মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে বাড়তি ব্যয় নয়: প্রধানমন্ত্রী
স্টাফ রিপোর্টার:
মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়গুলোকে বাড়তি ব্যয় না করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (২ মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি এ নির্দেশ দেন।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ‘মুজিববর্ষ উপলক্ষে নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের একটি কর্মসূচিকে মুজিববর্ষের কর্মসূচি হিসেবে দেখাতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। এ উপলক্ষে বড় বাজেটের কর্মসূচি না নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।’
মন্ত্রিসভায় অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেছেন বলে জানিয়েছেন আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, যারা অবসর ভাতা পান তারা যাতে ঘরে বসে নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এটা পেতে পারেন, সেজন্য অর্থ মন্ত্রণালয় একটি কর্মসূচি নিয়েছিল আগেই। সেই কর্মসূচিকে মুজিববর্ষের কর্মসূচি হিসেবে দেখানো হচ্ছে। এ কর্মসূচির জন্য আলাদা খরচ করা লাগবে না। বাড়তি খরচ করা লাগবে এমন কর্মসূচি পরিহার করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মুজিববর্ষ উপলক্ষে করা জাতীয় কমটির কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি বাজেট কমিটি গঠন করা হয়েছে। জাতীয় কমিটির অনেক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা লাগছে। মূলত খরচ সমন্বয় করতেই বাজেট কমিটি করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দলীয় ব্যানারে কিছু কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে নির্দেশ দেয়া আছে জাতীয় কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে এ দলীয় কর্মসূচি পালন করতে হবে।’
মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে ‘সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০২০’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সেই সভায় সভাপতিত্ব করেন শেখ হাসিনা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘এটা প্রধানমন্ত্রীর ইনিশিয়েটিভ। এই কনসেপ্টটা ওনার মাথা থেকে এসেছে যে- রিমুট এলাকাতেও বিশ্ববিদ্যালয় থাকা দরকার।’
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে সুনামগঞ্জ জেলায় একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের লক্ষ্যে ‘সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন’ এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়।’
খসড়া আইনের ওপর বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মতামত গ্রহণ করে গত বছরের ২২ আগস্ট মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় আইনের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়। গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর মন্ত্রিসভা বৈঠকে খসড়া আইনটি নীতিগতভাবে অনুমোদন করা হয়। এরপর আইন মন্ত্রণালয় হতে ভেটিং গ্রহণ করা হয়।
অন্যান্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন যে রকম সেটা অনুসরণ করেই করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
খসড়া আইনে ৫৫টি ধারা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইনে সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রবর্তন ও সংজ্ঞা ছাড়াও উল্লেখযোগ্য ধারাগুলোর মধ্যে চ্যান্সেলর, ভাইস চ্যান্সেলর, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর, কোষাধ্যক্ষ, নিয়োগ, সিন্ডিকেট, অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল, অর্থ কমিটি সম্পর্কিত বিষয় রয়েছে।
এছাড়া আইনের আলোকে ২১টি অনুচ্ছেদ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সংবিধির খসড়া আইনের সঙ্গে সংযুক্ত আছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ নিয়ে বর্তমানে বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও প্রকৌশল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা দাঁড়ালো ২০টি। ১৯টি কার্যক্রমে রয়েছে।
আর চারটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৪২টি। এর মধ্যে সাধারণ ১৭টি, কৃষি ও ভেটেরিনারি ৬টি। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১০৫টি।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় প্রতি জেলায় একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের মধ্যে বর্তমানে ৩২টি জেলা বাকি রয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
চিত্রদেশ//এফ//