অন্যান্য

বাংলাক্রাফটের বর্তমান কমিটির ভিশন ছিল নিজস্ব একটা অফিসের, সেটা বাস্তবায়ন হয়েছে: শামিম

বাংলাদেশ হস্তশিল্প প্রস্তুতকারক ও রপ্তানীকারক সমিতি-বাংলাক্রাফট। ১৯৭৯ সাথে প্রতিষ্ঠিত হয়ে দীর্ঘ চার দশক ধরে হস্তশিল্পী ও হস্তশিল্পের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে ।
বাংলাক্রাফট মূলত সারা দেশে হস্তশিল্পজাত পণ্য সরবরাহকারী, রপ্তানিকারক, উৎপাদক, ডিজাইনার ও উদ্ভাবকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি অলাভজনক বাণিজ্যিক সমিতি । সমিতিটি বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে কোম্পানি আইনের আওতায় নিবন্ধিত একটি প্রতিষ্ঠান । এছাড়া সমিতিটি ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বারস অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-এফবিসিসিআই-এর ‘এ’ শ্রেণিভুক্ত সদস্য প্রতিষ্ঠান ।

বাংলাক্রাফট প্রধানত সদস্যদের মাঝে পারস্পারিক সহযোগিতা ও সমঝোতার প্রচার-প্রসারে সহযোগিতা করে থাকে । দেশে বিদেশে হস্তশিল্পজাত পণ্য বিপণনের জন্য সদস্যকে সহায়তা করে। পণ্য উৎপাদনে ডিজাইনিং ও অন্যান্য দক্ষতার উন্নয়ন ও বিকাশের জন্য প্রশিক্ষণ সহায়তা প্রদান। সরকারী ও বেসরকারী উভয় ক্ষেত্রেই সংশি¬ষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের সাথে সম্মিলিতভাবে হস্তশিল্পের উন্নয়নে কাজ করা ও এই শিল্পের সমস্যাগুলির প্রতিনিধিত্ব করা । প্রতিষ্ঠার শুরু লগ্ন থেকেই বাংলাক্রাফট বাংলাদেশের হস্তশিল্প খাতের অন্যতম প্রধান প্রতনিধিত্বকারী ও পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভূমিকা পালন করে আসছে ।
এছাড়া বাংলাক্রাফ্ট-এর কার্যক্রমের বড় একটি অংশ জুড়ে রয়েছে এসএমই খাতের উন্নয়নে অন্যান্য অংশীদার প্রতিষ্ঠানসমূহের সাথে সম্মিলিতভাবে কাজ করা । বর্তমানে বাংলাক্রাফ্ট-এর সদস্য প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৪৫৩ ।

বাংলাদেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতির বিকাশ ও দারিদ্র বিমোচনের হাতিয়ার হিসেবে সত্তরদশক থেকে জাতীয় অর্থনীতিতে হস্তশিল্প বিশেষ অবদান রেখে আসছে ।

বর্তমানে এই শিল্পের সঙ্গে সরাসরি এককোটি কারুশিল্পী জড়িত এবং তাদের জীবিকা এই শিল্পের মাধ্যমে নির্বাহ হচ্ছে । শতভাগ দেশীয় কাঁচামাল ব্যবহার করে তৈরী সামগ্রী যেমন- পাটজাত, হোগলা, খেজুরপাতা, তালপাতা, চামড়াজাত পণ্য, কাগজ, টেরাকোটা, টালী, সূচীকর্ম, বাঁশ, বেত, পা- পোষ, কার্পেট দ্বারা উৎপাদিত পণ্য রপ্তানীর মাধ্যমে বৈদাশিক মুদ্রা অর্জন করে আসছে । এছাড়া স্থানীয় পর্যায়ে এই শিল্পের বিশাল বাজার রয়েছে ।

গত ৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ইং তারিখে নতুন পরিচালনা পর্ষদ দায়িত্ব গ্রহণের পর নিজেদের কর্মকান্ডকে গতিশীল ও জবাবদিহিতামূলক করার লক্ষ্যে ১০০ দিনের বিশেষ কর্মসূচী হাতে নিয়েছে
বাংলাদেশ হস্তশিল্প প্রস্তুতকারক ও রপ্তানীকারক সমিতি-বাংলাক্রাফট । সেই কর্মসূচীকে সামনে রেখেই পরিচালনা পর্ষদ গত ১০০ দিন অত্যন্ত সাফল্যের সাথে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

সম্প্রতি বর্তমান কমিটির বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েই ‘চিত্রদেশ’ এর সঙ্গে কথা হলো বাংলাদেশ হস্তশিল্প প্রস্তুতকারক ও রপ্তানীকারক সমিতি-বাংলাক্রাফট এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শহীদ হুসেন শামীমের ।

সাক্ষাতকার গ্রহণে- লাবণ্য হক।

-বাংলাক্রাফটের সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট শহীদ হুসেন শামীম

 

চিত্রদেশ: আপনি তো বাংলাক্রাফটের বর্তমান কমিটির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট। তো আপনাদের নতুন কমিটি কী কী এজেন্ডা নিয়ে কাজ করছে? তার বাস্তবায়ন বা কতটুকু যদি বলতেন?

শহিদ হুসেন শামিম: আমি বর্তমান কমিটির সিনিয়র ভাইস- প্রেসিডেন্ট। আমি বাংলাক্রাফটের সাথে জড়িত আছি সেই ১৯৮৮ সাল থেকে। দীর্ঘসময়। আমাদের বাংলাক্রাফটের বর্তমান কমিটির এবার ভিশন হচ্ছে, নিজেদের জায়গায় একটা অফিস (কার্যালয়) করা। এবং সেই অফিসে (কার্যালয়ে) একটা ট্রেনিং কক্ষ থাকবে। যেখানে আমরা কন্টিনিউ প্রশিক্ষণ চালিয়ে যেতে পারি। আমরা অলরেডি সেই এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছি। সেই লক্ষ্যেই রাজধানীর পান্থপথে ২৮০০ স্কয়ার ফিটের একটা কার্যালয় নিয়েছি। ওখানে আমরা শুধু ট্রেনিং ১৫০০ স্কয়ারফিটের জায়গা রেখেছি ট্রেনিংয়ের জন্য। প্রশিক্ষণ কক্ষ। সেখানে আমরা একটা ট্রেনিং ল্যাবরিটরি করবো। যেখানে সদস্যদের দক্ষতা উন্নয়নের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। কারণ জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতিমালা যখন ২০১০ সালে সরকার করল। দক্ষতা উন্নয়ন কাউন্সিল করল, তারপর দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ হয়ে গেছে। এটা করার উদ্দেশ্যই হচ্ছে, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব ছেলেমেয়েরা মাষ্টার্স ডিগ্রি নিয়ে বের হচ্ছে, তারা যথেষ্ট দক্ষ নয়। সে কাজের যোগ্যতায় দক্ষ নয়। ওই জায়গায়টায় আমরা নজর দিতে চাই। যেসব ছেলে-মেয়েরা শিক্ষিত কিন্তু তাদের দক্ষতার জায়গা কমতি রয়েছে। সেই জায়গায় আমরা (বাংলাক্রাফট) মনোযোগ দিতে চাই। স্পেশালি টাইম এফেসেন্সি, প্রোডাক্ট এফেসেন্সি বাড়ানো, কোয়ালিটি এফেসেন্সিটি বাড়ানো, প্রোডাক্টটিভি দক্ষতা বাড়ানো। কারণ মার্কেটে সে যেন রিচ করতে পারে। একই সঙ্গে ভার্চুয়াল মার্কেটে সে কীভাবে ইন করতে পারে । সেটা বুঝিয়ে দেয়া। এছাড়ারও বাংলাক্রাফট মেম্বারদেরকে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে লিংক করে দেয়া। যেমন ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্টের সাথে লিংক করা। বিডার সঙ্গে লিংক করে দেয়া। আরো অন্যান্য যেসব সেক্টরে লিংক করে দেয়া। যেন আমাদের বাংলাক্রাফটের মেম্বাররা সেসব সুবিধাগুলো পায়। শুধু তাদেরকের ট্রেনিং দেয়াই নয় তাদেরকে একটা ফলোআপে রাখাও আমাদের বর্তমান কমিটির মূল উদ্দেশ্য।

 

চিত্রদেশ//এইচ//

Related Articles

Back to top button