাশি, ঘন ঘন নিশ্বাস নেয়া। পরিস্থিতি গুরুতর হলে সংক্রমণের কারণে নিউমোনিয়া ও প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট হয়। ভাইরাসটি খুব কম ক্ষেত্রেই ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। অসুস্থতার লক্ষণগুলো ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু ও ঠান্ডা লাগার মতো। এ কারণে কোভিড-১৯ হয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে। সুরক্ষার বিষয়গুলো একই, এটা মনে রাখা খুব জরুরি। ঘন ঘন হাত ধুতে হবে, হাঁচি-কাশির সময় নাক–মুখ কুনুই দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে বা টিস্যু ব্যবহার করতে হবে। টিস্যুটি পরে ঢাকনাসহ বিনে ফেলতে হবে। ফ্লুর টিকা রয়েছে। তাই নিজের এবং শিশুদের টিকা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করুন।

সংক্রমণ ঝুঁকি এড়ানোর উপায়: সংক্রমণ থেকে বাঁচতে আপনি নিজের জন্য এবং আপনার পরিবারের জন্য চারটি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে পারেন। সাবান ও পানি বা অ্যালকোহলযুক্ত হ্যান্ড রাব দিয়ে ঘন ঘন হাত ধোন। হাঁচি-কাশির সময় হাতের ভাঁজ করা কুনুই বা টিস্যু দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখুন। সঙ্গে সঙ্গে টিস্যু ময়লার বিনে ফেলে দিন। জ্বর বা ঠান্ডা লেগেছে ব্যক্তির কাছাকাছি যাবেন না। আপনি বা আপনার শিশুর জ্বর, কাশি বা শ্বাসকষ্ট হলে দ্রুত চিকিৎসা সেবা নিন।

শিশুদের কি কোভিড-১৯ হয়: এটা নতুন ধরনের ভাইরাস। তাই এটি সম্পর্কে এখনো অনেক কিছু জানা বাকি। শিশু বা অন্তঃসত্ত্বা নারীদের কীভাবে ক্ষতি করে, সে সম্পর্কে আরও জানতে হবে। এখন পর্যন্ত জানা গেছে, ভাইরাসটিতে যেকোনো বয়সের মানুষ আক্রান্ত হতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত শিশুদের আক্রান্তের খবর কম পাওয়া গেছে। কিছু ক্ষেত্রে ভাইরাসটি ভয়াবহ, বিশেষ করে বয়স্ক এবং আগে থেকে অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য।

অন্তঃসত্ত্বা নারীর মাধ্যমে গর্ভের সন্তানের কি করোনাভাইরাস হতে পারে?

এ ব্যাপারে এখনো যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি যে অন্তঃসত্ত্বা মায়ের মাধ্যমে গর্ভের সন্তান করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে কি না বা সম্ভাব্য কী ক্ষতি হতে পারে সন্তানের। বিষয়টি নিয়ে গবেষণা চলছে। তবে অন্তঃসত্ত্বা নারীদেরও অন্যদের মতো সতর্ক ব্যবস্থা নিতে হবে।

করোনাভাইরাস আক্রান্ত মা কি সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াতে পারেন?

যেসব মা আক্রান্ত এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় রয়েছেন এবং জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টের লক্ষণ রয়েছে, তাদের দ্রুত চিকিৎসাসেবা নিতে হবে এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের পরামর্শ মেনে চলতে হবে। মায়ের বুকের দুধের উপকারিতার বিষয়টি বিবেচনা করে এবং শ্বাসকষ্টজনিত অন্য ভাইরাস ছড়ানোর ক্ষেত্রে মায়ের দুধের তেমন কোনো ভূমিকা না থাকায় মা সন্তানকে দুধ খাওয়ানো অব্যাহত রাখতে পারেন। তবে এর আগে অবশ্যই তাঁকে সব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। লক্ষণ রয়েছে মায়েরাও দুধ খাওয়াতে পারবেন। তবে মাস্ক পরে, হাত ধুয়ে এবং সব ধরনের বস্তুর উপরিভাগ জীবাণুনাশক করার মতো সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

 

চিত্রদেশ//এফ//

Related Articles

Back to top button