ভ্যানে নিথর দেহের স্তূপ, ভাইরাল ভিডিওটি আশুলিয়ার
নিজস্ব প্রতিবেদক
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভ্যানে নিথর দেহের স্তূপের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ে নিহত কয়েকজন ব্যক্তির। যাদের নাম পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
তবে ভিডিওটি ভাইরাল হবার পর ঘটনাটি কোথায় ঘটেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। পরে ফ্যাক্ট চেক প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যান জানায়, ভ্যানে নিথর দেহের স্তূপের ঘটনাটি ঢাকার সাভারের আশুলিয়া থানা সংলগ্ন এলাকার। শুক্রবার (৩০ আগস্ট) রাতে প্রতিষ্ঠানটি বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ভ্যানে কয়েকটি মরদেহ স্তূপ করে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি আরেকটি মরদেহ ভ্যানে তুলে দিচ্ছে পুলিশ। পরে একটি পোস্টার দিয়ে মরদেহগুলো ঢেকে ফেলা হয়। এ সময় আরও কয়েকজন পুলিশকে আশপাশে হাঁটাহাঁটি করতেও দেখা যায়।
রিউমার স্ক্যান জানায়, নিথর দেহের স্তূপের বহুল আলোচিত ভিডিওটি আশুলিয়া থানা সংলগ্ন এলাকার ঘটনা। ৫ আগস্ট বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। এছাড়া ঘটনাস্থলের আশপাশে থাকেন এমন দুইজন দাবি করেন, ভিডিওর দেয়ালে যার পোস্টার দেখা যায় তিনি আশুলিয়ার ধামসোনা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার পদপ্রার্থী আবুল হোসেন ভূঁইয়া। জানা গেছে, দেয়ালের এই পোস্টার এখন আর নেই। ৫ অগাস্টের পরপরই সব দেয়ালে নতুন রং করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোটাপ্রথা সংস্কারের দাবিতে গত জুলাই থেকে আন্দোলন করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় গত ১৫ জুলাই রাজধানী ঢাকাসহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর দফায় দফায় হামলা চালায় ছাত্রলীগ। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমাতে গুলি চালায় পুলিশ।
পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা কর্মসূচি ঘিরে গত ৪ আগস্ট ঢাকাসহ সারাদেশে সরকার সমর্থিত নেতাকর্মী ও পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে কয়েক শতাধিক নিহতের খবর পাওয়া যায়। এ অবস্থায় গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে দেশ ত্যাগ করে ভারত চলে যান। এর পর আওয়ামী লীগ এবং দলটির বিভিন্ন সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরাও দেশত্যাগে উঠেপড়ে লাগেন।
পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নজরদারি বাড়ায়। কোনো ধরনের অপরাধী যেন দেশ থেকে পালাতে না পারে সেজন্য কঠোর হয়। এমনকি দেশের বিভিন্ন জায়গায় হত্যা, নির্যাতন, অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনায় মামলা হতে থাকে। সেসব মামলায় আওয়ামী লীগ এবং দলটির সহযোগী অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতাকর্মী, প্রশাসনসহ অনেককে আসামি করা হয়েছে। এমনকি ইতোমধ্যে কয়েকজন সাবেক মন্ত্রী-এমপি গ্রেপ্তারও হয়েছেন সেসব মামলায়।