চিত্রদেশ

পরীমনিকে ব্যবহারকারীদের মুখোশ খুলুন: ১৭ বিশিষ্টজন

বিনোদন ডেস্ক:
চিত্রনায়িকা পরীমনি ইস্যুকে কেন্দ্র করে দেশের নব্য ধনিক সমাজের চেহারা ফুটে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন ১৭ বিশিষ্ট নাগরিক। আলোচিত এই অভিনেত্রীকে ব্যবহারকারী ওই ধনিক শ্রেণির মুখোশ উন্মোচন চান তারা।

পরীমনি ও সংখ্যালঘুদের ওপর সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তারা।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের প্যাডে পাঠানো এই বিবৃতিতে রয়েছেন আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী, হাসান আজিজুল হক, সৈয়দ হাসান ইমাম, অনুপম সেন, রামেন্দু মজুমদার, সেলিনা হোসেন, আবেদ খান, ফেরদৌসী মজুমদার, সারোয়ার আলী, মফিদুল হক, মামুনুর রশীদ, আবদুস সেলিম, নাসির উদ্দিন ইউসুফ, শাহরিয়ার কবীর, মুনতাসীর মামুন, গোলাম কুদ্দুছ ও হাসান আরিফ।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘চলচ্চিত্র জগতের এক অভিনেত্রীকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের নব্য ধনিক সমাজের যে চেহারা ফুটে উঠেছে তা আমাদের গভীরভাবে চিন্তিত, উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ করেছে। নারীকে বাণিজ্য ও ভোগের পণ্য হিসেবে ব্যবহারের ধারা নানাভাবে পরিপুষ্টি পেয়ে সামাজিক অনাচারের ভোগবাদী সংস্কৃতি প্রবল করে তুলেছে। অর্থ-বিত্ত, প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতার অশুভ আঁতাতের প্রতিফল যখন ন্যক্কারজনকভাবে প্রকাশ পেতে শুরু করল, তখন নারীর ওপরই এর দায়ভার অর্পণের বিশাল আয়োজন আমরা প্রত্যক্ষ করছি। পুরুষতান্ত্রিক কূপমণ্ডূক চিন্তার এই দাপট সামগ্রিকভাবে সমাজকে এবং বিশেষভাবে নারীকে নানাভাবে নিগ্রহের শিকারে পরিণত করেছে।

‘আমরা নারীর সাংস্কৃতিক অধঃপতনের শিকার হয়ে ওঠার জন্য যারা দায়ী, যারা এর ইন্ধনদাতা তাদের মুখোশ উন্মোচনের দাবি করছি এবং এই ঘটনা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে সাংস্কৃতিক সামাজিক আন্দোলন বেগবান করার প্রয়োজনীয়তা সবার সামনে মেলে ধরছি।’

ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত অভিনেত্রী পরীমনিকে গত ৪ আগস্ট তার বনানীর বাসা থেকে আটক করে র‌্যাব। পরের দিন তার বিরুদ্ধে বনানী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা হয়।

ওই দিনই রাতেই পরীমনিকে আদালতে হাজির করলে চার দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। রিমান্ড শেষে গত মঙ্গলবার তাকে আদালতে তুললে ফের দুই দিনের রিমান্ড দেন বিচারক।

সংখ্যালঘুদের ওপর সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া কয়েকটি বিষয়ও তুলে ধরা হয় ১৭ নাগরিকের বিবৃতিতে।

এতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার মধ্য দিয়ে সামাজিক অবক্ষয়, সাম্প্রদায়িকতা এবং নারী বিদ্বেষী পুরুষতান্ত্রিকতার বিস্তার যেভাবে ফুটে উঠেছে তা আমাদের গভীরভাবে ব্যথিত ও উদ্বিগ্ন করেছে। সুনামগঞ্জের শাল্লায় গ্রামবাসীকে উত্তেজিত করে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা ও লুটতরাজের ঘটনা অতীব দুঃখজনক।

‘তার চেয়েও দুঃখবহ, এই হামলার মাধ্যমে বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক সামাজিক আবহ বিনষ্টকারী চিহ্নিত গোষ্ঠীর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিচার তো হলোই না, বরং বিনা বিচারে কারাবাসে রয়েছেন মৌলবাদী গোষ্ঠীর সমালোচনাকারী সংখ্যালঘু যুবক (ঝুমন দাস)। এরই ধারাবাহিকতায় খুলনার রূপসা উপজেলায় ন্যক্কারজনকভাবে ভাঙচুর করা হয়েছে উপাসনালয় ও প্রতিমা। নিজ ধর্মবিশ্বাসে আস্থাবান মানুষ অপরের ধর্মপালনকে সম্মান করে চলবে, এটা সবারই কাম্য। এর অন্যথা ঘটিয়ে সামাজিক অপরাধ যারা সংঘটিত করবে, তাদের কঠোর হাতে দমনের দাবি আমরা করছি।’

চিত্রদেশ//এফটি//

Related Articles

Back to top button