করোনায় আরো ৫ জনের মৃত্যু, নতুন আক্রান্ত ৫৬৪
স্টাফ রিপোর্টার:
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরো ৫৬৪ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৭৬৬৭। এ সময়ের মধ্যে মারা গেছেন আরো ৫ জন। সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা ১৬৮। মারা যাওয়াদের মধ্যে তিনজন পুরুষ ও দুইজন মহিলা। মারা যাওয়াদের মধ্যে দুইজন ষাটোর্ধ্ব। বাকি তিনজন ৪০-৫০ বছর বয়সী। এর মধ্যে একজন সিনিয়র সাংবাদিক ও একজন পুলিশ সদস্য।
২৪ ঘণ্টায় ৫ হাজার ৬২৬টি নমুনা সংগ্রহের বিপরীতে পরীক্ষা করা হয় ৪ হাজার ৯৬৫টি নমুনা। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১০ জন এবং এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৬০ জন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। তিনি বলেন, যারা দেশবাসীর পাশে বিভিন্ন দাঁড়িয়েছেন তাদের সবার প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।
তিনি বলেন, বর্তমানে এক লক্ষের অধিক পিসিআর কিট মজুদ রয়েছে। যেসব ল্যাবে পরীক্ষা হয় সেসব জায়গা এ কিট সরবারহ করা হয়। আরো কিট কেনার প্রকিয়া চলছে। কোনো দেশে একই সাথে অনেক কিট বিক্রি করে না। ২০ হাজার থেকে সর্বচ্চো চল্লিশ হাজার কিট কোনো দেশ থেকে আনা যেতে পারে। সব দেশেই করোনা পরীক্ষার এ কিটের সংকট রয়েছে। তাই কেউ একসাথে অনেক কিট বিক্রি করতে চায় না।
‘আমরা আমাদের সাধ্যমতো কিট ক্রয়ের চেষ্টা করছি। আমরা সব সময় আমাদের চাহিদা দিয়ে রেখেছি। ইতোমধ্যে আমাদের হাতে এক লক্ষ কিট এসে পৌঁছেছে এবং আরো কিট সংগ্রহের প্রকিয়া চলমান। নমুনা সংগ্রহের কিট আর পিসিআর কিট আলাদা।’
তথ্যমতে, দেশের ৬৪ জেলার ৬২টিতেই করোনা রোগী পাওয়া গেছে। সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে ঢাকা জেলায়। যেখানে মোট রোগীর প্রায় ৭৩ শতাংশ শনাক্ত হয়েছে। ঢাকার চার জেলার মধ্যে পর্যাক্রমে সংক্রামণে হার বেশি নায়ারণগঞ্জে। এরপর রয়েছে গাজীপুর। গাজীপুরের পর সংক্রামণের হারে এগিয়ে কিশোরগঞ্জ এবং চতুর্থ জেলা নরসিংদী।
ঢাকা সিটির যেসব জায়গায় সবচেয়ে বেশি রোগী পাওয়া গেছে:
১) রাজারবাগ
২) মোহাম্মদপুর
৩) লালবাগ
৪) যাত্রাবাড়ি
৫) বংশাল
৬) চকবাজার
৭) মিরপুর
৮) উত্তরা
৯) তেজগাঁ
১০) মহাখালী
আজ ২৯টি ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়েছে। নতুন যুক্ত হয়েছে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ। এছাড়া বেসকারি হাসপাতালের মধ্যে অ্যাপেলো হাসপাতালের পরীক্ষার তথ্য আজ সংযুক্ত করা হয়েছে। আরো বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার অনুমতি দেয়া হবে। তবে, তাদের শর্তসমূহ যথাযথ পূরণ করতে হবে।
ঢাকায় যেসব হাসপাতাল রয়েছে তাতে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা রোগী ভর্তি হয়েছে ৯৫ জন এবং এ পর্যন্ত ঢাকার হাসপাতালে করোনা রোগী ভর্তি আছেন ৯৫৬ জন। এছাড়া এ পর্যন্ত হাসপাতালগুলো থেকে চিকিৎসা পেয়েছেন ১ হাজার ৭৩১ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন ২ হাজার ৬৭ জন। এবং সর্বমোট হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন ১ লক্ষ ৭৭ হাজার ২৪৫ জন। গত ২৫ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে ১১৫ জনকে এবং এ পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে ৯ হাজার ২৭৪ জনকে। ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ২ হাজার ১৮২ সর্বমোট হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ১ লাখ ৮৬ হাজার ৫১৯ জন। ২৪ ঘণ্টায় ছাড় পেয়েছেন ৭৮২ জন। এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ১ লক্ষ ১৫ হাজার ৩৭ জন।
ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) গত ২৪ ঘণ্টায় বিতরণ করা হয়েছে ৫০ হাজার ৭২০টি এবং সংগৃহীত হয়েছে ২৪ ঘণ্টায় ২৪ হাজার ৮২৫টি। সর্বমোট পিপিই সংগ্রহ করা হয়েছে ১৭ লক্ষ ৩৫ হাজার ৮৩৭ টি এবং সর্বমোট পিপিই বিতরণ করা হয়েছে ১৪ লক্ষ ৩ হাজার ৩৯৮টি। বর্তমানে মজুদ রয়েছে ৩ লক্ষ ৩২ হাজার ৪৩৯টি।
গত ২৪ ঘণ্টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হটলাইন (স্বাস্থ্য বাতায়ন (১৬২৬৩), ৩৩৩ এবং আইইডিসিআরের হটলাইন (১০৬৫৫;০১৯৪৪৩৩৩২২২) ব্যবহার করে পরামর্শ দেয়া হয়েছে ৭২ হাজার ১৭৬ জনকে। আর সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত কল রিসিভ করা হয়েছে ৩৬ লক্ষ ৮৮ হাজার ৮৬৭ টি।
এছাড়া মোবাইল ফোন ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গত ২৪ ঘণ্টায় পরামর্শ দেয়া হয়েছে ৩৩ হাজার ৬৬৫ জনকে। সর্বমোট স্বাস্থ্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে ১৫ লক্ষ ৯৬ হাজার ১৩০ জনকে।
গত ২৪ ঘণ্টায় অনলাইন সেবার জন্য প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ৮ জন চিকিৎসক। এবং বর্তমানে স্বেচ্ছা ভিত্তিতে চিকিৎসা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন ৪ হাজার ২২ জন চিকিৎসক। মোট প্রশিক্ষণ পাওয়া চিকিৎসক ১৫ হাজার ৫২১ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় বিমানবন্দর, স্থল বন্দর ও সমুদ্রবন্দরে গত ২৪ ঘণ্টায় স্কানিং করা হয়েছে ১৯৭ জনকে। এবং সর্বমোট স্কানিং করা হয়েছে ৬ লক্ষ ৭৬ হাজার ৬৩৬ জনকে।
চিত্রদেশ//এস//