চিত্রদেশ

পবিত্র ঈদুল ফিতর আজ

স্টাফ রিপোর্টার:
মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর আজ শুক্রবার (১৪ মে)। খুশি, আনন্দ আর উচ্ছ্বাসের দিন। কিন্তু করোনার মহামারির কারণে গত দুই ঈদের মত নানা বিধিনিষেধ ও শঙ্কার মধ্যে ঈদ উদযাপন করবে দেশবাসী। এই ঈদেও বড় জামাত করে নামাজ পড়া যাবে না। মসজিদেই পড়তে হবে ঈদের নামাজ। করা যাবে না কোলাকুলি ও করমর্দন।

তবে এত কিছুরও মধ্যেও জীবন বহমান। আর সেই বহমান জীবনে স্রোতেই মানবজাতিকে চলতে হয়। তাইতো ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’-গানটি বেজেছে ঈদুল ফিতরের আগের রাতেও। কেউ কেউ আবার ফুটিয়েছেন আতশবাজি।

এছাড়া গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ভোগান্তি নিয়েও ঈদে আপনজনের পাশে থাকতে গ্রামে ছুটে গেছেন অনেকে। আর রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য শপিংমল, মার্কেট, ফুটপাতে গভীর রাত পর্যন্ত চলেছে কেনাকাটা। এত কিছুর মাঝেও মুসলিম বিশ্বের ন্যায় ফিলিস্তিনিদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দেশের মানুষ। কারণ ঈদের দিনেও গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলা হয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত ৮৪ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন।

এদিকে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তারা দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান।

আর জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলো ঈদ সংখ্যা ছাড়াও বিশেষ ক্রোড়পত্র বের করেছে। সরকারি ও বেসরকারি টেলিভিশনে প্রচারিত হচ্ছে বিশেষ অনুষ্ঠান।

বিত্তবানদের নিজ এলাকাবাসীর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর :

ঈদ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৩ মে) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে বিত্তবানদের নিজ এলাকাবাসীর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, করোনা মহামারির এই সংকটকালে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ কষ্টে আছে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ চরম সংকটের মধ্যে দিনাতিপাত করছে। এর মধ্যে চলে এসেছে পবিত্র ঈদুল ফিতর।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিত্তবান যারা আছেন বা যাদের সামর্থ্য আছে, তাদের প্রতি অনুরোধ- এই দুঃসময়ে আপনারা দরিদ্র প্রতিবেশী, গ্রামবাসী বা এলাকাবাসীর পাশে দাঁড়ান। তাদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনার সাহায্য হয়তো একটি পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফোটাবে। দেখবেন, তাদের হাসিমুখ আপনার হৃদয়-মনকেও পরিপূর্ণ করে তুলবে ঈদের আনন্দে। মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়ানোই সবচেয়ে বড় কর্তব্য। আমরা যেন এই কর্তব্য ভুলে না যাই।

বায়তুল মোকাররমে ঈদের প্রধান জামাত :

করোনার কারণে এবারও জাতীয় ঈদগাহ মাঠে হচ্ছে না ঈদের জামাত। তবে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অনুষ্ঠিত হবে ঈদের প্রধান জামাত।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সকাল ৭টা, ৮টা, ৯টা, ১০টা ও ১০টা ৪৫ মিনিটে বায়তুল মোকাররমে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

প্রথম জামাত হবে সকাল ৭টায়। এতে ইমাম থাকবেন বায়তুল মোকাররমের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান।

দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমাম থাকবেন বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মুহিবুল্লাহিল বাকী নদভী।

সকাল ৯টার তৃতীয় জামাতে ইমাম হবেন বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা এহসানুল হক।

চতুর্থ জামাত হবে সকাল ১০টায়। এতে ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম মাওলানা মহিউদ্দিন কাসেম।

পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত হবে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে। এতে ইমাম থাকবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুহাদ্দিস হাফেজ মাওলানা ওয়ালিয়ুর রহমান খান।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কয়েক দফা শর্ত :

করোনা সংক্রমণ রোধে ঈদের জামাতের বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় কয়েক দফা শর্ত দিয়েছে। শর্তে বলা হয়েছে- নামাজের সময় মসজিদে গালিচা বিছানো যাবে না, নামাজের আগে পুরো মসজিদ জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে, জায়নামাজ নিয়ে আসতে হবে মুসল্লিদের, সবাইকে মাস্ক পরতে হবে, মসজিদে প্রবেশের আগে সাবান দিয়ে হাত ধৌত করতে হবে, মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না, নামাজের কাতারে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

এছাড়া ঈদের জামাত শেষে কোলাকুলি এবং পরস্পর হাত মেলানো পরিহার করার জন্যও অনুরোধ করে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

 

 

চিত্রদেশ//এল//

Related Articles

Back to top button