তরুণদের চাকরি দিয়ে দেশে রাখা হবে: প্রধানমন্ত্রী
স্টাফ রিপোর্টার:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তরুণরা চাকরি পেয়ে যাতে দেশের ভেতরে থাকতে পারেন, তাদের যাতে আর বিদেশমুখী হতে না হয়- আমরা সে পরিবেশ সৃষ্টি করছি।
মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
আজকের এনইসি সভায় অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার চূড়ান্ত করা হয়েছে বলেও জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।
এম এ মান্নান বলেন, ‘আজকের সভায় প্রধানমন্ত্রী দুটি অনুশাসন দিয়েছেন। তরুণরা যাতে দেশের ভেতরেই চাকরি পেতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, ফসলি জমি নষ্ট করা যাবে না।’
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘ফসলি জমি রক্ষা করতে ইউনিয়নভিত্তিক মাস্টারপ্ল্যান করা হবে। ল্যান্ড ইউজ প্ল্যান বা ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা তৈরি করা হবে। অন্যান্য দেশে এই পরিকল্পনা আছে। ভূমি ভিত্তিক পরিকল্পনা করা হবে সব ইউনিয়নের জন্য, যাতে করে এখানে-ওখানে ঘরবাড়ি না ওঠায়।’
‘অষ্টম (২০২১-২০২৫) পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার বিবরণ তুলে ধরে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, এক কোটি ১৬ লাখ ৭০ হাজার কর্মসংস্থানের বিশাল লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে নিয়ে অষ্টম (২০২১-২০২৫) পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে ৩৫ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে প্রবাসে। বাকি ৮১ লাখ ৭০ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে দেশে।’
‘পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় পিছিয়ে পড়া জেলাগুলো থেকে বিদেশে কর্মী পাঠানোর সুযোগ তৈরির লক্ষে সঠিক তথ্য, প্রশিক্ষণ, অভিবাসন ব্যয় মেটাতে ঋণ সহায়তা দেওয়া হবে। ২০২১ সালে ২১ লাখ ৬০ হাজার, ২০২২ সালে ২২ লাখ ৩০ হাজার, ২৩ সালে ২৩ লাখ ৩০ হাজার, ২৪ সালে ২৪ লাখ ২০ হাজার এবং ২০২৫ সালে ২৫ লাখ ৩০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে সরকার’ যোগ করেন এম এ মান্নান।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে সরকার মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল ৮ দশমিক ২০ শতাংশ। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ধাক্কায় সেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। ওই অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হচ্ছে ৮ দশমিক ৫১ শতাংশ। ২০৩১ সাল নাগাদ বাংলাদেশের অর্থনীতিকে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশের কাতারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়া হবে নতুন পরিকল্পনায়।’
মন্ত্রী বলেন, ‘অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় পিছিয়ে পড়া অঞ্চলে দারিদ্র্য সমস্যা মোকাবিলায় কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে। পিছিয়ে পড়া জেলাগুলোতে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচিকে উচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া এবং সুবিধাভোগীদের সংখ্যা বাড়ানো হবে। এসব জেলাগুলোতে কৃষির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং আয় বৃদ্ধির জন্য কৃষি গবেষণা ও সম্প্রসারণ সেবার ওপর অধিকতর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।’
‘অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ দশমিক ৫১ শতাংশ। এই ধারাবাহিকতায় ২০২১ অর্থবছরে ৮ দশমিক ২০ শতাংশ, ২০২২ অর্থবছরে ৮ দশমিক ২২ শতাংশ, ২০২৩ অর্থবছরে ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ, ২০২৪ অর্থবছরে ৮ দশমিক ৩২ শতাংশ, ২০২৫ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৮ দশমিক ৫১ শতাংশ ধরে অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে’ বলে জানান এম এ মান্নান।
চিত্রদেশ//এল//