গল্প-কবিতা

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ৮৭তম জন্মদিন আজ

সাহিত্য ডেস্ক:

‘কেউ কথা রাখেনি, তেত্রিশ বছর কাটলো, কেউ কথা রাখেনি’ – এই একটি কবিতার জন্য পাঠকের কাছে ঠিক যেন তেত্রিশেই আটকে আছেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়।

এই কবি ও কথা সাহিত্যিকের ৮৭তম জন্মদিন আজ। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৩৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের ফরিদপুরে।

তিনি বড় হয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। পড়াশুনা করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বাবা ছিলেন স্কুল শিক্ষক। আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রধান মি. পলেন কলকাতায় এলে সুনীলের সঙ্গে ঘনিষ্ট পরিচয় হয়। সেই সূত্রে মার্কিন মুলুকে গেলেন সুনীল ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে। পড়ে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপগ্রন্থাগারিক হিসাবে কিছুদিন কাজ করেন। দেশ পত্রিকার সম্পাদকীয় বিভাগে কাজ করেছেন, সাংবাদিকতা করেছেন, জীবনের শেষ চার বছর সাহিত্য আকাদেমির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

বাঙলাভাষী সুনীল ছিলেন এক সম্পুর্ণ সাহিত্যিক, একদিকে কবি, ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার আবার অন্যদিকে সম্পাদক ও সাংবাদিক। কলামিস্ট হিসাবে অজস্র স্মরণীয় রচনা উপহার দিয়েছেন।

সাহিত্যে বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন সুনীল। তার প্রথম ভালবাসাই ছিল কবিতা। গল্প, কবিতা, উপন্যাস নিয়ে তার বইয়ের সংখ্যা দু’শরও বেশি। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রথম উপন্যাস ‘আত্মপ্রকাশ’ দেশ পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হতে শুরু করে ১৯৬৫ সালে। তারপর থেকেই সাহিত্যিক হিসাবে সুপ্রতিষ্ঠিত সুনীল। যদিও কবি হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছেন আগেই। বাংলা আধুনিক কবিতার পত্রিকা ‘কৃত্তিবাস’ এর অন্যতম জনক তিনিই।

পরিণত বয়সে এসে রচনা করেছেন ‘সেই সময়’, ‘প্রথম আলো’ অথবা ‘পূর্ব পশ্চিম’ এর মতো মডার্ন ক্ল্যাসিক। আবার ‘নীললোহিত’ ছদ্মনামে পায়জামা পরা ভবঘুরে বেকার চরিত্র সুনীলের এক ব্যতিক্রম সৃষ্টি।

তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘একা এবং কয়েকজন’, প্রকাশিত হয় ১৯৫৮ সালে। ১৯৬৬ সালে প্রথম উপন্যাস আত্মপ্রকাশ প্রকাশিত হয়। তার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বই ‘আমি কী রকম ভাবে বেঁচে আছি’, ‘যুগলবন্দী’ , ‘হঠাৎ নীরার জন্য’, ‘রাত্রির রঁদেভূ’, ‘শ্যামবাজারের মোড়ের আড্ডা’, ‘অর্ধেক জীবন’, ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’, ‘অর্জুন’, ‘প্রথম আলো’, ‘সেই সময়’, ‘পূর্ব পশ্চিম’, ‘ভানু ও রাণু’, ‘মনের মানুষ’ ইত্যাদি। শিশুসাহিত্যে তিনি ‘কাকাবাবু-সন্তু’ নামে এক জনপ্রিয় গোয়েন্দা সিরিজের রচয়িতা।

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বেশ কিছু গল্প-উপন্যাসের কাহিনী চলচ্চিত্র হয়েছে। এর মধ্যে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ এবং ‘প্রতিদ্বন্দ্বী উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া কাকাবাবু চরিত্রের দু`টি কাহিনী ‘সবুজ দ্বীপের রাজা’ এবং ‘কাকাবাবু হেরে গেলেন’ চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে। ‘হঠাৎ নীরার জন্য’ও চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে।

২৩ অক্টোবর ২০১২ সুনীলের মহাপ্রয়াণ ঘটে। শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয় ২৫ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ব্যবস্থাপনায়।

চিত্রদেশ //এল//

Related Articles

Back to top button