প্রধান সংবাদ

ক্ষোভের আগুনে পুড়ছে ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ভারতে বর্ণবাদী ও মুসলিমবিদ্বেষী নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাশের পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভের মধ্যে দিল্লিতে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ চড়াও হওয়ার পর তা আরও ব্যাপক আকার নিয়েছে, নতুন নতুন শহরে ছড়িয়েছে বিক্ষোভ।

দিল্লী, মুম্বাই, হায়দ্রাবাদ, কলকাতা – এসব বড় শহরে ব্যাপক প্রতিবাদের খবর পাওয়া গেছে।

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, রাজধানী নয়াদিল্লিতে রোববার রাতভর সংঘর্ষ হয়েছে।

রোববার সন্ধ্যায় উত্তরপূর্বাঞ্চলে হাজার লোক রাস্তায় নেমে আসেন। বেশ কয়েকদিন ধরেই সেখানে দাঙ্গা ও প্রাণঘাতী সংঘাত অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া দিল্লি, আলীগড়, হায়দারাবাদ, মুম্বাই, পাটনা ও রায়পুরেও সহিংসতা ঘটেছে।

রাজধানীতে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে পুলিশ লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও পুলিশের প্রধান কার্যালয়ের বাইরেও হাজার হাজার লোককে বিক্ষোভে অংশ নিতে দেখা গেছে।

চারটি বাস ও দুটি পুলিশের বাহনে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন, ধরপাকড় ও আটক করেছে পুলিশ।

তারা জানিয়েছে, অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছিল। কিন্তু সোমবার সকালে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা এক বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলছে, তারা কোনো সহিংসতায় জড়িত ছিল না। তারা বলেন, আমরা ফের দাবি করছি যে আমাদের বিক্ষোভ ছিল অহিংস ও শান্তিপূর্ণ। সহিংসতায় কেউ জড়িত থাকলে আমরা তার নিন্দা জানাই।

জামিয়ার ভিসি নাজমা আখতারও পুলিশের নির্মমতার সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর যেভাবে চড়াও হয়েছে পুলিশ, সেটা ঠিক হয়নি।

উত্তরপ্রদেশের কর্তৃপক্ষ বলছে, আলীগড়ে বিক্ষোভের জের ধরে পশ্চিমের কয়েকটি অংশে ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। একটি বড় বিশ্ববিদ্যালয় ও মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ হচ্ছে আলীগড়।

জামিয়া মিলিয়ার সঙ্গে সংহতি জানিয়ে টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্সেস ও মাওলানা আজাদ ন্যাশনাল উর্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও সোমবার ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদে সোমবার বিকেলে ইন্ডিয়া গেটের সামনে দুই ঘণ্টার প্রতীকী ধর্নায় বসেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বাতিলের দাবিতে সোমবার কলকাতায় বড় ধরনের সমাবেশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বিশাল মিছিল নিয়ে রেড রোড থেকে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার পদযাত্রা করেন তিনি।

জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির সামনে বক্তব্যে মমতা বলেন, আমরা বাংলায় আছি। এখানে এনআরসি করতে হলে আমার মৃতদেহের উপর দিয়ে করতে হবে, এখানে সিএবি করতে হলে আমার মৃতদেহের উপর দিয়ে করতে হবে।

তবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

 

চিত্রদেশ//এস//

Related Articles

Back to top button