অন্যান্য

পুঁজিবাজারে লেনদেন কমলো ৪ হাজার কোটি টাকা

স্টাফ রিপোর্টার:
করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে সরকার ঘোষিত সীমিত পরিসরের ‘কঠোর লকডাউনে’ বিদায়ী সপ্তাহে (২৭-৩০ জুন) পুঁজিবাজারে সব সূচক বেড়েছে। তবে, সূচক বাড়লেও চার কার্যদিবসে কমেছে লেনদেন।

বিদায়ী সপ্তাহে পুঁজিবাজারে চার হাজার ৭৪ কোটি টাকা লেনদেন কমেছে। এরমধ্যে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তিন হাজার ৮৯৯ কোটি ৬২ লাখ ৯৩ হাজার ১৮৪ টাকা বা ৪১ শতাংশ এবং অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন কমেছে ১৭৪ কোটি ৭৫ লাখ ৭৬ হাজার ৬৫৫ টাকা বা ৩১ শতাংশ।
ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এদিকে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগে সুযোগের অপেক্ষায় বিদায়ী সপ্তাহে লেনদেন কিছুটা কমেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে, চূড়ান্ত বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ থাকায় লেনদেন অনেক বাড়বে বলে মনে করছেন তারা।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, অর্থবছর শেষে বিনিয়োগকারীরা অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের ঘোষণার অপেক্ষায় ছিলেন। তাই বিদায়ী সপ্তাহে লেনদেন কিছুটা কমেছে। তবে জরিমানা বাড়িয়ে সরকার অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ রাখায় আবারো লেনদেনের গতি বাড়বে বলে তিনি জানান।

অপরদিকে বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৫ হাজার ৬২৪ কোটি ৬৬ লাখ ২৫ হাজার ৬৩৩ টাকার লেনদেন হয়েছে। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৯ হাজার ৫২৪ কোটি ২৯ লাখ ১৮ হাজার ৮১৭ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন ৩ হাজার ৮৯৯ কোটি ৬২ লাখ ৯৩ হাজার ১৮৪ টাকা বা ৪১ শতাংশ কমেছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৭ দশমকি ৬৫ পয়েন্ট বা শূন্য দশমকি ৯৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ১৫০ দশমকি ৪৮ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১২ দশমকি ৯০ পয়েন্ট বা শূন্য দশমকি ৯৯ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৮ দশমকি ৮৫ পয়েন্ট বা শূন্য দশমকি ৪০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়ে যথাক্রমে ১ হাজার ৩১৪ দশমকি ৭৬ পয়েন্ট এবং ২ হাজার ২০৮ দশমকি ৩৮ পয়েন্টে।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইর লেনদেন কমলেও বাজার মূলধন বেড়েছে। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইতে বাজার মূলধন ছিল ৫ লাখ ১০ হাজার ৬৩৮ কোটি ৭৬ লাখ ১৮ হাজার টাকায়। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৫ লাখ ১৪ হাজার ২৮২ কোটি ১৩ লাখ ৪ হাজার টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ৩ হাজার ৬৪৩ কোটি ৩৬ লাখ ৮৬ হাজার টাকা বাজার মূলধন বেড়েছে।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসই সার্বিক মূল্য আয় বেড়েছে। গত সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর পিই ছিল ১৮ দশমকি ৩৫ পয়েন্টে। যা সপ্তাহ শেষেও ১৮ দশমকি ৫০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে পিই রেশিও শূন্য দশমকি ১৫ পয়েন্ট বা শূন্য দশমকি ৮২ শতাংশ বেড়েছে।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৭৬টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৯৭টির, কমেছে ১৬২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭টির শেয়ার ও ইউনিট দর।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে থাকা ১০ কোম্পানি হলো- বেক্সিমকো লিমিটেড, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মালেক স্পিনিং, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, কুইন সাউথ টেক্সটাইল, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, ম্যাকসন স্পিনিং, ড্রাগন সোয়েটার, কেয়া কসমেটিকস এবং কাট্টালী টেক্সটাইল।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৩৮৬ কোটি ১১ লাখ ৮৬ হাজার ২৩৪ টাকার। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৫৬০ কোটি ৮৭ লাখ ৬২ হাজার ৮৯০ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন ১৭৪ কোটি ৭৫ লাখ ৭৬ হাজার ৬৫৫ টাকা বা ৩১ শতাংশ কম হয়েছে।
সপ্তাহটিতে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৩৭ দশমকি ৭৮ পয়েন্ট বা শূন্য দশমকি ৭৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৭৯৫ দশমকি ৪ পয়েন্টে।
সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ৩৩৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নেয়। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৫৪টির দর বেড়েছে, ১৭১টির কমেছে এবং ১৩টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

চিত্রদেশ//এফটি//

Related Articles

Back to top button