কানিজ কাদীরের ছোট গল্প ‘করোনাময় দিনগুলি’ (২য় পর্ব)
ডাক্তার সাহেবের লিভারেও সমস্যা আছে। প্রেসারের ওষুধ খান। উনার অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৯৪-৯৫-৯৬ এ উঠানামা করছিল।৪-৭-২১ তারিখ বিকাল থেকে আমার শরীরও বেশ খারাপ লাগছিল।জ্বর জ্বর ভাব, শরীর ব্যথা, মাথাব্যথা, নাকে পানি। সকালে কোমড়ের পিছনে প্রচন্ড ব্যথা হচ্ছিল। আমি দুইটা আইভেরা খেয়ে নিলাম। নাপা খেলাম। পভিসেপ সলিউশন দিয়ে গড়গড়া শুরু করলাম। আমরা দু’জন আমাদের ঘরেই অবস্থান শুরু করলাম। ৫-৭-২০২১ আইডিসিআর থেকে আমার স্যাম্পল নিয়ে গেল। ৬ তারিখ বিকালে রিপোর্ট পেলাম।আমি করোনা পজিটিভ। কিন্তু আমি একটুও মনোবল হারালাম না। আমার অক্সিজেন স্যাচুরেশন ও ভালো ছিল। শরীর ব্যথা ও নাকে পানির জন্য ওষুধ খেয়ে নিলাম। বারবার গরম চা খেলাম। বুয়া দরজা দিয়ে আমাদের ঘরে সব খাবার দিয়ে যায়। আমরা নিজেরাই আমাদের বাথরুমের বেসিনে থালাবাটি ধুয়ে রাখি।জগ, গ্লাস, বাটি, চামচ, লবনদানি সবকিছু আমাদের ঘরেই ব্যবস্থা করে নেই।আমি মোটামুটি ভালই ছিলাম। কিন্তু ডাক্তার সাহেবকে নিয়ে আর পারছিলাম না।ব্রিদিং এক্সসারসাইজ করলে উনার অক্সিজেন স্যাচুরেশন বেড়ে ৯৬-৯৭% হয় কিন্তু একটু পর ৯৪-৯৫% এ এসে দাড়ায়।আমার ক্লাসমেট প্রফেসর মোফাক্খার রতন এর পরামর্শ নিয়ে উনি সব ওষুধ খাচ্ছেন।
উনি এত অনিয়ম করছিলেন যে কোন কথাই শুনছিলেন না। উনার মত করে সব যুক্তি দাড়ঁ করাচ্ছিলেন। ৭,৮,৯ তারিখ একই রকম ছিলেন। জ্বর একটু কমেছে ।কিন্তু উনার প্রচন্ড শরীর ব্যথা। উনি সবধরনের ওষুধই খাচ্ছিলেন। আমি মোটামুটি ভালই ছিলাম। একটু কাশি ছিল। ৯/৭/২০২১ শুক্রবার ডাক্তার সাহেব খুব আজেবাজে আচরণ করছিলেন। নানা বিষয়ে আমার ভুল ধরছিলেন। আমাকে চার্জ করছিলেন ছোট খাট ব্যাপার নিয়ে।আমার জন্যই নাকি উনার করোনা হয়েছে।
আর আমি নাকি উনাকে পপুলার ডায়াগনষ্টিক এ জোর করে পাঠিয়েছি আলট্রাসাউন্ড করার জন্য। সেখানে দুই/আড়াই ঘন্টা বসে থাকার জন্যই নাকি উনার করোনা হয়েছে। অথচ উনার ইউরোজিক্যাল কিছু সমস্যার জন্য উনি এক প্রফেসর কে দেখিয়েছিলেন বেশ কিছুদিন আগে। উনি কিছু ইনভেস্টিগেশন দিয়েছিলেন। সময়ের অভাবে ডাক্তার সাহেব সেগুলো করাতে দেরি হচ্ছিল। উনিই সময় বের করে বেশ কিছুদিন পরে পপুলারে গিয়েছেন টেস্ট করাতে। এখন পুরো দায় আমার উপর এসে পড়েছে। উনি ম্যানেজারও ফোন করে খুব ধমক দিচ্ছেলেন।