এবারের বইমেলায় পারিজাত প্রকাশনী থেকে ৩০টির মতো বই আসছে: লিটু
বই জ্ঞানের বাহন, বই আলোর প্রতীক। মানুষের মননকে ঋদ্ধ করে বই। মনের অন্ধকার দূর করে মানুষকে সত্যের পথে ধাবিত করে বই। বইয়ের মাধ্যমে ঘরে বসেই পরিচয় ঘটে অচেনা বিশ্বের সাথে। মানুষের ঘুমন্ত হৃদয়কে জাগাতে পারে শুধু বই।
শুরু হয়েছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। এ মেলা লেখক, পাঠক এবং প্রকাশকদের প্রাণের মেলা। মেলাকে ঘিরে বাংলা একাডেমির মহাব্যস্ততা, নানান দিক সামলাতে হয়। বছরের ৯০% বই প্রকাশ হয় মেলাকে উপলক্ষ করে। ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে হাজার হাজার নতুন বই আসবে মেলায় যার অধিকাংশই নতুন লেখকদের। নতুন লেখকদের মাঝে দেখা যাবে প্রথম প্রেমে পড়ার মতো এক ধরনের চাপা উত্তেজনা।
বইমেলার নানান বিষয় নিয়ে’চিত্রদেশ’ এর সঙ্গে সম্প্রতি কথা হলো পারিজাত প্রকাশনীর প্রকাশক শওকত হোসেন লিটুর সঙ্গে। পাঠকদের জন্য তারই অংশবিশেষ তুলে ধরা হলো।
সাক্ষাতকার গ্রহণ করেছেন- লাবণ্য হক।
চিত্রদেশ: এবারের বইমেলায় পারিজাত প্রকাশনী থেকে এ পর্যন্ত কয়টি বই প্রকাশিত হয়েছে?
শওকত হোসেন লিটু: এবারের বইমেলায় ৩০টির মত বই বের হবে। এ পর্যন্ত ২০ টি বই প্রকাশিত হয়েছে। সব বিষয়ের নিয়ে বইগুলো বের হচ্ছে। তবে যেহেতু এবার মুজিব বর্ষ উদযাপন হচ্ছে তাই বঙ্গবন্ধু বিষয়ক বই প্রকাশিত হয়েছে ৪টি। বিশেষ করে একটি বইয়ের কথা না বললেই নয় সেটা হচ্ছে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের ৬৭২ পৃষ্ঠার একটি বই। নাম-‘বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু’। এছাড়াও রয়েছে শিশু-কিশোরদের ছড়ার বই। বরাবরের মত কবিতার বই একটু বেশিই বের হচ্ছে। এছাড়াও রয়েছে গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই। সব বিষয়ের উপরই মোটামুটি কিছু না কিছু বই রয়েছে।
চিত্রদেশ: ‘পারিজাত প্রকাশনী’ মূলত কোন ধরনের লেখকদের বই প্রকাশ করে থাকেন? কেন?
শওকত হোসেন লিটু: ‘পারিজাত প্রকাশনী ‘ সবসময় নতুন লেখকদের প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। কারণ নতুন লেখকদের লেখা পাঠকদের কাছে তুলে ধরার জন্য এই প্রয়াস। যেন ভবিষৎতে একজন হুমায়ূন আহমেদ বের হয়ে আসে। কেননা নতুন লেখকদের মধ্যেও অনেক অনেক ভালো লেখকও রয়েছেন। যারা বেশ ভালো লিখছে। আমাদের এখানে নিয়মিত এক লেখকের বই প্রকাশিত হয় নাম-হুমায়ুন কবীর হিমু। তার বই দ্বিতীয় প্রিন্টও হয়।
চিত্রদেশ: ‘পারিজাত প্রকাশনী ‘বই প্রকাশের ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন?
শওকত হোসেন লিটু: কোন নির্দ্দিষ্ট বিষয় নেই। ঐ যে বললাম, লেখা ভালো মানের হলেই হয়। যে লেখাগুলো পাঠকদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা থাকবে, পাঠকদের ভালো লাগবে সেই বিষয়টিকেই বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকি। এক কথায় বলতে গেলে ভালো পান্ডুলিপিকেই আমরা বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকি।
চিত্রদেশ: অনেক প্রকাশকের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তারা ভালো ভাবে পান্ডুলিপি না পড়েই বই ছাপে? সে বিষয়ে কিছু বলুন?
শওকত হোসেন লিটু: হ্যাঁ আছে । এমন অনেক প্রকাশকই হয়তো আছেন। বাংলা একাডেমির ৪০০ স্টলের মধ্যে হাতে গোণা ১০০ প্রকাশকের সম্পাদনা বিভাগ রয়েছে। আর বাকি ৩০০ প্রকাশকেরই এ বিভাগটি নেই। সেটা চ্যালেঞ্জ সহকারে বলা যায়।
চিত্রদেশ: সেক্ষেত্রে আপনাদের অবস্থা কী?
শওকত হোসেন লিটু: আমাদের প্রকাশনীর বই পড়ে পাঠকরা বলে যে, আপনাদের বইয়ের মধ্যে কোন ভুল পাই না। পারিজাত প্রকাশনীর একটা মান আছে। আমরা বাংলা একাডেমির বানান ফলো করি।
চিত্রদেশ: এবারের বইমেলায় বই বিক্রি কেমন হচ্ছে? পাঠকদের কাছে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
শওকত হোসেন লিটু: এবারের বইমেলায় আল্লাহর রহমতে আমাদের অবস্থা ভালো। ভালোই বিক্রি হচ্ছে। পাঠকদের কাছেও বেশ সাড়া পাচ্ছি।
চিত্রদেশ: বইমেলা সাবির্ক ব্যবস্থাপনা নিয়ে কিছু বলুন?
শওকত হোসেন লিটু: বইমেলার ব্যবস্থাপনা মোটেও ভালো হয়নি এবার। কর্তৃপক্ষ বাশঁ খুটি দিয়ে প্রবেশ পথেই সৌন্দর্য করেছে অথচ এখানে যে স্টলগুলো আছে সেটা দেখা যাচ্ছে না। তারা মাঝখানে বাশেঁর খুটি দিয়ে সৌন্দর্য করেছে। অথচ বামদিকে যে টিনের শেড রয়েছে সেটাকে ঢেকে দেয়ার জন্য যে বাশঁ লাগবে সেটা তারা দেয়নি। এবারের স্টলের বর্ণবিন্যাসও খুব খারাপ হয়েছে। আর আমার দাবি থাকবে যে ,তিনটি প্রবেশ পথ দিয়েই প্রবেশ এবং বাহির পথ থাকতে হবে।আগামিতে যেন গেইটগুলোতে অর্ধেক প্রবেশ অর্ধেক বাহির পথ রাখা হয়। কারো প্রয়োজনে যেন যে গেইট দিয়ে প্রবেশ করবে সেই গেইট দিয়েই বাহির হওয়ার সুবিধা থাকে। আর নয় তো অসুস্থ, বয়স্ক, নারী-শিশু পাঠকদের জন্য খুব সমস্যা হয়ে যায়। সেই টিএসসি দিয়ে ঢুকে তিন নেতার মাজারের কাছের গেইট দিয়ে বের হতে হয়। পাঠকতো এমনিতেই বইমেলায় আসে না। এতো হাটতে হলে তো আরো আসবে না।
চিত্রদেশ //এইচ//