অর্থ-বাণিজ্যপ্রধান সংবাদ

দাম বেড়েছে চাল-ডাল মুরগি ও সবজির

স্টাফ রিপোর্টার:

একদিকে মহামারি করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক, অন্যদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাড়তি দামে বড় ধরনের চাপে নিম্ন আয়ের মানুষ। এ পরিস্থিতিতে কিছুটা হলেও স্বস্তি দিচ্ছে পেঁয়াজ ও রসুনের দাম। আর করোনা ভাইরাসের কারণে কয়েক দফা উত্থান-পতন হওয়া পেঁয়াজ ও রসুন এখন তুলনামূলক কম দামেই পাওয়া যাচ্ছে। তবে দাম বেড়েছে চাল ডাল মুরগি ও সবজিসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের।

আজ (৩ জুন) রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খোঁজ-খবর নিয়ে এবং ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।

দেশে উৎপাদিত সব ধরনের চালের দাম আগের মতোই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে মোটা চালের দাম কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে। খুচরা বাজারে মিনিকেট, নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৬২ টাকায়। মোটা স্বর্ণা, পাইজাম বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। এদিকে গত সপ্তাহের তুলনায় হালিতে দুই টাকা বেড়েছে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম। খুচরায় ডিম কিনতে হচ্ছে ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা হালি, যা ছিল ৩৩ থেকে ৩৫ টাকা। কমেনি মুরগির দামও। গত সপ্তাহের মতো ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে আগের মতোই ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে।

গত এক সপ্তাহে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে দুই থেকে পাঁচ টাকা কমেছে। সায়বিনের ৮০ শতাংশই পূরণ হয় আমদানির মাধ্যমে। এ ক্ষেত্রে খোলা সয়াবিন তেল লিটারে দুই টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৮৪ থেকে ৮৬ টাকায়। আর বোতলজাত তেলের দাম লিটারে পাঁচ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১০৫ টাকায়। তবে পাম তেলের দাম আগের মতোই ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কমেছে আমদানি করা ডালের দামও। বড় দানার ডালের দাম কেজিতে পাঁচ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়, মাঝারি মানের ডাল ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। ছোট দানার দেশি ও আমদানি করা ডালের দাম আগের মতোই ১১০ টাকা থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। খোলা আটা আগের মতো ২৬ থেকে ৩০ টাকা এবং প্যাকেট ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ৩৫ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে রয়েছে খোলা ময়দার দাম। প্যাকেট ময়দা ৪০ থেকে ৪৫ টাকা প্রতি কেজি।

মিরপুর-২ নম্বর বাজারের মুদি ব্যবসায়ী শাহ আলম বলেন, আগে তো মালের অর্ডার দিয়ে ঠিকমতো পাওয়া যেত না। ত্রাণের জন্যও কেনাকাটা ছিল বেশি। ফলে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দামও বাড়তি ছিল। এখন চাহিদা ধীরে ধীরে কমে আসছে। মালের সরবরাহও বেড়েছে। সব মিলিয়ে আমদানি করা পণ্যের দাম কমছে।

চলতি সপ্তাহে কমেছে আমদানি করা পেঁয়াজ-রসুন ও আদার দাম। আমদানি করা এসব পণ্যের প্রভাব পড়েছে দেশীয় পণ্যের দামেও। দেশি পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দামও কমেছে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা করে। বাজারে এখন আমদানি করা পেঁয়াজ ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর দেশি পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমাদানি করা রসুন ৮০ থেকে ১০০ টাকায় এবং দেশি রসুন ৯০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা আদা কেজিতে ১০ টাকা কমে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হলেও দেশি আদা আগের মতোই ১০০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে বাজারে আগের মতোই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি। বাজারে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৭০-১০০ টাকা। যেখানে ঈদের পরেও বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এদিকে বাজারে প্রতি কেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে পণ্যটির দাম বেড়েছে প্রায় ১০ টাকা। আর বাজারে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। এদিকে বাজারে প্রতি কেজি বরবটিও বিক্রি হচ্ছে একই দামে। বাজারে শুধু বেগুন, গাজর, টমেটো, বরবটি নয় চিচিঙ্গার কেজি বেড়ে হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে, ঝিঙা ও পটল ৫০ থেকে ৬০, করলা ৫০ থেকে ৭০, কচুরলতি ৪০ থেকে ৬০, কচুরমুখী ৬০ থেকে ৭০, কাকরোল ৬০ থেকে ৭০, ঢেঁড়স ৩০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আলুর দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা কেজি।

মিরপুর-১১ নম্বরের বাসিন্দা শাহজামাল বলেন, কিছুদিন আগে নতুন ধান উঠেছে। এরপরও বেড়েছে চালের দাম। এর সঙ্গে ডাল, আলু, পেঁয়াজ-রসুনসহ প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে। এখন সবজির দামে তো রীতিমত আগুন লেগেছে। পরিস্থিতি এমন সবজিতে হাত দেওয়ার অবস্থা নেই। করোনার কারণে এমনিতেই কষ্টে আছি, এখন সবজির যে দাম তাতে আমাদের অবস্থান খারাপ।

চিত্রদেশ//এস//

Related Articles

Back to top button