পেঁয়াজে অস্বস্তি হলেও সবজির দামে স্বস্তি
স্টাফ রিপোর্টার:
শীতকালীন শাক-সবজির সরবরাহ বাড়ায় বাজারে কমেছে শাক-সবজির দাম। বেশিরভাগ সবজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়। এদিকে জাহাজে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হলেও চীন আর মিশরের পেঁয়াজ ছাড়া বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে দেশি ও অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ। এছাড়া গরু ও খাসির মাংসের দাম না কমলেও কমেছে মুরগির দাম।
আজ শুক্রবার রাজধানীর মিরপুর, শেওড়াপাড়া, কল্যাণপুর, মোহাম্মদপুর, কারওয়ান বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
শীতকালীন শাক-সবজি ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, শালগম, শিম, পালংশাক, মুলা ও সরিষা শাকের সরবরাহ বাড়ায় রাজধানীর বাজারগুলোতে কিছু কিছু সবজির দাম কমেছে। যে শিম গত সপ্তাহ বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকার উপরে তা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। আর পাকা টমেটোর দাম কেজিতে কমেছে ৩০ টাকার বেশি।
এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতকালীন শাক-সবজির সরবরাহ বাড়ায় দাম কমতে শুরু করেছে। সামনে সরবরাহ আরও বাড়বে। ফলে সবজির দাম আরও কমবে।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি শিম ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। আর পাইকারিতে শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা।
কাওরান বাজারের ব্যবসায়ী সালাম বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে টাকা টমেটোর দাম কমেছে। এর কারণ বাজারে এখন কাঁচা টমেটোর পাশাপাশি দেশি পাকা টমেটোও আসছে। গত সপ্তাহে ৪০০ টাকা পাল্লা বিক্রি হওয়া টমেটো এখন ২৮০-৩০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। এ হিসাবে কেজিতে টমেটোর দাম কমেছে ২০-২৫ টাকা। এদিকে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১০০-১২০ টাকা।
শেওড়াপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী আলম বলেন, শিম, টমেটো, মুলা, শালগমের দাম কমতে শুরু করেছে। এখন দিন যত যাবে, আস্তে আস্তে সব ধরনের সবজির দাম কমবে। অনেক সবজি ৩০ টাকা কেজির মধ্যে পাওয়া যাবে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে নতুন আলু কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-১০০ টাকা। বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজি, গত সপ্তাহেও সবজিটির দাম একই ছিল। ফুলকপি ও বাঁধাকপি আগের সপ্তাহের মতো ৩০-৪০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে। পেঁপেও আগের মতো ৩০-৩৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে বেগুনের দাম কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বেগুনের দাম কমে ৪০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। মুলার কেজি ৫০ টাকা থেকে কমে ২০-৩০ টাকার মধ্যে চলে এসেছে। করলা আগের মতো ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
কল্যাণপুরের বাসিন্দা আকরাম বলেন, এখন শীতের সবজির ভর মৌসুম। বাজারে সব ধরনের শীতের সবজি রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই সব ধরনের সবজির দাম কমার কথা। শিম, মুলার দাম কিছুটা কমেছে, কিন্তু যে হারে সবজির দাম কমার কথা সে হারে কমেনি। এখনও ছোট ছোট এক পিস ফুলকপি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে জাহাজে করে পেঁয়াজ আসলেও কমেনি পেঁয়াজের দাম। দেশি পুরনো পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা, নতুন পেঁয়াজ ১৯০ থেকে ২০০ টাকা মিয়ানমারের পেঁয়াজ ২২০ থেকে ২৩০ টাকা চীনা পেঁয়াজ ১২০ থেকে ১৩০ টাকা ও মিসরীয় পেঁয়াজ ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি।
এদিকে সবকিছুর দাম যখন নাগালের বাইরে তখন কিছুটা কম দামে বিক্রি হচ্ছে বয়লার মুরগি। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বাজারে ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকায়। তবে পাকিস্তানি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকায় আর লেয়ার মুরগি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে আগের মতোই গরুর মাংস ৫৩০ থেকে ৫৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে সাইজ প্রতি কেজি ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ১২০০ টাকা। এছাড়া প্রতি কেজি তেলাপিয়া বিক্রি হয় ১৫০-১৬০ টাকা, রুই মাছ কেজিপ্রতি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, কাতলা ২৮০-৩৫০ টাকা কেজি, শোল মাছ প্রতি পিস ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, শিং মাছ প্রতি কেজি ৪০০ টাকা, চিংড়ি প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজি, পুঁটি মাছ ১৫০-২০০ টাকা কেজি এবং টেংড়া প্রতিকেজি ৫৫০-৬০০ টাকা দরে।
চিত্রদেশ//এস//