বইমেলা উপজেলা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হবে: প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বইমেলা উপজেলা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনী ভাষণে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘বইমেলা আমাদের প্রাণের মেলা। শুধু প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যে এসেছি, তা নয়। স্কুলজীবন থেকেই আমরা মেলায় আসি। এই বাংলা একাডেমি অনেক আন্দোলন সংগ্রামের সাক্ষী। যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম, আমি ও আমার বন্ধু বেবী মওদুদ বাংলা একাডেমির লাইব্রেরিতে পড়াশোনা করতাম।’
তিনি বলেন, ‘বইমেলার জায়গাটা অনেক ছোট। প্রচুর মানুষ মেলায় আসতে চায়। আরো বড়ো পরিসরে আয়োজন করার বিষয়টি আমি ভেবে দেখার অনুরোধ জানাবো।’ তিনি বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে অনুবাদের ওপর জোর দেওয়ার আহ্বান জানান।
বইমেলার উদ্বোধনের আগে তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২৩ বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। বাংলা একাডেমি প্রকাশিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগৃহীত রচনা: দ্বিতীয় খণ্ড’ এবং আরো কয়েকটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন শেখ হাসিনা।
বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয়েছে মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলার। এবারের বইমেলার প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘পড়ো বই, গড়ো দেশ: বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’।
বইমেলায় ৬৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ৯৩৭টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বাংলা একাডেমি মাঠে ১২০টি প্রতিষ্ঠানকে ১৭৩টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৫১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৬৪টি স্টল বরাদ্দ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি রয়েছে ৩৭টি প্যাভিলিয়ন।
অব্যবস্থাপনা এড়াতে এ বছর বাংলা একাডেমি এককভাবে মেলার আয়োজন করেছে। গ্রন্থমেলা কমিটির সদস্য সচিব ড. কে এম মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, আগের বছরগুলোতে কিছু ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি মেলার আয়োজনে জড়িত ছিল, ফলে গত আমাদের কিছুটা সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়েছিল।
মেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মাসব্যাপী সেমিনারের পাশাপাশি শিশু-কিশোরদের জন্য ছবি আঁকা, সংগীত ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা থাকবে।
এবারও মেলার মূল মঞ্চ বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে। বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও ‘লেখক বলছি’ মঞ্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে।
রমনা কালী মন্দিরের পাশে সাধুসঙ্গ এলাকায় ‘শিশু চত্বর’ স্থাপন করা হয়েছে।
প্রতি কর্মদিবসে বইমেলা বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এবং সরকারি ছুটির দিনে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে এবং দুপুরের খাবার ও নামাজের জন্য এক ঘণ্টা বিরতি থাকবে।
বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য এ বছর ১১টি বিভাগে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২৩ দেওয়া হয়েছে। বিভাগগুলো হলো-: কবিতা, কথাসাহিত্য, প্রবন্ধ/গবেষণা, অনুবাদ, নাটক, শিশুসাহিত্য বিভাগ, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, পরিবেশ/বিজ্ঞান ক্ষেত্র, জীবনী এবং লোক কাহিনী।
পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন-: শামীম আজাদ (কবিতা), ঔপন্যাসিক নুরুদ্দিন জাহাঙ্গীর ও সালমা বাণী (যৌথভাবে কথাসাহিত্যে), জুলফিকার মতিন (প্রবন্ধ/গবেষণা), সালেহা চৌধুরী (অনুবাদ), নাট্যকার মৃত্তিকা চাকমা ও মাসুদ পথিক (যৌথভাবে নাটক), তপঙ্কর চক্রবর্তী (শিশু সাহিত্য), আফরোজা পারভিন এবং আসাদুজ্জামান আসাদ (মুক্তিযুদ্ধের উপর গবেষণা), সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল এবং মো. মজিবুর রহমান (বঙ্গবন্ধুর উপর গবেষণা), পক্ষীবিদ ইনাম আল হক (পরিবেশ/বিজ্ঞান ক্ষেত্র), ইসহাক খান (জীবনী) এবং তপন বাগচী ও সুমন কুমার দাস (যৌথভাবে লোক কাহিনী)।
//এস//