চিত্রদেশ

বিগবসের জালে যেভাবে ধরা পড়লো চার বাটপার

বিনোদন ডেস্ক :
জাবেদ,তামিম,ঝিলিক ও পপি। সর্ম্পকে তারা চার বন্ধু। তাদের স্বপ্ন কোটিপতি হওয়া, সেটা যেভাবেই হোক। এই চিন্তা থেকেই তারা রাস্তা থেকে একটি মেয়েকে কিডন্যাপ করে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মেয়েটি কৌশলে পালিয়ে গিয়ে তাদের ফাঁসিয়ে দেয়। নিজেদের বাঁচাতে চার বন্ধু চলে যায় কক্সবাজার।

এর আগে থেকেই অবৈধ ইয়াবার ব্যবসার সাথেও জড়িত ছিলো তারা। খবর আসে ইয়াবার চালান ধরা পড়েছে। আতংকিত চারজন।

কক্সবাজারের রির্সোটে ঘটনাক্রমে একদিন পরিচয় হয় বিগবস ফিরোজ শাহ এর সাথে। পোশাক-আশাকে যেমন দাম্ভিকতা রয়েছে তেমনি কথাবার্তায় রয়েছে আরো তিনগুন আভজিাত্যরে ছাপ। কোটি পতি ফিরোজ শাহ। হোটেলের পাটিতে সুন্দরী সৌনিয়ার সাথে নাচতে গিয়ে আনন্দে টাকা উড়ায় লোকটি। সে রাত থেকেই এদের চারজনের নজরে পড়ে যায় ফিরোজ শাহ। পরিচিত হবার পর জানতে পারে তারা চারজন যে হোটেলে উঠেছে ঠিক পাশের হোটেলে অবস্থান করছে ফিরোজ শাহ। সুন্দরী সৌনিয়ার সাথেও তাদের পরিচয় হয়। সৌনিয়া পরিচয় দেয় বিভিন্ন হোটেলের পাটিতে নাচ করে সে। মাঝে মধ্যে কক্সবাজার আসা হয় তার। তবে ফিরোজ শাহ তার পরিচিত এটা গোপন করে সৌনিয়া।

তাদের চারজনের সাথে আলাপ পরিচয়ের সময় ফিরোজ শাহ জানায় কক্সবাজারে ভালো কোন ব্যবসার লাইন পেলে একশো কোটি টাকা ইনভেস্ট করতে চাই সে। মূলত সেটার জন্যই তার কক্সবাজারে আসা। আকাশ থেকে পড়ে ফিরোজ শাহর কথা শুনে তামিম, জাবেদ, ঝিলিক, পপি এরা চার।

রাতের বেলায় হোটেলের রুমে বসে বুদ্ধি আঁটে চারজন কিভাবে ফিরোজ শাহ কে আয়ত্বে আনা যায়। আতংকে ঘুম ধরে না চোখে তাদের। একশো কোটি টাকা ইনভেস্ট! চারটে খানি কথা! চারজন সিদ্ধান্ত নেয় কোন মতেই ফিরোজ শাহ কে হাত ছাড়া করা যাবে না। একবার বাগে নিতে পারলেই কোটিপতি হয়ে যাবে চারজন। পরের দিন থেকেই ফিরোজ শাহ’র প্রতি বাড়তি যত্ন শুরু করে দেয় চারজন।

ফিরোজ শাহ জানায় ব্যবসার নতুন কোন আইডিয়া পছন্দ করাতে পারলে তাদের হাত দিয়ে একশো কোটি টাকা ইনভেস্ট করবে সে। চারজন নতুন নতুন ব্যবসার প্রস্তাব দেয়। পছন্দ হয় না ফিরোজ শাহ’র। অবশেষে তারা ফিরোজ শাহকে প্রস্তাব দেয় সাপের বিষ আমদানি রপ্তানির ব্যবসা করবে তারা কারন সাপের বিষ অনেক মূল্যবান। ডিজিটাল যুগে সাপের বিষ দিয়ে দামী দামী ওষুধ তৈরি হয় সে ওষুধ বিভিন্ন দেশে রপ্তানী করা হয়। এ ব্যবসায় প্রোফিট বেশি।

ব্যবসার আইডিয়াটা পছন্দ হয় ফিরোজ শাহ’র। রাজি হয়ে যায় একশো কোটি টাকা দিতে। মহা খুশি চারজন। সে রাতেই চারজন হিসেবে বসে একশো কোটি টাকা কে কত টাকা ভাগ নিবে আর কি কি করবে একশো কোটি টাকা হাতে পেলে। টাকা হাতে পাবার আগেই রীতিমত কোটি হয়ে যাবার স্বপ্ন দেখে চারজন। চারজন মিলে সিদ্ধান্ত নেয় একশো কোটি টাকা পাবার পর ফিরোজ শাহ কে মেরে ফেলবে তারা!

পরের দিন ব্যবসায়িক একটা চুক্তিনামা করে ফিরোজ শাহ’র কাছে নিয়ে যায় একশো কোটি টাকা নিতে। ফিরোজ শহ জানায় যেখান থেকে সাপের বিষ কিনবে সেই ডিলারের সাথে সরাসরি সাক্ষাত করে টাকা দিতে চাই সে। মহা বিপদে পড়ে যায় এবার চারজন। অবশেষে তাদের দলের একজনকে মিথ্যে ডিলার সাজায়।

চারজনের সাথে ফিরোজ শাহ যায় ডিলারের সাথে সাক্ষাত করে টাকা বুঝিয়ে দেবের জন্য। ডিলারের মুখোমুখি যখন হয়। ফিরোজ শাহকে দেখে অবাক ডিলার! ফিরোজ শাহ’র পা জাপটে ধরে কাঁদে আর বলে আমাকে মাফ করে দিন বস। এদিকে সোনিয়াসহ আরো কয়েকজন ঘিরে ফেলে তাদের চারজনকে। ডিলারসহ তামিম, জাবেদ, ঝিলিক, পপিকে আটক করে ফিরোজশাহ ও সৌনিয়া।

অবশেষে জানা যায় ফিরোজ শহ গোয়েন্দা অফিসার। মূলত ইয়াবা পাচারকারী চক্রের সদস্য তামিম,জাবেদ,ঝিলিক,পপি ও ডিলার রুপি সেই আসামীকে গ্রেফতার করার জন্য মিথ্য গল্প সাজিয়ে কক্সবাজার অবস্থান করছিলো। কোটিপতি হবার স্বপ্ন মাটি হয়ে যায় তাদের। অন্যায় অপকর্মের জন্য অবশেষে অনুতপ্ত হয় সবাই।

চিত্রদেশ//এফটি//

Related Articles

Back to top button