সহিংসতার শিকার নারীদের জন্য প্রতি ওয়ার্ডে অভিযোগ বক্স
স্টাফ রিপোর্টার:
নারীরা সহিংসার শিকার হলে পরিচয় গোপন রেখে যাতে অভিযোগ করতে পারে সে উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। শুক্রবার থেকে করপোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে অভিযোগ বক্স দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম।
নারীদের প্রতি সহিংসতা রোধে সচেতনতা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতি বছর ২৫ নভেম্বর ‘নারী নির্যাতন বিলোপ দিবস’ থেকে ১০ ডিসেম্বর ‘আন্তার্জাতিক মানবাধিকার দিবস’ পর্যন্ত ১৬ দিনব্যাপী এই কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে।
এর অংশ হিসেবে ‘১৬ ডেজ অব একটিভিজম – অরেঞ্জ দ্যা ওয়ার্ল্ড’ শীর্ষক এক ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেছে ডিএনসিসি। শুক্রবার রাজধানীর গুলশান ইয়ুথ ক্লাব মাঠে ডিএনসিসি মেয়রের সভাপতিত্বে দুই দিনব্যাপী ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে প্রতিটি ওয়ার্ডে নারীদের জন্য অভিযোগ বক্স স্থাপনের কথা জানান মেয়র আতিকুল। বলেন, ‘নারীদের প্রতি সহিংসতা রোধে প্রতিটি ওয়ার্ডে আজ থেকে কমপ্লেইন বক্স দিচ্ছি আমরা। মাসে একবার করে সেগুলো খোলা হবে। ওয়ার্ড কাউন্সিলর, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সেখানে উপস্থিত থাকবেন। অভিযোগকারী নারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে। এভাবে সবাইকে নিয়েই আমরা আমাদের বাসযোগ্য ঢাকা গড়ে তুলব।’
মেয়র বলেন, ‘নারী ও বিশেষ সুবিধা বঞ্চিত মানুষদের প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে এবং তাদের অধিকার নিশ্চিতে এই কর্মসূচি ১৯৯১ সাল থেকে আন্তর্জাতিকভাবে পালিত হয়ে আসছে। সেন্টার ফর ওমেন্স গ্লোবাল লিডারশিপ এই কর্মসূচির অন্যতম আয়োজক। বিশেষ সুবিধা বঞ্চিত নাগরিকদের জন্য কাজ করছে ডিএনসিসি।’
দোকানের সামনে হুইল চেয়ার ওঠানামার জন্য র্যাম্প লাগাতে হবে জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘আমাদের এলাকায় আওতাধীন সব দোকানে আগামী ছয় মাসের মধ্যে র্যাম্প লাগাতে হবে। যেন হুইলচেয়ারে করে মানুষজন দোকানে প্রবেশ করতে পারে।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী এই কর্মসূচি উদযাপিত হয়ে আসছে। নিরাপদ পরিবেশ এবং নারীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এমন সচেতনতামূলক উদ্যোগের মাধ্যমে নারীদের জন্য সুন্দর নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলা সম্ভব।’
সম্প্রতি নুসরাত হত্যা মামলার রায়ের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে এবং সহিংসতা হয়ে গেল তার ন্যায় বিচার নিশ্চিতে আমাদের শক্তিশালী আইনি কাঠামো রয়েছে। অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে পারলে শাস্তি নিশ্চিত করতে পারলে নারীর প্রতি সহিংসতা আরো কমে যাবে। এর জন্য আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। নারী এবং দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।’
অনুষ্ঠানে পুলিশের আইজি ড. জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ‘এসডিজি বা সাসটেইনেবল উন্নয়ন অর্জন করতে হলে প্রয়োজন সাসটেইনেবল পিস। সাসটেইনেবল পিস এর জন্য চাই সাসটেইনেবল সিকিউরিটি। সেই সিকিউরিটি নিশ্চিতই কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ। আর নারীদের প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আমরা আপসহীন।’
মেয়র আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সাংসদ আকবর পাঠান ফারুক, এ কে রহমত উল্লাহ, অপরাজিতা হক, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানসহ ডিএনসিসির বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, ঢাকায় নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত সিদসেল ব্লেকেন এবং সুইডেনের রাষ্ট্রদূত চারলতা স্কলাইটার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
চিত্রদেশ //এস//