প্রধান সংবাদ

ভারতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন শুরু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ভারতে শুরু হয়েছে ১৫তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া।
সোমবার (১৮ জুলাই) দিল্লিতে নির্বাচনে দুই রাষ্ট্রপতি প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু বনাম যশবন্ত সিনহার লড়াইয়ে দেশের প্রায় ৪ হাজার ৮০০ জন সংসদ সদস্য ও বিধায়ক ভোট দেবেন।

এ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন এডিএ জোটের প্রার্থী ৬৪ বছর বয়সী সাবেক শিক্ষিকা দ্রৌপদী। আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিরোধীদলীয় প্রার্থী তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ও সাবেক মন্ত্রী যশবন্ত। তবে নির্বাচনে মুর্মু সহজ জয় পাবেন বলে মনে করছে বিজেপিসহ তাকে সমর্থন দেওয়া দলগুলো।

ভারতের পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের সদস্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোর প্রতিনিধিদের ভোটে একজন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় দেশটির পার্লামেন্ট ও রাজ্যসভায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

এ নির্বাচনে দেশটির ৪ হাজার ৮০০ এমপি ও এমএলএ নিজ নিজ পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে ভোট দেবেন। ২১ জুলাই ভোট গণনার পর ফল ঘোষণা করা হবে। ২৪ জুলাই বর্তমান প্রেসিডেন্ট রাম নাথ কোভিন্দের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরদিন ২৫ জুলাই নতুন প্রেসিডেন্ট শপথ নেবেন।

ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্সের (এনডিএ) বিজেডি, ওয়াইএসআরসিপি, বিএসপি, এআইএডিএমকে, টিডিপি, জেডি (এস), শিরোমণি আকালি দল, শিব সেনা এবং জেএমএম সমর্থন পাওয়ায় দ্রৌপদী নির্বাচনে ৬০ শতাংশেরও বেশি ভোট পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নির্বাচিত হলে তিনি হবেন ভারতের প্রথম আদিবাসী নারী যিনি দেশটির সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত হবেন। দ্রৌপদীর বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, তার ‘বিশ্বাস আছে’ তিনি (দ্রৌপদী) একজন ‘অসাধারণ প্রেসিডেন্ট’ হবেন।

তবে ভারতে প্রেসিডেন্ট পদটি অনেকটা অলঙ্কারিক। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদ হলেও দেশ পরিচালনায় প্রেসিডেন্টের তেমন কোনো ভূমিকা নেই।

দ্রৌপদী মুর্মুকে নিয়ে প্রথম গণমাধ্যমে হইচই হয়েছিল ২০১৭ সালে। সেবার গুঞ্জন রটেছিল, বিজেপি তাদের প্রেসিডেন্ট ‍প্রার্থী হিসেবে তার নাম বিবেচনা করছে। তিনি ওই সময় ঝাড়খণ্ড রাজ্যের গভর্নরের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

কিন্তু পরে ওই সময় পর্যন্ত বিহারের গভর্নর থাকা দলিত শ্রেণির প্রতিনিধি রাম নাথ কোভিন্দকে এনডিএ জোট তাদের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে। কোভিন্দ সম্মিলিত বিরোধীদলীয় প্রার্থী মীরা কুমারকে তিন লাখেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে পেছনে ফেলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন।

১৯৫৮ সালের ২০ জুন উড়িষ্যার ময়ুরভাঞ্জ জেলার বাইদাপোসি গ্রামে জন্মগ্রহণ করনে দ্রৌপদী মুর্মু। তিনি ভারতের সবথেকে প্রাচীন এবং বৃহৎ আদিবাসী গোষ্ঠী সাঁওতাল সম্প্রদায়ের মেয়ে। গত কয়েক দশক ধরে তিনি বিজেপি’র জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

উড়িষ্যার সব রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে দ্রৌপদীর মনোনয়নকে স্বাগত জানানো হয়েছে। তারা তাকে ‘মাটির মেয়ে’ বলে বর্ণনা করেছে। দ্রৌপদী বলেছেন, উড়িষ্যার সব আইনপ্রণেতার সমর্থন তাকে ‘আশাবাদী’ করে তুলেছে।

বিরোধী দল থেকে যাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে সেই যশবন্ত সিনহাও একসময় বিজেপি নেতা ছিলেন। অটল বিহারি বাজপেয়ীর আমলে তিনি বিজেপি সরকারের জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী ছিলেন। তবে তিনিই এখন বিজেপি এবং মোদির কট্টর এবং সক্রিয় সমালোচকদের একজন।

যশবন্ত অবশ্য বিরোধী দলের প্রথম পছন্দ ছিলেন না। তারা প্রথমে এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার, জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ন্যাশনাল কংগ্রেসের নেতা ফারুক আব্দুল্লাহ এবং পশ্চিমবঙ্গের সাবেক গভর্নর মহাত্মা গান্ধীর নাতি গোপালকৃষ্ণ গান্ধীকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে তারা সবাই সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন।

এ নির্বাচনে এনডিএর ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে আছেন পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান গভর্নর জগদীপ ধনখড়।

চিত্রদেশ//এফ//

Related Articles

Back to top button