
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আসন পুনর্বিন্যাসকে কেন্দ্র করে উপজেলার বিভিন্ন দপ্তর, নির্বাচন কার্যালয় ও থানায় ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করেছেন বিক্ষোভকারীরা। এসময় উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তর ও থানা পুলিশের বেশ কয়েকটি গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। সব মিলিয়ে উত্তাল ভাঙ্গা।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে এসব ঘটনা ঘটে। এর আগে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলে। এসময় হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ জনতা ভাঙ্গা গোলচত্বর দখলে নেন। একপর্যায়ে জনতার ধাওয়ায় ভাঙ্গা ঈদগাহ মসজিদের ভেতরে আশ্রয় নেন পুলিশ সদস্যরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, পূর্বঘোষিত অবরোধ কর্মসূচি ঘিরে প্রশাসনের তৎপরতার মধ্যেই হঠাৎ করে সড়ক-মহাসড়কে নেমে আসেন হাজার হাজার জনতা। মাইকে ঘোষণা দিয়ে এলাকাবাসীকে রাস্তায় নেমে আসার ঘোষণা দিয়ে দুটি মহাসড়কে অন্তত ছয়টি এলাকায় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। এতে বন্ধ হয়ে যায় সব রুটের যান চলাচল। আটকে পড়ে অসংখ্য যানবাহন। একপর্যায়ে মুখোমুখি অবস্থান নিতে দেখা যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও অবরোধকারীদের।
শত শত বিক্ষুব্ধ জনতা সড়কের ওপর বিদ্যুতের খুঁটি ফেলে অবরোধ অব্যাহত রাখেন। একপর্যায়ে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। দুপুর ১টার দিকে বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে কয়েক হাজার জনতা লাঠিসোঁটা, রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগ দেন। এর কিছুক্ষণ পরই দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালান তারা। এসময় ১০-১২ জন আর্মড পুলিশের সদস্য দৌড়ে পার্শ্ববর্তী ভাঙ্গা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মসজিদে আশ্রয় নেন।
উত্তেজিত জনতার ইটপাটকেলে রক্তাক্ত অবস্থায় দৌড়াতে দেখা যায় পুলিশ সদস্যদের। পরে কিছু সময় তাদের ঘিরে রাখেন তারা। একপর্যায়ে মাদরাসা ও মসজিদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে পুলিশ সদস্যদের রক্ষা করেন।
এরপর সেখান থেকে বিক্ষুব্ধরা থানার দিকে চলে যান। থানায় থাকা গাড়ি ও থানা ভবনে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। এসময় ভেতরে আটকা পড়েন পুলিশ সদস্যরা। পরে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। আগুন দেওয়া হয় সেখানে থাকা গাড়ি ও মোটরসাইকেলে। পরে হাইওয়ে অফিস ও পৌরসভা কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয়।
এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. কামরুল হাসান মোল্যা বলেন, আমরা বিক্ষুব্ধদের শান্ত করার চেষ্টা করছি। আসন পুনর্বিন্যাসের বিষয়টি নির্বাচন কমিশনে জানানো হয়েছে। নির্বাচন কমিশন থেকে আমাদের বলা হয়েছে দ্রুত প্রতিবেদন দিতে। আমরা দ্রুত প্রতিবেদন দিলে আশা করি দু-একদিনের মধ্যে একটা সমাধান হবে।