প্রধান সংবাদ

শোষণ-নির্যাতন ছাড়া বিএনপি দেশকে কিছুই দেয়নি: প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার:
একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেভাবে অত্যাচার নির্যাতন চালিয়েছে তার সঙ্গে বিএনপির আমলের কোনো তফাত দেখেননি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ক্ষমতায় থাকাকালীন বিএনপি শোষণ-নির্যাতন ছাড়া দেশকে কিছুই দেয়নি।
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুব মহিলা লীগের সম্মেলনে অংশ নিয়ে এসব নকথা বলেন তিনি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির আমলের সঙ্গে একাত্তরের কোনো তফাত দেখিনি। বিএনপি ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের চরমভাবে অত্যাচার ও নির্যাতন করেছে। মেয়েদেরকেও ছাড়েনি তারা। একদিনে পুলিশ অন্যদিকে ছাত্রদলের গুণ্ডাবাহিনী আমাদের মেয়েদের ওপর নির্যাতন করেছে। কাউকে রেহাই দেওয়া হয়নি। তারা যেভাবে অত্যাচার করেছে আমরা তার কিছুই করিনি। উন্নয়নে বিশ্বাসী বলেই আমরা প্রতিশোধ নেইনি।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয় মন্তব্য করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আমরা জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করি।
বিএনপিকে ২০০৮ সালে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ের নির্বাচনের ফলাফল স্মরণ করিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাদের জিজ্ঞেস করুন, এত যে লাফালাফি, কীসের জন্য? সেই নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে বিএনপি কয়টা সিট পেয়েছিল? মাত্র ৩০টা সিট পেয়েছিল তারা। জাতীয় পার্টি পেয়েছিল ২৭টি সিট। মাত্র ৩টা সিট বেশি পাওয়ায় খালেদা জিয়া লিডার অব দ্য অপজিশন হয়েছিল।

জাতীয় পার্টি আর তিন-চারটা সিট পেলে খালেদা জিয়া বিরোধীদলীয় নেত্রী হতে পারতেন না বলেন উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এটাই হলো বাস্তবতা।
২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়ের কথা উল্লেখ করে দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ওই নির্বাচন নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারে জাতীয়-আন্তর্জাতিক কোনোভাবেই কি ওই নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে? ওঠে নাই। কেউ কোনও প্রশ্ন করে নাই। কারণ, নির্বাচনের ফলাফলটা কী ছিল? নির্বাচনের ফলাফল অনেকেই ভুলে গেছেন।
এখন নির্বাচন নিয়ে বিএনপির কথা বলা নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৬ সালে ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোট নিয়ে নির্বাচন করতে গেলো খালেদা জিয়া। তখন বাংলাদেশের মানুষ সেই ভোট মানেনি।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, স্বাধীনতার ৯ মাস পর বঙ্গবন্ধুর দেওয়া সংবিধানে নারীদের অধিকার দেওয়া হয়েছিল। চাকরির ক্ষেত্রে নারীদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা করে দিয়েছিলেন জাতির পিতা। আমি যুব মহিলা লীগ করে দিয়েছি, সঙ্গে মহিলা শ্রমিক লীগও করে দিয়েছি।
বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতা এলে নারীদের ওপরে নির্যাতন চালায় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ’৭১-এর সঙ্গে মিল রয়েছে তাদের। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নারীদের যেভাবে নির্যাতন করেছিল, সেভাবে নারী নির্যাতন করে বিএনপি। তারা নারীর অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়। আমরা মানুষের জন্য কাজ করি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর দেশের মানুষের ভাগ্যে কালো মেঘ নেমে এসেছিল।

এর আগে বেলা সোয়া ১২টার দিকে সম্মেলনস্থলে আসেন প্রধানমন্ত্রী। পর জাতীয় সঙ্গিত পরিবেশিত হয়। এরপর জাতীয় পতাকা উত্তোলন, পায়রা উড়িয়ে ও বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তারের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সম্মেলনে আরও উপস্থিত আছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. দীপু মনি, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুর সোবহান গোলাপ, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা।

চিত্রদেশ//এফটি//

Related Articles

Back to top button