অর্থ-বাণিজ্যপ্রধান সংবাদ

শিশুদের ফ্রক, নারীদের টানছে পাকিস্তানি থ্রি-পিস

স্টাফ রিপোর্টার:
মহামারি করোনার প্রকোপে গত দুই বছরের ঈদ কেটেছে নিরানন্দ। করোনার ধকল সামলে এখন অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে মানুষের জীবনযাত্রা। তাই এবার ঈদ বেশ আনন্দময় হবে এমনটাই প্রত্যাশা করছেন সবাই। আসন্ন ঈদুল ফিতর আনন্দময় করে তুলতে এরইমধ্যে নতুন পোশাক কেনাকাটা শুরু করে দিয়েছেন রাজধানীতে থাকা মানুষ। এখন ঈদ পোশাকের মধ্যে শিশুদের ফ্রক এবং নারীদের পাকিস্তানি থ্রি-পিস সবথেকে বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতা-দর্শনার্থীতে মার্কেটটি পরিপূর্ণ না থাকলেও প্রতিটি দোকানেই ক্রেতা-দর্শনার্থীদের পদচারণা রয়েছে। এদের কেউ কেউ ঘুরে ঘুরে পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্য দেখছেন, আবার কেউ কেউ পছন্দের পোশাক ও জুতা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

মার্কেটটির ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ঈদের কেনাকাটা এখনো পুরোপুরি শুরু হয়নি। ঈদকেন্দ্রিক মূল বিক্রি শুরু হবে ১৫ রোজার পর। তবে প্রতিদিনই ক্রেতারা ঈদের পোশাক কিনতে মার্কেটে ছুটে আসছেন। এখন মূলত শিশু ও নারীদের ঈদের পোশাক বেশি বিক্রি হচ্ছে।

তারা বলছেন, করোনার কারণে গত দুই বছরের ঈদ মানুষ সেইভাবে উদযাপন করতে পারেনি, অনেকটা ঘরবন্দি জীবন কেটেছে। এখন পরিস্থিতি প্রায় স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। তাই এবারের ঈদে বেশ ভালো বিক্রি হবে এমন আশায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন ব্যবসায়ীরা।

মার্কেটটিতে প্রবেশ করেই ক্রেতাদের বেশি আনাগোনা দেখা যায় টপ টেন’র স্টলে। স্টলটিতে শিশু, নারী, পুরুষদের পোশাক, জুতার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের পণ্য বিক্রি হতে দেখা যায়।

ঈদের বিক্রি পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানটির ব্র্যাঞ্চ ম্যানেজার আবু সাঈদ মোল্লা বলেন, আমরা আশা করছি এবারের ঈদে ভালো বিক্রি হবে। এ লক্ষ্যে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। এরইমধ্যে ঈদের বিক্রি শুরু হয়ে গেছে। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় এখন মার্কেটে মানুষ বেশি আসছেন। ঈদ উপলক্ষে আমরা ক্রেতাদের ৭ শতাংশ ছাড় দিচ্ছি।

তিনি বলেন, ঈদের মূল বিক্রি শুরু হবে ১৫ রোজার পর। তবে এখন যা বিক্রি হচ্ছে তাতেও আমরা খুশি। গত শুক্রবার ও শনিবার বেশ ভালো বিক্রি হয়েছে। এখন মূলত শিশু ও নারীদের পণ্য বেশি বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে শিশুদের ফ্রক এবং নারীদের থ্রি-পিস সব থেকে বেশি চলছে। এর পাশাপাশি ভারতীয় থ্রি-পিসও ভালো বিক্রি হচ্ছে।

শিশুদের কোন ধরনের ফ্রক এবং পাকিস্তানি কোন ধরনের থ্রি-পিস বেশি বিক্রি হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন যেহেতু গরম তাই সুতি ফ্রক বেশি কিনছেন ক্রেতারা। পাশাপাশি সুতি হাল্কা টি-শার্ট ভালো বিক্রি হচ্ছে। আর পাকিস্তানি লোনের পাশাপাশি গরজিয়াস থ্রি-পিসও ভালো বিক্রি হচ্ছে।

মূল গেট দিয়ে মার্কেটটির ভেতরে প্রবেশ করে একটু সামনে এগিয়েই চোখে পড়ে নবরূপা। প্রতিষ্ঠানটি শিশুদের বেশকিছু পণ্যে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে। এর পাশাপাশি নারীদের কিছু পোশাকেও ছাড় দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া রেগুলার দামে ছেলেদের পাঞ্জাবি, শিশুদের বিভিন্ন পোশাক, নারীদের থ্রি-পিস, ওয়ান পিস, শাড়ি, ব্যাগসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করছে।

ঈদের বিক্রি পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানটির বিক্রয়কর্মী শাহবুদ্দিন বলেন, ঈদের এখনো অনেক সময় বাকি আছে। তবে ঈদকেন্দ্রিক বিক্রি এরইমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। প্রতিদিন ক্রেতারা এসে ঈদের পোশাক কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এখন সব থেকে বেশি চলছে শিশুদের ফ্রক এবং মেয়েদের পাকিস্তানি থ্রি-পিস।

পাকিস্তানি থ্রি-পিস বেশি বিক্রি হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, পাকিস্তানি থ্রি-পিস বেশ আরামদায়ক। এখন নারীরা আরামদায়ক পোশাক পরতে বেশি পছন্দ করছেন। পাকিস্তানি থ্রি-পিসের পাশাপাশি ভারতীয় থ্রি-পিসও ভালো চলছে।

নারী ও শিশুদের পোশাকের স্টলে ক্রেতাদের ভালো আনাগোনা দেখা গেলেও ছেলেদের পোশাকের স্টলে ক্রেতাদের উপস্থিতি কম দেখা গেছে। এ বিষয়ে রকিস’র ম্যানেজার মো. আরমান বলেন, অনেকে আছেন আগে শিশু ও নারীদের জন্য কেনাকাটা করেন, তারপর নিজের জন্য কিনেন। এখন মূলত শিশু ও নারীদের কেনাকাটা চলছে। আর কয়েকদিন পর পুরুষদের পোশাকও বিক্রি শুরু হয়ে যাবে। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে এবারের ঈদে বেশ ভালো বিক্রি হবে। গত শুক্রবার ও শনিবার এই মার্কেটে ক্রেতাদের অনেক ভিড় ছিল।
মার্কেটটি থেকে মেয়ের জন্য পোশাক কেনা মো. আরিফুল ইসলামের একজন বলেন, আমার মেয়ের বয়স ৫ বছর। করোনার কারণে গত দুই বছরের ঈদ সেইভাবে উদযাপন করতে পারিনি। গ্রামে না গিয়ে ঢাকাতে বদ্ধ সময় কাটিয়েছি। এবারের ঈদ গ্রামের বাড়িতে গিয়ে সবাই মিলে উদযাপন করবো। ওদেরকে (স্ত্রী ও সন্তান) একটু আগেভাগেই পাঠিয়ে দেবো। এ জন্য আগে আগেই ঈদের কেনাকাটা শেষ করতে চাচ্ছি।

মার্কেটটি থেকে ঈদের কেনাকাটা করা ফারিয়া নামের আর একজন বলেন, আজ মূলত মার্কেটে ঘুরতে এসেছিলাম। পাকিস্তানি লোনের এই থ্রি-পিস (হাতে থাকে থ্রি-পিসের ব্যাগ দেখিয়ে) খুব পছন্দ হয়ে হওয়ায় কিনে নিয়ে যাচ্ছি। ৮-১০ দিন পর আবার আসবো। সে সময় ঈদের মূল কেনাকাটা করবো।

চিত্রদেশ//এফ টি//

Related Articles

Back to top button