প্রধান সংবাদ

ভোটের মাঠে সাড়ে ৭ লাখ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী

নিজস্ব প্রতিবেদক
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মাঠে আছে বিভিন্ন বাহিনীর প্রায় সাড়ে সাত লাখ সদস্য। এর মধ্যে পুলিশ, র‍্যাব, কোস্টগার্ড, আনসার ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-র সদস্যরা রয়েছেন। এছাড়া নির্বাচনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সেনাবাহিনী।

এর আগে গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ৬ লাখ ৮ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছিল।

নির্বাচন সূত্রে জানা গেছে, দ্বাদশ নির্বাচনে ১ লাখ ৮২ হাজার ৯১ জন পুলিশ ও র‌্যাব সদস্য আইনশৃংখলা রক্ষায় মোতায়েন করা হয়েছে। গত ২৯ ডিসেম্বর থেকে সারাদেশে ৪৮৭টি বেজ ক্যাম্পে ১ হাজার ১৫৫ প্লাটুন বিজিবি নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। সারাদেশে নাশকতা এড়াতে বিস্ফোরক দ্রব্যের ওপর বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত বিজিবি ডগ স্কোয়াড দেশের বিভিন্ন স্থানে কাজ করছে। একইসাথে মাঠে কাজ করছে বিজিবি’র বিশেষায়িত ফোর্স র‌্যাপিড এ্যকশন টিম (র‌্যাট)। এছাড়া বিজিবি’র কুইক রেসপন্স ফোর্সও প্রস্তুত রয়েছে, যারা বিজিবি’র অত্যাধুনিক হেলিকপ্টারের মাধ্যমে দেশের যেকোনো প্রান্তে যেকোনো অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্ষমতা রাখে।

নির্বাচনে নিরাপত্তা রক্ষায় ৫ লাখ ৫ হাজার ৭৮৮ জন সাধারণ আনসার ও ভিডিপি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তারা গত ২৯ ডিসেম্বর থেকে কাজ শুরু করেছে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত মাঠে থাকবে। এদিকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে যে কোনো দুর্ঘটনা মোকাবেলায় কেন্দ্রীয় মনিটরিং ও কো-অর্ডিনেশন সেল গঠন করেছে।

গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২ লাখ ১৫ হাজার সদস্য মোতায়েন থাকবে। সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ৪ লাখ ৭২ হাজার সদস্য মোতায়েন থাকবে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ১৫ থেকে ১৭ জনের নিরাপত্তা সদস্যের একটি দল মোতায়েন করা হবে।

এদিকে নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সিভিল প্রশাসনকে সহায়তা দেয়ার জন্য গত ৩ জানুয়ারি থেকে সেনাবাহিনী ৬২টি জেলায় নিয়োজিত হয়েছে। উপকূলীয় দুটি জেলা ভোলা ও বরগুনা সর্বমোট ১৯টি উপজেলায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। সমতলে সীমান্তবর্তী ৪৫টি উপজেলায় বিজিবি এককভাবে দায়িত্ব পালন করবে এবং সীমান্তবর্তী ৪৭টি উপজেলায় সেনাবাহিনী বিজিবির সাথে এবং উপকূলীয় ৪টি উপজেলায় কোস্ট গার্ডের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে যৌথভাবে দায়িত্ব পালন করবে। বাংলাদেশ বিমান বাহিনী হেলিকপ্টারের সহায়তায় দূর্গম পার্বত্য অঞ্চলের ভোটকেন্দ্র সমূহে প্রয়োজনীয় হেলিকপ্টার সহায়তা প্রদান করবে।

এর আগে ইসি সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ভোটের মাঠে দায়িত্ব পালন করবেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর মোট ৭ লাখ ৪৭ হাজার ৩২২ জন সদস্য। ভোটের মাঠে আনসার ৫ লাখ ১৬ হাজার, পুলিশ ও র‍্যাব ১ লাখ ৮২ হাজার ৯১ জন, কোস্টগার্ড ২ হাজার ৩৫৫ জন, বিজিবির সদস্য থাকবেন ৪৬ হাজার ৮৭৬ জন।

এদিকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আট বিভাগে ২ হাজারেরও বেশি এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত রয়েছেন। বিভিন্ন অপরাধের বিচার সম্পন্ন করতে গতকাল শুক্রবার থেকে মাঠে নেমেছেন আরো ৬৫৩ জন বিচারিক হাকিম। বিচারিক হাকিমরা ভোটের আগে-পরে পাঁচ দিন দায়িত্ব পালন করবেন। সবমিলিয়ে প্রায় ৩ হাজার জুডিসিয়াল ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।

এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে ২২ সদস্যের মনিটরিং সেল গঠন করেছে কমিশন। এই মনিটরিং সেলের নেতৃত্ব দেবেন আইডিএ প্রকল্প-২ এর প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ সায়েম। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী, মনিটরিং সেল শনিবার (৫ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে ৯ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত মোট ৭২ ঘণ্টা পরিচালনা করা হবে। দায়িত্বরত কর্মকর্তারা বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করে মাঠপর্যায়ে যথাসম্ভব যাচাই-বাছাই করা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনকে অবহিতকরণ এবং জরুরি প্রয়োজনে বিশেষ প্রতিবেদন পাঠাবেন।

//এস//

Related Articles

Back to top button