প্রধান সংবাদ

মহামারীতে আওয়ামী লীগই মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে: শেখ হাসিনা

স্টাফ রিপোর্টার:
‘অন্যান্য রাজনৈতিক দল আশ্বাস দিয়ে করোনায় মানুষের পাশে না দাঁড়ালেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে দলের সভাপতিমণ্ডলীর বৈঠকে উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে দীর্ঘ বিরতির পর এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। করোনা সংক্রমণের কারণে এতদিন সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি স্থগিত ছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, মহামারীতে দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে সরকার সহায়তা করেছে। আমার মনে হয় একমাত্র আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় ছিল বলে এইভাবে সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করেছে এবং মানুষকে সহযোগিতা করেছে।

তিনি বলেন, অন্য কোনো দল হলে এটা মোটেই করতো না বরং তারা দেখতো যে কীভাবে এখান থেকে কিছু ফায়দা লুটতে পারে কিনা, এটাই। কিন্তু আমরা আন্তরিকতার সাথে কাজ করেছি। এটা আমাদের নীতি, এটা আমাদের লক্ষ্য। এটা জাতির পিতা আমাদের শিখিয়েছেন। আমরা সেইভাবেই কাজ করে যাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস ছাড়াও বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকার কাজ করে যাচ্ছে। কারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানুষকে সেবা করাই আওয়ামী লীগ সরকারের লক্ষ্য।

তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দল হিসেবে অন্যদের দেখেছি, কেবল লিফ সার্ভিস দিতে। মুখে মুখে কথা বলেছে কিন্তু প্রকৃতভাবে মানুষের কাছে গিয়ে সাহায্য করার বিষয়টিতে অন্য দলগুলো বা এনজিওসহ কোনো সংস্থার উপস্থিতি সেভাবে দেখা যায়নি। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন।’

সভায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা করোনা ভাইরাসের কারণে এতদিন মিটিং করতে পারিনি। এখন ধীরে ধীরে কিছু মিটিং শুরু করছি। সেজন্য এ সভার আয়োজন করছি। দুঃখের বিষয় হলো করোনা ভাইরাসে আমরা অনেক মানুষকে হারিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে শুধু বাংলাদেশ নয়, সারাবিশ্বে জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। সরকার অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে করোনা মোকাবিলা করে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকে ধারণা করছিলেন, আমাদের রেমিট্যান্স কমে যাবে। রেমিট্যান্স কিন্তু কমেনি। আমরা ২ শতাংশ বিশেষ প্রণোদনা দিয়েছি যার কারণে বেড়েছে। অনেকে ভাবতেই পারেনি রেমিট্যান্স এত বাড়বে। আমাদের রিজার্ভ ৩৯ দশমিক ৪০ মার্কিন ডলার। রিজার্ভও ভালো অবস্থানে। অর্থনৈতিকভাবে মোটামুটি ভালো অবস্থায় আমরা আছি।’

তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দল হিসেবে একমাত্র আওয়ামী লীগেরই ইকোনমিক পলিসি আছে। সেটাকে মাথায় রেখেই কিন্তু আমরা কাজ করে যাই। এখন আমরা সরকারে আছি এ জন্য আমাদের দায়িত্ব হলো- শুধু বর্তমান নয় আগামী দিনে নতুন প্রজন্মের জন্য দেশটা কীভাবে এগিয়ে যাবে। দেশ কীভাবে চলবে। এখন থেকে সেই প্রস্তুতি আমরা নিয়ে রাখব। নির্দেশনা দিয়ে দেব। এখন আমরা যেটা করছি, সময়ের বিবর্তনে হয় তো তা সংশোধন করতে হবে। পরিবর্তন করতে হবে। পরিশোধন করতে হবে। এটা করতেই হবে। এটা নিয়ম।’

কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যেও সরকার ৫ লাখ কোটি টাকার মতো বিশাল বাজেট দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এত বড় বিশাল বাজেট। এটা দেয়া কিন্তু কম কথা না। কিন্তু আমার কথা ছিল… জানি না করোনার জন্য কতটুকু করতে পারব না পারব কিন্তু আমার কথা ছিল আমাদের প্রস্তুতিটা থাকতে হবে সম্পূর্ণভাবে। যদি অবস্থা ভালো হয় আমরা সবটুকু অর্জন করতে পারব। যদি না পারি তারপরও তখন সেটা আমরা আবার দেখব। আমরা কিন্তু পিছিয়ে যাইনি। বাজেট আমরা ঘোষণা দিয়েছি দেশের জন্য।

সভায় শোষিত-বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন সংগ্রাম ও পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট তাকে সপরিবারে হত্যার কথা তুলে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন শেখ হাসিনা।

সভায় করোনা ভাইরাসে প্রাণ হারানো দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম ও সাহারা খাতুনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

চিত্রদেশ//এল//

Related Articles

Back to top button