আন্তর্জাতিকপ্রধান সংবাদ

যুবরাজ সালমানকে সৌদি আরবের প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
সৌদি আরবের প্রভাবশালী যুবরাজ ও ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) এক রাজকীয় ডিক্রিতে সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ তার ছেলে এবং সিংহাসনের উত্তরাধিকারী মোহাম্মদ বিন সালমানকে এই দায়িত্ব দেওয়ার ঘোষণা দেন।

এছাড়া নিজের দ্বিতীয় পুত্র প্রিন্স খালিদকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেছেন বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ। বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে সৌদি আরবের প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করে দেওয়া এই রাজকীয় ডিক্রি মঙ্গলবার সৌদির রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা এসপিএ’তে প্রকাশিত হয়েছে। সৌদির ক্ষমতা কাঠামোয় রদবদলের এই ডিক্রিতে নিজের আরেক পুত্র যুবরাজ আবদুল আজিজ বিন সালমানকে সৌদি আরবের জ্বালানি মন্ত্রী হিসাবে রাখার ঘোষণা দিয়েছেন বাদশাহ।

এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ, অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জাদান এবং বিনিয়োগ মন্ত্রী খালিদ আল-ফালিহ তাদের পদে বহাল রয়েছেন বলে ডিক্রিতে দেখা গেছে।

সৌদির প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হওয়ার আগে এমবিএস নামে পরিচিত সৌদির প্রভাবশালী এই ক্রাউন প্রিন্স মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করছিলেন এবং মঙ্গলবারের রাজকীয় ডিক্রিতে তিনি কার্যত পদোন্নতি পেয়েছেন। এই কথাটি ব্যাপকভাবে প্রচলিত যে, সালমান বিন আবদুল আজিজ সৌদি আরবের বাদশাহ হলেও সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানই সৌদির প্রকৃত শাসক।

সৌদির একজন কর্মকর্তা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোহাম্মদ বিন সালমানের নতুন ভূমিকা বাদশাহর পূর্ববর্তী প্রতিনিধিদলের সাথেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। প্রভাবশালী এই প্রিন্স বিদেশি সফরে সৌদি আরবের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং সৌদির আয়োজিত যেকোনো শীর্ষ সম্মেলনেও সভাপতিত্ব করেন তিনি।

অন্যদিকে এমবিএসের ছোট ভাই প্রিন্স খালিদ বিন সালমান এর আগে সৌদির উপ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ক্রাউন প্রিন্স বলেছেন, সৌদি আরব সামরিক শিল্পে তার স্বয়ংসম্পূর্ণতা ২ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশে বাড়িয়েছে এবং নবনিযুক্ত প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর অধীনে ৫০ শতাংশে পৌঁছানোর পরিকল্পনা করেছে বলে এসপিএ রিপোর্ট করেছে।

অবশ্য বাদশাহ সালমান এখনও যে মন্ত্রিসভার বৈঠকে যোগ দেবেন এবং তাতে সভাপতিত্ব করবেন, এটি ডিক্রিতে দেখানো হয়েছে। ডিক্রিটি প্রকাশের পর রাষ্ট্রীয় টিভিতে প্রচারিত ফুটেজে বাদশাহকে মন্ত্রিসভার একটি সাপ্তাহিক বৈঠকে সভাপতিত্ব করতে দেখা যায়।

৮৬ বছর বয়সী বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ ইসলামের পবিত্রতম স্থানগুলোর রক্ষক। ক্রাউন প্রিন্স হিসাবে আড়াই বছর অতিবাহিত করার পর ২০১৫ সালে সৌদির শাসক হন তিনি। অবশ্য গত দুই বছরে বিভিন্ন অসুস্থতার জন্য বেশ কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এই বাদশাহ।

অন্যদিকে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ ২০১৭ সালে ক্ষমতা কাঠাসোয় প্রবেশ করার পর থেকে সৌদি আরবকে আমূল পরিবর্তন করেছেন। তেলের ওপর নির্ভরশীলতা থেকে অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় করার প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে সৌদি নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি দেওয়ার পাশাপাশি ধর্মীয় নেতাদের ক্ষমতাও রোধ করেছেন তিনি।

এছাড়া মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর দমন-পীড়নেরও অভিযোগ রয়েছে।

 

চিত্রদেশ//এফটি//

Related Articles

Back to top button