
তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, খোলা হলো সব জলকপাট
নীলফামারী প্রতিনিধি:
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির কারণে তিস্তার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তিস্তা ব্যারাজের সবকটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টায় নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে পানির উচ্চতা রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ১৮ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপরে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাউবোর ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, রোববার সকাল পর্যন্ত তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার নিচে ছিল। দুপুর থেকে তা বাড়তে থাকে। রাত ৯টার দিকে পানির স্তর বিপৎসীমার মাত্র ৩ সেন্টিমিটার নিচে পৌঁছায়। ভোরে আরও পানি বৃদ্ধি পেয়ে তা বিপৎসীমা অতিক্রম করে।
হঠাৎ পানির চাপ বাড়ায় নীলফামারীর ডিমলা ও লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের দাবি, নদীর পাড়ঘেঁষা নিম্নাঞ্চলের কিছু জায়গায় ইতোমধ্যেই পানি ঢুকতে শুরু করেছে। জনপ্রতিনিধিরা আশঙ্কা করছেন, পানি আরও বাড়লে চরাঞ্চল ও নিম্নভূমি প্লাবিত হয়ে ফসলি জমি ও ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বাসিন্দারা গবাদিপশু ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন।
ডিমলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, ‘তিস্তায় পানি বেড়েই চলছে। এখনো ঘরবাড়ি ডোবেনি, তবে মানুষ আতঙ্কে রয়েছে।
পাউবোর ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, উজানে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তার পানি ক্রমেই বাড়ছে। সকাল ৬টা থেকে তা বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যারাজের সব জলকপাট খোলা রাখা হয়েছে।
এ দিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (বাপাউবো) জানিয়েছে, ১৪ থেকে ১৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রংপুর বিভাগের প্রধান নদীগুলোর পানি আরও বাড়তে পারে। বিশেষ করে তিস্তা ও দুধকুমার নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে যেতে পারে। এতে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নদীপাড়ের মানুষকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।