৩১ জেলায় কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি
স্টাফ রিপোর্টার:
কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে দেশের মধ্যাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। উত্তরাঞ্চলে পানি নামতে শুরু করলেও অবস্থার পরিবর্তন হয়নি।
তথ্য মতে, দেশের ৩১ জেলার কয়েক লাখ মানুষ এখন পানিবন্দি। দীর্ঘস্থায়ী বন্যা আর নদী ভাঙ্গনে পর্যুদস্ত মানুষ। আশ্রয়, খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট আর পানিবাহিত নানা রোগ দুর্ভোগ বাড়িয়ে তুলছে মানুষের।
এখন পর্যন্ত ১৫৪৪ টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সরকারি হিসেবে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোত ৩০ হজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু বাঁধে যারা অবস্থান করছেন, তাদের কোনো হিসাব নেই।
জানা গেছে, বাঁধে যারা আশ্রয় নিয়েছেন তারা সবচেয়ে বেশি সংকটে আছেন। আবার অনেকে পানির নীচে তলিয়ে যাওয়া বাড়ি-ঘরেই মাঁচা বানিয়ে থাকছেন।
বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে- উত্তরের লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী, রংপুর প্রভৃতি জেলা। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের হিসেবে ১৮ জেলার ৯৪ উপজেলার মানুষ।
এছাড়া জামালপুরে দফায় দফায় বন্যায় বিভিন্নস্থানে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। ফরিদপুর-চরভদ্রাসন সড়ক পুনরায় পানিতে ডুবে গেছে। ফাটল দেখা দিয়েছে সাদীপুরের বিল গজারিয়া এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধের কয়েকটি জায়গায়।
গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট ও করতোয়া নদীর প্রায় ৩০টি পয়েন্টে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙ্গন।
অন্যদিকে পদ্মার তীব্র স্রোতে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি রুটে আজো ব্যাহত হচ্ছে ফেরি চলাচল। দুই ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় হাজারের বেশি যানবাহন।
আবহাওয়া অফিস জানায়, উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল এবং দেশের অভ্যন্তরে প্রবল বৃষ্টির কারণে এই বন্যা। আসাম থেকে আসা বৃষ্টির পানির ঢল পরিস্থিতিকে আরো খারাপ করে তুলছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ১৪টি প্রধান নদ-নদীর ২২টি পয়েন্টে পানি বিপদ সীমার উপরে আছে। গঙ্গা ও পদ্মা ছাড়া সব নদীর পানিই একটু একটু করে কমছে। তবে গঙ্গা ও পদ্মা নদীর পানি আরো বাড়বে। আবার বৃষ্টি শুরু হলে অন্যান্য নদীর পানিও বাড়তে শুরু করবে। তখন আবার পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাবে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, বন্যা দুর্গত এলাকায় প্রয়োজনীয় ত্রাণ ও চিকিৎসা সামগ্রী পাঠানো হয়েছে৷ কাজ করছে মেডিকেল টিম৷ তাদের রান্না করা খাবারও দেয়া হচ্ছে৷ বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই তৎপরতা অব্যাহ থাকবে।
চিত্রদেশ //এস//