লকডাউন হলেও ব্যাংক খোলা রাখার নির্দেশ
স্টাফ রিপোর্টার:
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে দেশের দুই উপজেলা ‘লকডাউন’ করা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় আরো এলাকা লকডাউন হতে পারে। তবে সাধারণ মানুষ যেন নির্বিঘ্নে নগদ অর্থের লেনদেন করতে পারে সেই জন্য যেকোনো অবস্থায়ই ব্যাংকের সব শাখা খোলা রাখতে হবে। লক ডাউন হলেও শাখা বন্ধ করা যাবে না।
রোববার (২২ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ’ করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে পর্যাপ্ত নগদ টাকার সরবরাহ নিশ্চিতকরণ সংক্রান্ত এক নির্দেশনা জারি করেছে।
দেশে কার্যরত সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এবং এর কমিউনিটি ট্রান্সমিশন রোধকল্পে সরকার কর্তৃক বিভিন্ন নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকসমূহকে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এরূপ পরিস্থিতিতে গ্রাহকের চাহিদার বিপরীতে দৈনন্দিন নগদ অর্থের সরবরাহ যেন বিঘ্নিত না হয় সে লক্ষ্যে ব্যাংকের শাখাগুলোতে পর্যাপ্ত নগদ অর্থের সরবরাহ নিশ্চিত করতে পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কোন এলাকা/অঞ্চল সরকারী ঘোষণার মাধ্যেমে লক ডাউন করা হলে সে এলাকায়/অঞ্চলে প্রয়োজনে স্থানীয় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের সহায়তা গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় নগদ অর্থের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এর আগে রোববার করোনা ভাইরাসের সংক্রমন রোধে জরুরি বৈঠক করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বৈঠকে নগদ টাকার চাহিদা মেটাতে ব্যাংকের সব শাখা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি সব ধরনের প্রশিক্ষণ বন্ধ করা ও বিদেশ থেকে আসা কর্মীরা যেন ব্যাংকে না আসা ও সব ধরনের প্রোগ্রাম- যেখানে বেশি মানুষের সমাগম হয় তা বাতিল করার সিদ্ধান্ত হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নর্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম জানান, করোনা ভাইরাসের সংক্রমন রোধে সব ধরনের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের যেসব কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ অথবা অফিসিয়াল কাজে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন, তাদের ১৪ দিনের ছুটি দেওয়া হবে। এমনকি যাদের পরিবারে কোনো সদস্য বিদেশ থেকে এসেছে তাদের ক্ষেত্রেও ১৪ দিন বাধ্যতামূলক ছুটি নির্ধারণ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তিনি আরও জানান, খুব শিগগির বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিটি বিভাগের সামনে থার্মাল স্ক্যানারের ব্যবস্থা করা হবে। ইতোমধ্যেই বেশিরভাগ বিভাগের সামনে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, ব্যাংকের কয়েকটি শাখা বন্ধ রেখে অন্যান্য শাখাগুলো বন্ধ ঘোষণার অনুরোধ করেছিল একটি ব্যাংক। কিন্তু সেটা সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কারণ সংকটের সময়গুলোতে মানুষের টাকার প্রয়োজন বেশি হয়। সতর্কতা অবলম্বন করে সবাই ব্যাংক থেকে টাকা উঠাতে ও জমা দিতে পারবে। এছাড়া মহামারির এ সময়ে ব্যাংককে বোর্ড মিটিংগুলো ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
চিত্রদেশ//এল//